তারিখ : ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ঘুম আর এ নিয়ে প্রযুক্তি

ঘুম আর এ নিয়ে প্রযুক্তি
[ভালুকা ডট কম : ২৪ এপ্রিল] 
১৮৭৬ সালের পর থেকে মানুষ গৃহপালিত মোরগের জায়গায় অ্যালার্ম ঘড়ির ব্যবহার শুরু করলেও, এরপরে ঘুম থেকে জাগানোর জন্য আর কোনো নতুন পদ্ধতির উদ্ভাবন হয়নি। ‘মোরগ’ যুগ থেকে অ্যালার্ম ঘড়ির যুগে পা রাখা একটি বড় উন্নতি হলেও দুটোই একইভাবে বিরক্তিকর উচ্চ শব্দে সুন্দর ঘুম ভেঙ্গে জাগিয়ে তোলে। তবে, এখন কিছু গ্যাজেট এই রীতিতে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে। সেন্সর এবং লাইটনিংয়ের মতো প্রযুক্তি দিয়ে এই গ্যাজেটগুলো ব্যবহারকারীর দিনটিকে স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তুলবে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।স্মার্টফোন স্ক্রিন থেকে নীল আলো সরিয়ে নিচ্ছে অ্যাপল এবং গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো। গবেষণায় জানা যায়, নীল আলো মানুষের শরীরে ‘মেলাটনিন’ নামের এক ধরনের হরমোন ছাড়ে, যা অ্যালার্ম ঘড়ির উল্টো কাজ করে, ঘুমোতে যেতে হবে বলে আমাদের শরীরে সিগন্যাল দেয় এই হরমোন।এইদিকে ‘স্লিপ গ্যাজেট’ও ঘুম থেকে জাগানোর জন্য এই একই ধারণা ব্যবহার করছে। কেউ সূর্যের সংস্পর্শে আসতে না পারলে ‘অরা কানেক্টেড অ্যালার্ম ক্লক’ ধীরে ধীরে তার ঘরে সূর্যোদোয়ের অনুকরণ করে তীব্র নীল আলো ছড়িয়ে দেবে। স্লিপ গ্যাজেটগুলো ঘুমানোর প্যাটার্ন আর কালচক্র বোঝার জন্য আরেকটি সেন্সর ব্যবহার করছে, যা ব্যবহারকারীর বিছানার ভেতর থাকবে।

ঘুমানোর সময় মানুষ ‘লাইট’, ‘ডিপ’ আর ‘আরইএম’ তিনটি স্তরের মধ্যে দিয়ে যায়। ‘আরইএম’-এ মানুষ স্বপ্ন দেখে, ‘লাইট’ চক্রে জেগে উঠা ভাল বলে দাবি করছে এই ডিভাইসগুলো। এর ফলে ব্যবহারকারীরা কম বিচলিত হয়ে জাগতে পারবেন।অরা’তে ব্যবহৃত সেন্সরের মতোই ‘দ্য বেডিট’ সেন্সরটি ঘুমোতে কতক্ষণ লেগেছে, ব্যবহারকারী নাক ডেকেছেন কিনা আর প্রত্যেক মিনিটে কতটা শ্বাস নিয়েছেন এসব তথ্য সংগ্রহ করবে। একটা অ্যাপের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এটি ব্যবহারকারীর ঘুমানোর সবচেয়ে হালকা চক্রে জাগিয়ে তুলবে। অন্যান্য ট্র্যাকিং পণ্যগুলোর মতো এটিও ঘুমের প্রকৃতিকে প্রতিদিন একটি স্কোর দিয়ে ঘুমানোকে 'খেলা' বানিয়ে ফেলবে। এর থেকে সহজ ট্র্যাকিংয়ের জন্য ‘স্লিপ সাইকেল’ অ্যাপ ব্যবহার করা যেতে পারে। অ্যাপটি ব্যবহারকারীর স্মার্টফোনের এক্সিলেরোমিটার বা মাইক্রোফোন দিয়ে তার ঘুমানোর সময়ের গতিবিধি শনাক্ত করবে। ঘুমের সময় ব্যক্তি যত কম নড়াচড়া করবেন, তার তত ভালই ঘুম হবে।‘ফিটবিট’-এর মতো পরিধেয় পণ্যগুলোতেও ‘স্লিপ ট্র্যাকিং টুলস’ আছে। তবে, শরীরে পণ্য লাগিয়ে ভালভাবে ঘুমোতে না পারলে, কোনো লাভ আসবে না।এই প্রযুক্তিকে 'কল্পনাতীত দূরত্বে' নিয়ে গেছে ‘স্লিপ নাম্বার’-এর ‘দ্য আইটি বেড’। এই বিছানাকে ঘুমের ভ্রাম্যমান গবেষণাগার বললে ভুল বলা হবে না। এর ভেতরে বসানো বায়োমেট্রিক সেন্সরগুলো ঘুমন্ত ব্যাক্তির পরিস্থিতি ‘দেখে’ আর গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনগুলো সেকেন্ডে ১০০ বার করে দেখে। এই বিছানায় একটি এপিআই আছে যা অন্য অ্যাপগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত করা যাবে। আর অন্যান্য পরিধেয় পণ্যগুলো ব্যক্তির বিছানার পাশের টেবিলে গাদা করে রাখা যাবে। প্রতিষ্ঠানটি ব্যবহারকারীদের দিন রাতের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এতসব তথ্য দিয়ে প্যাটার্ন খুঁজে, সে অনুযায়ী পরামর্শ দেয় পণ্যটি। যেমন, এটি বের করতে পারে কোনো ব্যাক্তির ভাল ঘুম হবে ৬৫ ডিগ্রির নিচের তাপমাত্রায়। বিছানাটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য, আর এটা তার পাওয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে এক ধরনের অপরিবর্তনীয় অবস্থায় থাকতে বলতে পারে। জানুয়ারিতে বিছানাটির বিষয়ে প্রথম ঘোষণা দেওয়া হয়। চলতি বছর জানুয়ারিতে কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স শো-তে এর ঘোষণা দেওয়া হয় আর এই গ্রীষ্মেই এটি বাজারে পাওয়া যাবে বলে জানা যায়।এসব ডিভাইসগুলো নিয়ে তেমন কোনো গবেষণা করা হয়নি বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক জেরি সিগেল। তিনি ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া অ্যাট লস অ্যাঞ্জেলস (ইউসিএলএ)-এর সেন্টার ফর স্লিপ রিসার্চ-এর সঙ্গে যুক্ত। যে সময় এই প্রতিষ্ঠানগুলো দাবি করছে এই ডিভাইসগুলোর পেছনে প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞান আছে, তখন কিন্তু তারা কোনো প্রমাণ দেখাতে পারছে না যে এই পণ্যগুলো আসলেই আমাদের ঘুম বা সকালের মেজাজে উন্নতি ঘটাচ্ছে।পেছনের বিজ্ঞান যদি দুর্বোধ্য হয়েও থাকে, তাহলেও দিনটি শুরু করার জন্য সুন্দর আলো আর প্রিয় সঙ্গীকে ঘুম থেকে জাগানো অবশ্যই কোনো ক্ষতিকর পদ্ধতি হবে না বলেই মত দিয়েছে সিএনএন।তারপরও কেউ যাতে প্রতিটা পাশ ফেরানো, আরইএম- এসবে খুব বেশি আটকে না যায় তা নিয়ে খেয়াল থাকার পরামর্শ দিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। না হলে ভাল ঘুম হওয়ার জায়গায় বিশ্রামহীন রাত কাটাতে হবে বলে মন্তব্য করেছে তারা।



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই