তারিখ : ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী নিশ্চিতে পরিকল্পিত পদক্ষেপ প্রয়োজন

তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী নিশ্চিতে পরিকল্পিত পদক্ষেপ প্রয়োজন
[ভালুকা ডট কম : ০৪ জুলাই]
‘একটি ছবি হাজার শব্দের চেয়েও শক্তিশালী এটি একটি প্রমাণিত সত্য। বিশেষ করে, তামাকের মত বহুমাত্রিক ক্ষতিকর নেশাজাত দ্রব্যের ব্যবহার সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে বিড়ি-সিগারেট, জর্দা, গুলসহ সবরকম তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদান জরুরি’। কোম্পানিগুলো কুটকৌশলে তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদান হতে বিরত থাকতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সর্তকবানী প্রদান নিশ্চিতে সরকারকে পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।    

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট উদ্যোগে ফ্রান্সভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠন দি ইউনিয়ন এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তারা উপরোক্ত অভিমত ব্যক্ত করেন। ‘তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর বিধান বাস্তবায়নে নাগরিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় আলোচনা করেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও প্রবীণ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই-মাহবুব, বিশিষ্ট পরিবেশবিদ ও পরিবেশ বাচাঁও আন্দোলন (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, অপরাজয় বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক ওয়াহিদা বানু, দ্যা ইউনিয়ন-এর কারিগরি পরামর্শক এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম প্রমুখ। ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী মুক্তির সভাপতিত্বে সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এর মূখপত্র সমস্বর এর নির্বাহী সম্পাদক আমিনুল ইসলাম সুজন। মতবিনিময় সভা সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর সহ-প্রকল্প কর্মকর্তা শারমিন আক্তার রিনি।

অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই-মাহবুব বলেন, ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্ট্রোকসহ নানাবিধ প্রাণঘাতী অসংক্রামক রোগ সৃষ্টি করে ধূমপান ও তামাক। এ নেশার মাধ্যমে যারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়, তাদের চিকিৎসার জন্য ব্যক্তিপর্যায়ে ও রাষ্ট্রের ব্যাপক অর্থ ব্যয় করতে হয়। তাই তামাকের ব্যবহার কমাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। আর তামাকের ব্যবহার কমাতে বিড়ি-সিগারেটসহ সবরকম তামাকের মোড়কে ছবিসহ সতর্কবাণী সবচেয়ে কার্যকর। তবে মনে রাখতে হবে, তামাক কোম্পানিগুলো নানাভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করে থাকে। তামাক কোম্পানির অপচেষ্টা প্রতিহত করতে বেসরকারি সংস্থাগুলো, বিশেষত বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এর সামাজিক আন্দোলনকে জোরালো করতে হবে।

আবু নাসের খান বলেন, তামাক বহুমাত্রিক ক্ষতির কারণ। শুধু জনস্বাস্থ্য নয়, পরিবেশ, অর্থনীতির জন্যও হুমকি তামাকের উৎপাদন ও ব্যবহার। উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সেবন সব পর্যায়েই মারাত্মকভাবে ক্ষতি করে তামাক। তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ করতে কৃষকদের খাদ্যশস্য উৎপাদনে কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদান এবং তাদের উৎপাদিত ফসলের বাজার ও বিপণন ব্যবস্থার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। তবেই আমরা কার্যকরভাবে তামাক চাষ কমিয়ে আনতে সক্ষম হব।

ওয়াহিদা বানু বলেন, ধূমপানের মাধ্যম শিশুকিশোররা নেশার পথে পা বাড়ায় তাই শিশুকিশোররা যেন ধূমপান শুরু করতে না পারে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এক্ষেত্রে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। আইনে ১৮ বছরের শিশুদের কাছে বিড়ি-সিগারেট বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের মাধ্যমে এ নেশাজাত সামগ্রী বিক্রয়ও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অপরাজেয় বাংলাদেশ পথশিশুদের উন্নয়নে কাজ করে। বর্তমানে প্রতিবছর আমরা আড়াই লক্ষ শিশুকে শিক্ষাসহ বিভিন্নক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান করি। এসব শিশুরা সব নেশা থেকেই দূরে আছে।  

এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, ধূর্ত তামাক কোম্পানিগুলোর কারণে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধন বিলম্বিত হয়েছে, বিধিমালা পাস করতেও দু’বছর সময় লেগেছে। ছবিসহ সতর্কবাণী প্রদানকে বিলম্বিত করতেও তামাক কোম্পানিগুলো নানারকম অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তাই মৃত্যুর ফেরিওয়ালাদের রুখতে সমাজের সবার সক্রিয় সহযোগিতা দরকার।

গাউস পিয়ারী মুক্তি বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিধিমালায় ছবিসহ সতর্কবাণী প্রদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, আগামী বছর মার্চ মাসের মধ্যে বাংলাদেশের সব তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে ছবি আসবে।

প্রবন্ধে আমিনুল ইসলাম সুজন বলেন, আন্তর্জাতিক তামাক নিয়ন্ত্রণ চুক্তি ফেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) চুক্তি ও স্বাক্ষর এবং বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকলেও ছবিসহ সতর্কবাণী প্রদানের ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। এ পর্যন্ত পৃথিবীর ৭০টি দেশে ছবিসহ সতর্কবাণী প্রদান করা হয়েছে। তবে আরও অনেক দেশ ছবিসহ সতর্কবাণীর দিকে ঝুঁকছে। ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদান করায় থাইল্যান্ড, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়াসহ উন্নত দেশগুলোতে তামাকের ব্যবহার কমছে।

সভায় জাতীয় যক্ষা নিরোধ সমিতি (নাটাব) এর কর্মসূচি ব্যবস্থাপক এ কে এম খলিল উলাহ, টোব্যাকো কন্ট্রোল রিসার্চ সেল (টিসিআরসি) এর সদস্য সচিব ও ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক মো. বজলুর রহমান, এএকলাব এর কর্মসূচি ব্যবস্থাপক এম মাকসুদউলাহ, অরুণোদয়ের তরূণ দল এর সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাবু, ভয়েস অব বাংলাদেশ এর প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. সাইফুল ইসলাম, পিপলস্ মুভমেন্ট ফর এনভায়রনমেন্ট এর সভাপতি আল মাসুদসহ তামাক বিরোধী বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

জীবন যাত্রা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই