তারিখ : ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

সুরঞ্জিতের এপিএসের গাড়িচালক বাড়িতে,জানে না পুলিশ-র‌্যাব

সুরঞ্জিতের এপিএসের গাড়িচালক বাড়িতে,জানে না পুলিশ-র‌্যাব
[ভালুকা ডট কম : ০১ আগস্ট]
সাবেক রেলপথমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সহকারী একান্ত সচিব ফারুকের বস্তাভর্তি অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় আলোচিত গাড়িচালক আলী আযম এখন নিজ বাড়ি চাঁদপুরে রয়েছেন।

আযমকে ‘গুম’ করা হয়েছে এ গুজবে পুলিশ-র‌্যাব সদস্যরা একযোগে তন্ন তন্ন করে খুঁজছিলেন সম্ভাব্য স্থান। পুলিশ বলেছিল, তাকে গ্রেফতার করা হলেই ঘটনা জানা যেত। কিন্তু সবরকম আশঙ্কাকে মিথ্যা করে দিয়ে আযম নিজ বাড়িতেই আছেন এখন। অথচ সে কোথায় তা পুলিশ-র‌্যাব জানে না!

জানতে চাইলে চাঁদপুর জেলার পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এছাড়া ঘটনার সময় আমি বাংলাদেশে নয়Ñ ইতালিতে ছিলাম। আমি তো আপনার কাছ থেকে জানলাম, এখন সেই গাড়িচালকের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। লোক পাঠাচ্ছি।’

চাঁদপুরের একটি সূত্র জানিয়েছে, ৭০ লাখ টাকা বা অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনা কিংবা পরে ‘নিখোঁজ’ থাকা সম্পর্কে খোলাসা করে কিছুই বলতে রাজি নন আযম খান। আযমকে নিয়ে নানা রহস্য চাঁদপুরে তার গ্রামের বাড়ির প্রতিবেশীদেরও। এ ঘটনায় মতলব দক্ষিণ থানার পুলিশের আচরণে নানারকম সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। থানা পুলিশ জানিয়েছেÑ এ ধরনের কোনো খবর তাদের জানা নেই।

আযম মতলবের দক্ষিণ উপজেলার উপাদি ইউনিয়নের উত্তর নওগাঁও নিজের বাড়িতে অবস্থান করলেও এমন তথ্য পুলিশ-র‌্যাবের কাছে নেই।গতকাল শুক্রবার ১২টায় মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কবির হোসেন জানান, একজন সাব ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে সাদা পোশাকে একদল পুলিশ যাচ্ছে উপাদি ইউনিয়নের উত্তর নওগাঁও গ্রামে।

২০১২ সালের ৯ এপ্রিল গভীর রাতে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সাবেক রেলপথমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এপিএস ফারুক বস্তাভর্তি টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় তার গাড়িচালক আযম খান গাড়িটি পিলখানায় বিজিবির সদর দফতরে ঢুকিয়ে দেন। পরে তৎকালীন বিজিবি সদস্যরা গাড়িসহ তাদের আটক করেন। এতে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনার ঝড় বয়ে যায়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ঘটনায় খুবই ক্ষুব্ধ হন। কয়েকবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন সুরঞ্জিত এবং নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য যুক্তি দেখিয়ে বক্তব্য রাখেন। কিন্তু কোনোভাবেই আর রেলপথমন্ত্রীর চেয়ার ধরে রাখতে পারেননি তিনি।এরপর একই মাসের ১৬ এপ্রিল রেলমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান সুরঞ্জিত। পরে তাকে দুই বছর দফতরবিহীন মন্ত্রী হিসেবেই থাকতে হয়। তবে এ আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনার জের ধরে রেলের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা ও কমান্ড্যান্ট এনামুল হককে বরখাস্ত করা হয়।

বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে, সে সময় থেকে দীর্ঘ দুই বছর নিখোঁজ থাকেন মন্ত্রীর এপিএসের গাড়িচালক আযম। এ নিয়ে রহস্য দানা বাঁধতে থাকে। তার সন্ধানে খোঁজ চলেছে সারা দেশে, সীমান্ত এলাকায়। অনেকের আশঙ্কা ছিল তাকে গুম করা হয়েছে। কিন্তু সেই আযম খানের ব্যাপারে প্রশাসনের এখন নীরবতা রহস্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন চাঁদপুর আওয়ামী লীগের মতলব উপজেলা পর্যায়ের কয়েকজন নেতা। তারাও জানান, সেই আযম খান এখন রয়েছেন চাঁদপুরের নিজ বাড়িতেই। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ এ ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে আযম খান চতুর্থ। আলী আযম স্থানীয় নওগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে ঢাকায় ট্যাক্সিক্যাব চালাতেন। পরে এপিএস ওমর ফারুকের গাড়ি চালানোর চাকরি নেন।গাড়িচালক হিসেবে আযম খানের নিয়োগের ব্যাপারে জানতে চাইলে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সাবেক এপিএস ফারুক বলেন, আযম খানের চাচাত ভাই আমার এক সুপরিচিত লোকের গাড়িচালক। ওই মাধ্যমেই আমি গাড়িচালক হিসেবে তাকে পাই। আযমকে গ্রেফতার করা হলেই সত্য তথ্য পাওয়া যাবে। ষড়যন্ত্রের কথাও জানা যাবে।

চাঁদপুরের স্থানীয় অপর একটি সূত্রে জানা গেছে, রেলের অর্থ কেলেঙ্কারির পর প্রায় ১০ মাস আযম খানের কোনো খোঁজ ছিল না। এরপর থেকে কিছুদিন পরপর আযম খান গোপনে বাড়িতে এসে দু-একদিন থেকে আবার চলে যেতেন। বিভিন্ন সময়ে তাবলিগে ছিলেন। নিজেকে আড়াল করার জন্য তিনি ধর্মীয় কাজের কথা বলে বিভিন্ন মাদ্রাসায় ও মসজিদে কাটিয়েছেন প্রায় দেড় বছরের বেশি।

আযমের রয়েছে এক পুত্রসন্তান। আড়াই মাসের এ সন্তানকে দেখভাল করতে তিনি এখন স্থায়ীভাবে থাকছেন বাড়িতে। জমিজমা দেখছেন। স্থানীয় ৩ জন সাংবাদিক আযম খানের খোঁজ জানতে ২৯ জুলাই মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাদি ইউনিয়নের উত্তর নওগাঁও গ্রামের বাড়িতে যান। তার স্ত্রী স্বপ্না অস্বীকার করলেও আযম ঘর থেকে বেরিয়ে ¯’ানীয় সাংবাদিকদের তার অবস্থান জানান।

আযম নিজেই জানান তার তিন বছরের দীর্ঘ আত্মগোপনের কথা। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কিংবা প্রশাসনের ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি তিনি। তবে জানান, ফেরারি জীবনে অসংখ্য বার জায়গা বদল করেছেন। পেশায় ড্রাইভার হলেও ইট ভাঙা থেকে শুরু করে জেলে নৌকায় মাছ ধরার কাজও করতে হয়েছে তাকে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অন্যান্য বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই