উত্তরাঞ্চলে প্রচন্ড তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত,দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব
[ভালুকা ডট কম : ২৯ এপ্রিল]
প্রকৃতির নির্মম তাপদাহে পুড়ছে দেশের উত্তরাঞ্চল । এরই ধারাবাহিকতায় নওগাঁসহ বিভিন্ন উপজেলায় পড়ছে এর তীব্র প্রভাব। জেলার রাণীনগরে অব্যাহত তীব্র তাপদাহের কারণে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম বিপর্যয়। তাপদাহের বৃদ্ধির সাথে সাথে দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব। শিশু থেকে শুরু করে যুবক-বৃদ্ধরাও আক্রান্ত হচ্ছে সর্দি, কাশি ও ডায়রিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন রোগে।

অন্যদিকে গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে কয়েক দিন ধরে চলছে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিং।   এতে সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। প্রচন্ড গরমে সাধারণ মানুষ স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে হাঁপিয়ে উঠছে। লোডশেডিং এ স্থবির হয়ে পড়েছে উপজেলার নিত্যদিনের কাজকর্ম।

বেলা বাড়ার সাথে সাথে সূর্যের প্রখরতার প্রচন্ড তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ নিজ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে একে বারেই বের হচ্ছে না। তবে খেটে খাওয়া মানুষ বাধ্য হয়ে রিক্সা, ভ্যানের পাশাপাশি কৃষকরা মাঠে ধান কাটছে। কোথাও একটু স্বস্তি পাচ্ছে না মানুষ। গরমের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে উপজেলার সাধারণ মানুষ।

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও খেটে খাওয়া লোকজন সামান্য স্বস্তি পেতে গাছের নিচে বিশ্রাম নিচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিদিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় মাটি ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় খাল-বিল নদী-নালা শুকিয়ে গেছে। অন্যদিকে মানুষের পাশাপাশি প্রাণিকুলেও নেমে এসেছে নাভিশ্বাস। ভ্যাপসা গরম ও তীব্র দাবদাহে কদর বেড়ে গেছে, বেলের শরবত, শসা, তরমুজ, ডাব ও আইসক্রীমের।

১নং খট্টেশ্বর রাণীনগর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ আসাদুজ্জামান পিন্টু জানান, তীব্র তাপদাহের প্রভাবে ক্ষেতে খামারে কৃষকরা কাজ করতে পারছেন না। ফলে খেটে খাওয়া মানুষের দূর্ভোগ চরমে। এদিকে ঘন ঘন বিদ্যুতের লোডশেডিং এর কারণে গ্রাহকদের মাঝে অসন্তোষ ও চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

উপজেলার চকমনু গ্রামের বিদ্যুৎ গ্রাহক ও কাশিমপুর ইউপি’র মেম্বার প্রার্থী মোঃ আবুল বাশার (চঞ্চল) জানান, দিনরাত মিলে প্রায় ১০/১২ বার বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় ছোট বাচ্চাদের নিয়ে খুব সমস্যায় রয়েছেন।

রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শারিকুল ইসলাম (স্বজন) জানান, চলমান তাপদাহের প্রচন্ড রোদের তাপ থেকে যতদুর পাড়া যায় নিজেদের ছাঁয়ায় রাখার চেষ্টা করতে হবে। মাঠে-ঘাটে শ্রমিকদের কাজ করার সময় অব্যশই আরামদায়ক ফুল শার্ট ব্যবহার করতে হবে শরীরের ত্বক রক্ষা করতে। প্রচুর পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। শরীরের ঘাম শুকানোর আগেই গোসল করে শরীর পরিস্কার করে নিতে হবে। খুব সমস্যা হলে অব্যশই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। এই তাপদাহে রোদ থেকে ফিরে ফ্রিজের ঠান্ডা খাওয়া থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে।

নওগাঁ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রাণীনগর সাব-জোনাল অফিসের এজিএম মোঃ মোতাছিম বিল্লাহ জানান, বিদ্যুৎ চালিত নূলকূপ বন্ধ থাকায় বর্তমানে রাণীনগর সাব-জোনাল অফিসের অধিনে ৩৯ হাজার ৭শ’ গ্রহক রয়েছে। এর মধ্যে আবাসিক গ্রাহক প্রায় ২৮হাজার, ব্যাণিজ্যিক ১হাজার, দাতব্য সহ অন্যান্য ৪শ’ গ্রাহক রয়েছে। অফিসের আওয়াতাধীন গ্রাহকদের চাহিদা ৬ মেগাওয়াট। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে  প্রয়োজনীয় উপকরণ সংকট সহ প্রচন্ড তাপদাহে বিদ্যুৎ উৎপাদনের হার কমে যাওয়ার কারণে সরবরাহ হচ্ছে মাত্র ৪ মেগাওয়াট। এজন্যই জাতীয় ভাবে বিদ্যুতের এই লোডশেডিং হয়েছে। তবে অচিরেই এই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।#

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।