তারিখ : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকার মেধাবী ছাত্র গোলাম রহিম বাপ্পি দাফন সম্পন্ন

ভালুকার মেধাবী ছাত্র গোলাম রহিম বাপ্পি দাফন সম্পন্ন
[ভালুকা ডট কম : ১৮ এপ্রিল]
সন্ট মার্টিন দ্বীপে সলিল সামধি হওয়া ঢাকার আহছানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ক্যাডেটের মেধাবী ছাত্র গোলাম রহিম বাপ্পি বৃহস্পতিবার রাতে ত্রিশাল উপজেলার কানিহারী গ্রামের স্বরসতীকান্দা গ্রামে সমাহিত করা হয়।

জানাযায়,গত বুধবার সকালে কোস্ট গার্ড নৌবাহিনীর একটি চৌকুস দল নিখোঁজ ৪ছাত্রে মাঝে  দুজনের লাশ উদ্ধার করার পর প্রথমে বাপ্পির লাশ অন্য এক সতীর্থর লাশ হিসাবে সনাক্ত করা হয়। পরে বিকেলের দিকে বাপ্পির লাশ সনাক্ত করার পর আত্নীয় স্বজনরা সেন্ট মার্টিনের ইউপির চেয়ারম্যানের মধ্যমে বিষয়টি অবগত হন। লাশ সনাক্ত হওয়ার পর বুধবার বিকালে বাপ্পির ছোট ভাই,মামা সহ আত্নীয় স্বজনরা লাশ আনার জন্য কক্্রবাজারের উদ্দেশে রওনা হয়। শেষ রাতে দিকে তারা কক্সবাজারে গিয়ে পৌঁছে তারা বাপ্পির লাশ সনাক্ত করে,খুব ভোরে সেখান থেকে তারা লাশ নিয়ে রওনা হয়। বৃহস্পতিবার রাত ৭টা ২০মিনিটের সময় ভালুকা ৫নং ওয়ার্ড বাপ্পি নিথর দেহ লাশবাহি এম্বোলেন্স যোগে  চিরচেনা নিজ বাস ভবনে পৌঁছে। সে বাসা থেকে গত শনিবার ১২ এপ্রিল তার বাবা শামছুদ্দিন আহাম্মের সাথে বেরিয়ে যায়।

সারাদিনই বাপ্পির বাসায় শতশত লোকজন এসে তার পরিবারকে সমবেদনা জানায় এবং খোজ খবর নেয় বাপ্পির লাশটি কখন আসবে। সন্ধ্যার পর বাপ্পির মরদেহবাহি এম্বোলেন্স যোগে তার পিতার বাস ভবনে পৌঁছানোর পরই এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা । সহস্রাধিক নারী,পুরুষ এবং শিশু লাশবাহির গাড়িটি চার দিক দিয়ে ঘিরে ফেলে। সবার চোখই ছিল আশ্রু স্বজল। তাদের প্রিয় বাপ্পিকে একবার দেখার জন্য। কিন্তু ভাগ্য এতই অপ্রসন্ন বাপ্পিকে দেখার মতো কিছুই ছিলনা। সমুদ্রের পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার  তিনদিন পর বাপ্পির লাশ উদ্ধার করা হয়। এরি মাঝে বাপ্পির নিথর দেহ ফুলে ফেপে পঁচে গলে যায় সাদা ধবধবে চাঁদের মতো মুখ ফুলে বিভৎস্য হয়ে যায়। সারাদেহ কালো মিজমিজে হয়ে যায়।

কক্সবাজার থেকে লাশটিকে একটি কালো পলিথিনে মুড়িয়ে দেয় হয়। যা দেখে দর্শার্থীরা ক্ষোভে ফেটে যায়। একজন সাবেক ক্যাডেট,কম্পিউটার ইঞ্জিয়ার দুর্ঘটনায় মর্মান্তিক ভাবে মারা যাওয়ার পর কক্্রবাজার প্রশাসন,কোস্ট গার্ড,এমনকি আহছানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লাশটিকে  সুন্দর ভাবে প্রক্রিয়া করে দেয়নি। এম্বোলেন্স থেকে কালো পলিথিন দিয়ে মোড়ানো বাপ্পির লাশটি বের  করা পর দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। তার বাবা নিজ খরচেই একটি ভাড়া করা এম্বোলেন্স দিয়ে ছেলেটির লাশ আনা ব্যবস্থা করেন।

লাশ আনা পর তাকে সৎকার করা জন্য মুসলিম রীতি অনুযায়ী গোসল ও কাফন পরানোর জন্য চেষ্টা করে তার স্বজনরা ব্যর্থ হয়েছেন।পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় পানি দিয়ে গোসল করানো পর কাফন না পারিয়েই এম্বোলেন্সে করে তার সেই বাল্য কালের স্মৃতি বিজড়িত প্রাথমিক পর্যায়ের লেখা পড়া শেষে সেই ভালুকা শাপলা বিদ্যা নিকতন মাঠে এম্বোলেন্সের ভিতরেরই রেখেই লাশ জানাজা পড়ানো হয়। ভালুকায় তার প্রথম জানাজা টি পড়ায় তার হতভাগ্য পিতা নিজেই। পর লাশ নিয়ে যাওয়া হয় ত্রিশাল উপজেলার কানিহারি ইউনিয়নের স্বরসতীকান্দা গ্রামের উদ্দেশে সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তার পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।

বাপ্পির পিতা শামছুদ্দিন আহাম্মেদ বলেন,সেন্ট মার্টি দ্বীপের সমুদ্র সৈকতের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা গুলি সরকারী ভাবে সনাক্ত করা দরকার।ওই এলাকায় সর্বসাধারণের জন্য নিষিদ্ধ অথবা সীমিত আকারে চলাফেরার অনুমতি দেয়া। যেসব হোটেলে পর্যটকরা ওঠেন, সেই সব হোটেল থেকে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য লাইফ জ্যাকেট সরবরাহ করা। সেন্ট মার্টিনে একটি আধুনিক হাসপাতাল গড়ে তোলা দরকার। যদি কোন পর্যটক কোন দুর্ঘটনায় আহত অথবা অসুস্থহন সাথে সাথে তিনি যেন পর্যপ্ত পরিমাণ চিকিৎসা সেবা পেতে পারে। আমার ছেলে ভাগ্যবান আল্লাহ তাকে পছন্দ করেছেন তাকে তার কাছে নিয়ে গেছেন ,এজন্য “আলহামদুলিল্লাহ”। আমার ছেলের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার পাশ করা পর বিদেশ গিয়ে পিএসডি করার ইচ্ছে ছিল সেই ইচ্ছে তার পুরণ হয়নি । তার দেশে দেখার এবং ভ্রমনের খুব সখ ছিল।

সোমবার ১লা বৈশাখের দিন দুপুর ২টায় ককক্সবাজারের সেন্ট মার্টিনে যান। সেন্ট মার্টিনে কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের  ৬শিক্ষার্থী সমুদ্রে গোসল করতে নামলে এ সময় সমুদ্রের পানিতে ৬জন ভেসে যায়। তার সতীর্থ মফিজুল ইসলাম ওরফে ইভান (২৩) ও সাদ্দাম হোসেন ওরফে অঙ্কুরের (২৩) লাশ পাওয়া গেলেও  ভালুকা পৌরসভার ৫নংওয়ার্ডের বাসিন্দা ক্যাডেটের মেধাবী ছাত্র গোলাম রহিম বাপ্পি সহ তার ৩সতীর্থ উদয় মাহমুদ, শাহরিয়ার কবির নোমান, সাব্বির হাসানের সন্ধান মেলেনি।

{ সংবাদ - হাজী মো: জহিরুল ইসলাম জুয়েল , ছবি -আতাউর রহমান তরফদার }



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই