তারিখ : ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

এটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়!খোলা আকাশের নিচে চলে পাঠদান

এটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়!খোলা আকাশের নিচে চলে পাঠদান
[ভালুকা ডট কম : ১৮ ফেব্রুয়ারী]
‘মেঘলা আকাশ ওদের ভয়, সূর্য্য রশ্মি আতঙ্ক’ তবু ওরা শিখতে চায়-পড়তে চায়। দুর্গম প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই কোমলমতি শিশুদের পাঠশালা বৃষ্টিতে বন্ধ, রোদে ছুটি। এটি একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়! ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের কান্দুলিয়া গ্রামে অবস্থিত। ধরে রেখেছে ৫বছর যাবত শতভাগ পাসের সাফল্য, ট্যালেন্টপুলসহ প্রতিবছর পাচ্ছে বৃত্তি। চলছে সাড়ে ৩শ ছাত্র-ছাত্রীর খোলা আকাশের নিচে পাঠদান।

উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ ১৯৯৫সনে নূতন ভবনটি নির্মাণের পর থেকে ছাদ ছুঁষে পানি পড়ে। মাত্র ৫বছরেই ভবনটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে প্রধান শিক্ষকের দেয়া অভিযোগ আমলে নেননি প্রকৌশল অধিদপ্তর। ১৭/০২/১০ইং তারিখে উপজেলা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা, ১৯/০৫/২০১০ইং তারিখ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত পত্রে বিদ্যালয়ের ভবনটি অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও ক্লাসে পাঠদান নিরাপদ নয় উল্লেখ করে পত্র দেন। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ ও শিক্ষা বিভাগের তদন্ত শেষে উশিআ/ গৌরী/ ২০১৩-২১০ নং স্মারকমূলে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ বিধায় কোন অবস্থাতেই ক্লাস না করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।

বিদ্যালয়টির শিশু শ্রেণিতে ৪২জন, ১ম শ্রেণিতে ৫২জন, ২য় শ্রেণিতে ৬০জন, ৩য় শ্রেণিতে ৫৬জন, ৪র্থ শ্রেণিতে ৫৮জন ও ৫ম শ্রেণিতে ৪১জন ছাত্র-ছাত্রী অধ্যয়ন করছে। এডিপি’র অধ্যয়নে ২কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন থাকলেও ১ম ও ২য় শিফটের ২টি ক্লাস চলছে খোলা আকাশের নিচে। ২০১০ইং সনে ৩৮জন, ২০১১সনে ২৬জন, ২০১২সনে ২৪জন, ২০১৩সনে ৩৯জন, ২০১৪সনে ৩৪জন সমাপনি পরীক্ষা অংশ নিয়ে শতভাগ পাসের গৌরব অর্জন করে। প্রতিবছরই ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিসহ রয়েছে সাধারণ বৃত্তি ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তি। তবে ওরা ক্লাস করে নীল আকাশের নিচে!

‘স্যার, আপনি কি নূতন ভবন দিবেন’ ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী পুষ্প আক্তারের এমন প্রশ্নে অবাক হন এ প্রতিনিধিও। প্রতিবছর পরিদর্শন করেন জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দেন। তবু হয় না নূতন ভবন। ৫ম শ্রেণির জাকিয়া সুলতানা, জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, আকাশ মেঘলা না বৃষ্টি হলে বন্ধ হয়ে যায় পাঠদান। সূর্য্যরে তাপের কারণে ক্লাস করা যায় না। তাই বৃষ্টিকে ভয় পাই আর রোদে আতঙ্ক বাড়ে। রয়েছে শিক্ষক সংকট। মাত্র একজর প্রধান শিক্ষক আর একজন সহকারি শিক্ষক দিয়ে চলছে পাঠদান।

প্রধান শিক্ষক মোঃ আজাদ মোস্তফা জানান, পত্র দিতে দিতে আমি এখন ক্লান্ত। অভিভাবকদের অর্থায়নে নেয়া হয়েছে প্যারা শিক্ষক মোঃ মিজানুর রহমানকে। প্রধান শিক্ষকের ২পুত্রও স্বেচ্ছায় পাঠদান কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন। অভিভাবক মোঃ ওয়াহেদ আলী জানান, আমরা সন্তানদের নিয়ে ভয়ে থাকি কখন ক্লাস বন্ধ হয়ে যায়। শিশুরা চিৎকার করলে দৌড়ে যাই, পরিত্যক্ত ভবনের নিচে এই বুঝি দূর্ঘটনার শিকার হলো আমার ছেলে। পরিত্যক্ত ভবনটি পিলার ভেঙ্গে গেছে, দেয়ালে ফাটল, ভিম ধসে পড়েছে, ছাদও ভেঙ্গে পড়ছে। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ বাবুল আহাম্মেদ, নূতন ভবন নির্মাণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার দাবি জানান। বিদ্যালয়টির বেহাল অবস্থা স্বীকার করে উপজেলা শিক্ষা বিভাগ জানান, আমরাও বারবার পত্র দিয়েছি।#




সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই