তারিখ : ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

শ্রীপুরের ধামলই উচ্চ বিদ্যালয় পাসের হার শতভাগ

শ্রীপুরের ধামলই উচ্চ বিদ্যালয় পাসের হার শতভাগ
[ভালুকা ডট কম : ২৯ জুন]
সামান্য বৃষ্টিতে কোনো রাস্তা দিয়েই পায়ে কাদা না মেখে হাঁটা যায়না। বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। মাটির দেয়ালের শ্রেণী কক্ষ। জায়গার অভাবে গাদাগাদি করে শ্রেণীকক্ষে বসতে হয়। স্যানিটেশন ব্যবস্থাও ভাল নয়।এরকম প্রতিকুল পরিবেশে গড়ে উঠা গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার অজপাড়াগাঁ ধামলই উচ্চ বিদ্যালয় এবার শতভাগ সফলতার স্বাক্ষর রেখেছে। কাওরাইদ ইউনিয়নের এ বিদ্যালয় থেকে ৪৩ পরীক্ষার্থীর সকলেই উত্তীর্ণ হয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে একজন গোল্ডেন জিপিএ প্লাস এবং একজন এ প্লাস পেয়েছে। উত্তীর্ণদের মধ্যে ২৪ জনই মেয়ে শিক্ষার্থী।

বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আব্দুল বাতেন পালোয়ান বলেন, ১৯৮৬ সনে বিদ্যালয়টি যাত্রা শুরু করে। ফলাফলের দিক থেকে বরাবরই ভাল। তবে এসএসসিতে শতভাগ পাসের ঘটনা এবারই প্রথম। এর জন্য অবশ্য আমাদের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য দুটোই ছিল। ৯ জন শিক্ষক আন্তরিকভাবেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান করেন। গুণগত মানের দিক থেকেও শিক্ষকেরা যে ভাল এর প্রমাণ তারাই রেখেছেন। বিনা বেতনে কোচিং করিয়েছেন। গ্রামের স্কুল, আলোচনায় আসার জন্য শতভাগ পাসের কোনো বিকল্প নেই। এ ভাবনাটা শিক্ষক, অভিভাবক, জনপ্রতিনিধি এবং পরিচালনা পরিষদ সকলের মনেই ছিল। সরকারী ও স্কুল তহবিল থেকে শিক্ষকেরা যা প্রাপ্য কেবল তা-ই শিক্ষকদের দেওয়া হয়েছে। কোচিং ফি বাবদ আলাদা করে কোনো পারিশ্রমিক শিক্ষকদের দেওয়া সম্ভব হয়নি।

কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও ধামলই গ্রামের বাসিন্দা আলম খান বলেন, এলাকার উন্নয়ন, বিদ্যালয়ের উন্নয়ন এবং ছেলে মেয়েদের উন্নয়নের কথা মনে রেখেই আমরা পরিশ্রম করেছি। তবে শিক্ষকদের পরিশ্রমের কোনো তুলনা হয় না। পরিচালনা পরিষদ, জনপ্রতিনিধি, অভিভাবক এবং শিক্ষকমন্ডলী সমন্বিত ইচ্ছে করলেই একটি বিদ্যালয় শতভাগ পাসের গৌরব অর্জন করতে পারে। এবারের অর্জনে আমরা এলাকার সবাই মিলে উল্লাস করেছি।


তিনি বলেন, ধামলই গ্রামের কাদামাটির পথ পেরিয়ে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়। প্রচন্ড গরমে শ্রেণীকক্ষে বসে পাঠ গ্রহণ করাও কষ্টসাধ্য হয়ে উঠে। শিক্ষার্থীদের ব্যবহার উপযোগী একটি শৌচাগারের ব্যবস্থাও আমরা করে দিতে পারিনি। এসব কিছুর ভেতর দিয়েই তারা তাদের মেধার স্বাক্ষর রেখেছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদ আলম বলেন, বিজ্ঞান বিভাগে ৫ জন মেয়ে, ১১ জন ছেলে এবং মানবিক বিভাগে ১৯ জন মেয়ে ও ৮ জন ছেলে রয়েছে। শতভাগ পাসের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো প্রভাব ফেলেছে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন উপস্থিতি নিশ্চিত করা, দিনের পড়া দিনে আদায় করা, বাড়িতে গিয়ে পড়াশুনার খোঁজ খবর নেওয়া।

তিনি জানান, এবার জেএসসিতেও শতভাগ ফলাফলের গৌরব অর্জন করেছে বিদ্যালয়টি। ৯ জন শিক্ষক এবং দু’জন কর্মচারীসহ মোট ১১ জন জনবল নিয়ে বিদ্যালয়টি পরিচালিত হচ্ছে।

অভিভাবক সাইফুল ইসলাম ও নজরুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ে নিয়মিত মা সমাবেশের মাধ্যমে শির্ক্ষীদের মা’দেরকে যত্নবান হওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়। নৈতিক শিক্ষা ও বাড়িতে পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার ক্ষেত্রে মায়েদের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।

জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী শাহীন আলম ও নাদিরা বেগম জানায়, সময়ের পড়া সময়ে শেষ করা এবং স্কুলের স্যারদের পরামর্শ অনুযায়ী পড়াশোনা চালিয়ে গেলেই জিপিএ-৫ পাওয়া সম্ভব।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আতিকুর রহমান জানান, বিদ্যালয়ের নিয়মিত রিপোর্ট খুব ভাল ছিল। বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকলেই বেশ দায়িত্বশীল।



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই