তারিখ : ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

গাজীপুরের কালিয়াকৈরের ভাউমান টালাবহ মডেল হাই স্কুল মাঠে পানি

বাঁশের সাঁকো দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পারাপার
গাজীপুরের কালিয়াকৈরের ভাউমান টালাবহ মডেল হাই স্কুল মাঠে পানি
[ভালুকা ডট কম : ২২ সেপ্টেম্বর]
বিদ্যালয়ের মাঠসহ চারদিকেই পানি। কোন দিক দিয়েই স্কুলে যাতায়াত করা যায় না। তাইতো স্কুলের মাঠের মাঝখান দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বাঁশের সাঁকো। ঝুঁকিপূর্ন ওই সাঁকো দিয়েই যাতায়াত করতে হয় গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ভাউমান টালাবহ মডেল হাই স্কুলের শিক্ষার্থীদের।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারেজ আলী জানান, বিদ্যালয় ভবনটির নীচতলা ফাঁক রেখে দ্বিতীয় তলা থেকে শিক্ষার্থীদের ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু স্কুলের মাঠ উচু না কারায় প্রতি বছরই বর্ষার সময় শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এতে লেখাপাড়াও ব্যাহত হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জসিম উদ্দিন জানান, গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ভাউমান টালাবহ মডেল হাই স্কুলটি ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। সেখানে উপজেলার ভাউমান টালাবহ, কাঁঠালতলী, বারবাড়িয়া, কোমারজানি, চাঁনপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকার শিক্ষার্থীরা সেখানে লেখাপড়া করে। বিদ্যালয়টি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) সহযোগীতায় ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। ভাউমান টালাবহ গ্রামে হওয়ায় ওই গ্রামের নামেই নাম করন করা হয় স্কুলটির। পরে ২০০৬ সালে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে স্কুলের ৩ তলা ভবন নির্মাণ হয়। বর্ষার সময় পানি উঠার কারনে ভবনের নিচ তলা ফাঁকা রয়েছে। ২০০৩ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা হলেও ২০০৬ সাল থেকে এর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম দিকে ষষ্ঠ, সপ্তম এবং অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত হলেও ২০০৮ সালে স্কুলটি দশম শ্রেনী পর্যন্ত ও এমপিও ভুক্ত হয়েছে। শুরুর দিকে অল্পকিছু শিক্ষার্থী নিয়ে স্কুলটি চলতে থাকে। বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৮১ জন। তবে স্কুলটিতে শিক্ষক সংখ্যা কম, বর্তমানে শ্রেনী কক্ষ ও আসবাবপত্র সংকট থাকলেও লেখাপড়ার কোনো ঘাটতি নেই। উপজেলার প্রথম সারীর স্কুলগুলোর মধ্যে এই স্কুলটিও রয়েছে। গত ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ সালের এসএসসি ফলাফল ভাল হওয়ায় উপজেলার ৩টি সেরা স্কুলকে সেকেন্ডারী এডুকেশন কোয়ালিটি এন্ড এক্সেসস ইন হ্যান্ডসম্যান প্রজেক্ট  কর্তৃক পুরস্কার দিয়েছে। এদের মধ্যে ভাউমান টালাবহ মডেল হাই স্কুলটিই প্রথম হওয়ায় ১ লাখ টাকা উদ্দীপনা পুরস্কার দেয়।

বিদ্যালয়টিতে লেখাপড়া ভালো হওয়ায় শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে তবে প্রতিবছর এই সময়ে বিদ্যালয়ের মাঠে জমে থাকে কোমড় পর্যন্ত পানি। মাঠে পানি জমে থাকায় বেশকিছু দিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকে। পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসী সম্মিলিতভাবে বিদ্যালয়ের মাঠে প্রায় ২০০ ফিট লম্বা একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করে। এর জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। ওই সাঁকো দিয়ে যাতায়াতের সময় মাঝে মধ্যে শিক্ষার্থীরা পানিতে পড়ে ও তাদের বই-খাতা, স্কুল ড্রেস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে তাদের লেখা-পড়াও ব্যাহত হচ্ছে।

ভাওমান টালাবহ গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠে পানি জমে থাকায় শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাই মাঠটি উঁচু করতে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈর উপজেলার বোর্ডঘর বাস ষ্টেশন থেকে ৩ কিলোমিটার দক্ষিণে  ভাউমান টালাবহ বাজার। ওই বাজারের কাছের ট্রেন লাইনের পাশেই ওই বিদ্যালয়ের অবস্থান। রেল লাইনেও কোন গেইট ব্যারিয়ার না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই পরাপার হয় তারা। বড় আকারে তিন তলা একটি ভবনে চলে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। কিন্তু মাঠে জমে আছে পানি। দুপুরের টিফিনের সময় শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের দশ শ্রেনীর ছাত্রী আফসানা আক্তার জানায়, মাঝে মধ্যেই ওই সাঁকো পার হতে গিয়ে বই পানিতে পরে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।

একই ক্লাসের ছাত্রী স্বর্ণা আক্তার জানায়, তাদের বিদ্যালয়টি অনেক সুন্দর। কিন্তু মাঠের পানির জন্য খুবই খারাপ অবস্থায় রয়েছে। বিদ্যালয়ের মাঠটি উঁচু করা হলে দুর্ভোগও কমবে এবং মাঠে খেলাধূলা করা যাবে। মাঠে পানি জমে থাকার কারনে স্কুলে এসে খেলাধুলা করতে পারি না।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারেজ আলী জানান, স্কুলের চারপাশে পানির কারণে বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। চারদিকে পানি উঠার কারণে শিক্ষার্থীদের সাথে আমাদেরও দুর্ভোগ পেহাতে হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, বিষয়টি মৌখিকভাবে আলোচনা হলেও লিখিত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে স্কুলের পাশে রেলক্রসিংয়ে গেইট ব্যারীয়ারের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট অনেক আগে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু তারা এখনো পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করেননি।

এ ব্যাপারে কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাবিবুর রহমান জানান, ভাউমান টালাবহ মডেল হাই স্কুল মাঠটি প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাটি ভরা করো হয়েিেছল। আবারো মাঠে পানি আটকে যাওয়ার বিষয়টি আমাকে কেউ অবগত করেনি। গত কয়েকদিনের অতি বর্ষনের ফলে হয়তো মাঠে পানি জমে থাকতে পারে। তবে যদি মাঠে পানি জমে থাকে তাহলে পুনরায় মাঠে বালি অথবা মটি ফেলে মাঠটি উঁচু করে শিক্ষার্থীদের খেলাধূলার উপযোগী করে তোলা হবে।  



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই