তারিখ : ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

বিএনপির লং মার্চের ধমকে ভারত একদিনেই ৩৬শ কিউসেক পানি দিয়েছে-মির্জা ফখরুল

বিএনপির লং মার্চের ধমকে ভারত একদিনেই ৩৬শ কিউসেক পানি দিয়েছে-মির্জা ফখরুল
[ভালুকা ডট কম : ২৩ এপ্রিল]
বিএনপির তিস্তামুখী লং মার্চের সমাপনী জনসভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন বিএনপির লং মার্চের ধমকেই ৩৬ শত কিউসেক পানি তিস্তায় চলে এসেছে। এ জন্য ভারত সরকার কে তিনি ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন এতে আমরা সন্তুষ্ঠ নই। আমরা শুস্ক মৌসুমে তিস্তায় ১০ হাজার কিউসেক পানি চাই। এ জন্য তিনি তিস্তা সহ অভিন্ন ৫৪টি নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার অচিরেই না পেলে বিএনপির পক্ষে বৃহত্তর কর্মসুচী ঘোষনার আল্টিমেটাম  দেন।

বুধবার দুপুরে লালমনিরহাটের দোয়ানী অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের সম্মুখে আয়োজিত লংমার্চের সমাপনী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।সমাবেশে ফখরুল অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকার ভারতকে খুশি করতেই তিস্তার ন্যায্য হিস্যা চাইছে না। তারা সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থতার ধারাবাহিকতায় দেশের অধিকার আদায়েও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এ কারনে তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে শুধু লংমার্চ নয়, একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এমন গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে যারা নির্ভয়ে দেশের অধিকার আদায়ে কাজ করবে। এমন সরকারকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিতে হবে যারা কাউকে খুশি করার জন্য তিস্তা নদীর ন্যায্য হিস্যা দাবি করা থেকে বিরত থাকবে না। আর গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবিতে চলমান আন্দোলনে  ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

বড় দেশগুলো মোড়ল হয়ে ছোট দেশগুলোকে শোষণ করতে চায় অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর শোষণ থেকে মুক্তি পেতে ছোট দেশগুলোকে ঐকবদ্ধ হতে হবে। বড় দেশগুলো খামখেয়ালি সিদ্ধান্তের কারণে বিপদে পড়া থেকে রেহাই পেতে ছোট দেশগুলোকে প্রতিবাদী হতে হবে।ফখরুল আরো বলেন, আমরা কোনো দেশের বিরুদ্ধে, কোনো সরকারের বিরুদ্ধে লংমার্চ করছি না। আমরা আমাদের ন্যায্য হিস্যা আদায়ের লক্ষ্যে লংমার্চ করছি।প্রবহমান সবগুলো অভিন্ন নদী বাঁচানোর দাবি জানিয়ে ফখরুল বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী কোনো দেশ অভিন্ন নদীতে বাঁধ দিতে পারে না। কিন্তু উজানের দেশ ভারত বাংলাদেশের ওপর দিয়ে প্রবহমান অভিন্ন নদীতে বাঁধ দিয়ে আমাদের বঞ্চিত করছে। তাদের এ অন্যায় আন্তর্জাতিক ফোরামে উত্থাপন করতে হবে।

ফখরুল বলেন আওয়ামী লীগ প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করলেও এই জিয়াউর রহমানই ক্ষমতায় থাকাকালে বাংলাদেশ তিস্তার ন্যায্য হিস্যা পেতো বলে দাবি করে বলেন ভারতের আশীর্বাদপুষ্ট সরকারের আমলে বাংলাদেশ পাচ্ছে মাত্র ৩০০-৪০০ কিউসেক পানি। অথচ বন্ধুত্বের দাবি করে তারা (ভারত) বাংলাদেশকে এখন পানিতে মারতে চাইছে। তাই তিনিসর্বস্তরের জনগনকে  তিস্তার ন্যায্য হিস্যা আদায়ে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান ।

সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন শুস্ক মৌসুমে ৫ হাজার কিউসেক পানি থাকতো তিস্তায়। এখন সেই তিস্তা এখন ধুধু বালুচর। হাফিজ বলেন এই লংমার্চ ছোট পরিসরে হয়েছে। আগামী নবেম্বরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে তিস্তার ন্যায্য হিস্যার দাবিতে বড় ধরনের লংমার্চের কর্মসুচি দেয়া হবে।

বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও লালমনিরহাট জেলা শাখার সভাপতি অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে  ও নীলফামারী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সামসুজ্জামান জামানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, আবদুল্লাহ আল নোমান, কামাল ইবনে ইউসুফ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুক, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, শামসুজাজ্জামান দুদু, ড. এজেডএম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম-মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনু, আন্তর্জাতিক বিষয়ক ম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, নাজিমউদ্দিন আলম, শিক্ষা বিষয়ক ম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, ছাত্র বিষয়ক ম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক ম্পাদক অ্যাডভোকেট হারুনুর রশিদ, যুবদল সভাপতি অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ নেজামী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) চেয়ারম্যান শফিউল আলম প্রধান, জাতীয় পার্টির (একাংশ) চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন রংপুর বিভাগের আট জেলার বিএনপির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক গন, নীলফামারী জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক জহুরুল আলম, মীর সেলিম ফারুক প্রমুখ।

এর আগে, বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে লং মার্চটি তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পে পৌঁছে।মঙ্গলবার সকালে মঙ্গলবার সকালে উত্তরার আজমপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রা শুরু করে লংমার্চ। যাত্রাপথে কালিয়াকৈর, টাঙ্গাইল,সিরাজগঞ্জ কড্ডার মোড়, বগুড়া, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ এবং পলাশবাড়িতে সংক্ষিপ্ত পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা থেকে লং মার্চ বের হয়ে রাতে রংপুরে যাত্রাবিরতি শেষে বুধবার সকালে রংপুরের স্থানীয় পাবলিক লাইব্রেরি মাঠের পথসভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের পর তিস্তা অভিমুখে যাত্রা শুরু করে লংমার্চ।

সমাবেশ উপলক্ষ্যে তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় নেয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুরো এলাকা ঢাকা ছিল নিরাপত্তার চাদরে।  সমাবেশস্থলের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ, আনসার ও গোয়েন্দা সদস্যদের পাশাপাশি ছিল ভ্রাম্যমাণ আদালত। ব্যারাজ এলাকায় পুলিশ ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের টহল অব্যাহত ছিল।সমাবেশস্থল লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার সীমান্তে হওয়ায় দুই জেলার প্রশাসনই আইন শৃংখলা রক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। সমাবেশস্থলে দুইশ পুলিশ সদস্য ও অর্ধশত গোয়েন্দা সদস্য মোতায়েন করে নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলা পুলিশ।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

রাজনীতি বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই