তারিখ : ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

গাইবান্ধায় এক অন্যন্না অনুকরণীয় উদ্দ্যেগ

গাইবান্ধায় এক অন্যন্না অনুকরণীয় উদ্দ্যেগ
[ভালুকা ডট কম : ২৮ আগস্ট]
গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের হাসেমবাজার সরকারপাড়ার শিক্ষাবঞ্চিত নারীরা নিজ উদ্যোগে চালু করল বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র। প্রতিনিয়ত সেখানে বাড়ছে শিক্ষাবঞ্চিত হতদরিদ্র পরিবারের নারীদের ভিড়। ৫৪ জন নারীর গড়ে তোলা হাসেমবাজার পল্লী সমাজ সংগঠনের উদ্যোগে দুই মাসব্যাপী ওই বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্রে ৩০ জন দরিদ্র পরিবারের নারী প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষা গ্রহণ করে।

দুই কলেজ ছাত্রী স্বেচ্ছাশ্রমে বয়স্ক কর্মজীবী ওই নারীদের শিক্ষাদান করে থাকে। নিরক্ষর নারীদের এই ধরনের উদ্যোগ সত্যিকার অর্থেই আশা জাগায়। এতে আশপাশের নারীরা নিজেদের নিরক্ষরতা দূর করতে উৎসাহিত হচ্ছে। তাদের উদ্যোগ দেখে উপজেলা সরকারি কর্মকর্তারাও তাদের উৎসাহিত করছেন। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, শিক্ষা অফিসার ও নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করা হয়। এটা প্রায় একটি প্রতিষ্ঠানে রূপ পেয়েছে। এতে অন্য গরিব নারীদের ভেতর জন্ম নিচ্ছে স্বপ্ন ও আত্মবিশ্বাস।

বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্রে আসা অনেক নারীকেই বলতে শোনা যায় ৩০-৫০ বছর বয়সে পৌঁছেও আমরা বিভিন্ন কাজে টিপসই দেই! এ দুঃখ রাখি কোথায়? তাই স্কুলে এসে আজ সেই দুঃখ ঘোচাতে পেরেছি। এ রকমই বললেন বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্রে পড়তে আসা খোলাহাটির গৃহবধূ জহুরা বেগম (৫০)। একই ধরনের কথা হামিদা বেগম (৫৫) ও সাজেদা বানরু (৫২) কণ্ঠেও। ওই সংগঠনের অন্যতম সদস্য মর্জিনা  বেগম জানালেন, ১৯৯৮ সালে গড়ে তোলা তাদের এ সংগঠনটি সমাজের অসংখ্য বাল্য বিবাহ, বহু বিবাহ, নারী নির্যাতন রোধ করেছে। এতে প্রাথমিকভাবে তাদের বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। কিন্তু সামাজিকভাবে তাদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ায় বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়িত করতে এখন তারা সহযোগিতা পাচ্ছেন। এছাড়া ২০১১ সালে নিজেরা সেলাই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছে। প্রথম দিকে শুধু অক্ষরজ্ঞান দেওয়ার উদ্দেশ্যে এটি শুরু হলেও সদস্যরা অচিরেই বুঝতে পারে যে, তাদের অর্থনৈতিকভাবেও স্বাবলম্বী হতে হবে। এরই অংশ হিসেবে সেলাই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। একেক ব্যাচের ২০-২৫ জন এই সেলাই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে সফলতা অর্জন করতে সমর্থ হয়।

 রকমই একজন খোরশেদা খানুম জানালেন, এখন আমি সংসারে অর্থনৈতিক অবদান রাখতে পারি। ফলে আমার কর্তৃত্বও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখন আমিও সিদ্ধান্ত নিতে পারি।’ প্রথমে বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্রের সহযোগিতায় তাদের প্রশিক্ষণ শেষে সেলাই মেশিন দেওয়া হয়। পরে আস্তে আস্তে সেই মেশিনের ঋণ শোধ করে দিতে হয়। যদিও অর্থনৈতিক প্রতিকূলতার জন্য সবাইকে সেলাই মেশিন কিনে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অন্য কোনো সংগঠন তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে এলে উপকার হবে বলে মন্তব্য করেন বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্রের কজন সদস্য। শত প্রতিকূলতা থাকা সত্ত্বেও তারা অনেক সামাজিক কর্মকার্তা ও অংশগ্রহণ করছে। সামাজিকভাবে এলাকার প্রায় ৩০টি নলকূপের গোড়া পাকাকরণের কাজও নিজেরাই করেছে। এছাড়া একে অপরের সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নেন সংগঠনের মাধ্যমে। সামাজিকভাবে তারা অনেক পারিবারিক সমস্যা মীমাংসা করে ফেলে। অক্ষরজ্ঞান শেখার জন্য বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র গঠন করা হলেও এখন তা একটা সামাজিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। কারণ তারা মনে করে শিক্ষার সঙ্গে অর্থনীতি, সামাজিক সমস্যার সমাধান নিজেরা করতে না পারলে এর কি অবদান থাকল। তাই নিজেদের সিদ্ধান্তে দুই মাসেই তারা নিরক্ষরমুক্ত হতে চায়।  নিঃসন্দেহে এটা একটা অনুকরণীয় উদ্যোগ।




সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অন্যান্য বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই