তারিখ : ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

রাণীনগরে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ায় পরীক্ষা বন্ধ

রাণীনগরে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ায় পরীক্ষা বন্ধ
[ভালুকা ডট কম : ২৩ জুলাই]
নওগাঁর রাণীনগরে পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে শনিবার অর্ধ-বার্ষিকী পরীক্ষার ৯ম ও ১০ম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের নৈব্যক্তিক প্রশ্ন ফাঁস হওয়ায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা গ্রহণ বন্ধ করে দিয়েছেন। তবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতিকে দোষারোপ করছেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান, ওই দিন বিদ্যালয়ের এক পরীক্ষার্থীর কাছে উক্ত বিষয়ের হুবহু প্রশ্ন পাওয়া যায়। সেই প্রশ্নের সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের কাছে থাকা সংরক্ষিত পরীক্ষার প্রশ্নের অনেক মিল খুজে পাওয়া গেলে প্রধান শিক্ষক পরীক্ষা বন্ধ করে দেন। তবে এই প্রশ্নপত্র ফাঁসের পেছনে শিক্ষক সমিতির কিছু অসাধু ব্যক্তিরা যুক্ত থাকতে পারেন।

গোপন সূত্রে জানা, ওই বিদ্যালয়ের যে সব শিক্ষকরা প্রাইভেট পড়ান তারাই অধিকাংশ বিষয়ে প্রশ্নপত্র তৈরি করেন। এই সব শিক্ষকরা ছাড়াও অন্যান্য শিক্ষকরা বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে আতাত করে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে পরীক্ষার পূর্বে বিভিন্ন বিষয়ের প্রশ্নপত্র ফটোকপি করে নিজের প্রাইভেট পড়–য়া শিক্ষার্থীদের কাছে পরীক্ষার পূর্বে সরবরাহ করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান, এই বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক পলাশ, চাঁদ সুলতানা, শাহাজান ও প্রদীপ কুমার প্রাইভেট পড়ানোর জন্য নামকরা শিক্ষক। তাই এই সব সুযোগ-সবিধার কারণে শিক্ষার্থীরা ওই সব শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট পড়ার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে। তাই শিক্ষার্থীদের কাছে বর্তমানে বিদ্যালয়ের চাইতে শিক্ষকদের প্রাইভেট হোম অধিক গুরুত্বপূর্ণ। এই বিদ্যালয়ের প্রতিটি পরীক্ষার সময় প্রশ্ন পত্র ফাঁসের এই ধরনের ঘটনা ঘটেই আসছে বলে স্থানীয় অনেক অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন।

তবে সরকারের পক্ষ থেকে আইন জারি করা হলেও সেই আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় আজ শিক্ষা ব্যবস্থার এই করুন পরিণতি বলে অনেক প্রবীণ শিক্ষকরা মনে করছেন। যে সব শিক্ষকরা আইনকে অমান্য করে অবৈধ্য ভাবে প্রাইভেট পড়ানোর ব্যবসা করে আসছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ভাবে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে শিক্ষা ব্যবস্থা এই রুগ্ন দশা থেকে অনেকটাই রক্ষা পাবে বলে আশা করেন এই সব প্রবীণ শিক্ষকরা।   

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক শিক্ষার্থীরা জানান, বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষকরা বর্তমানে প্রাইভেট পড়ানোতে ব্যস্ত থাকেন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের অনেক শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে পাঠদান করার মতো সময় পান না। নিজের নির্দিষ্ট জায়গায় প্রাইভেট পড়ানোতেই অধিকাংশ সময় ব্যয় করতে হয়। সেই সব শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট পড়লে পরীক্ষার পূর্বে এই ধরনের প্রশ্নপত্র পাওয়া যায় এই সমস্যা বর্তমানে এই অঞ্চলের নিত্য দিনের সঙ্গী। শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট না পড়লেই পরীক্ষায় ফেল করে দেওয়া সহ বিভিন্ন রকমের ভয়ভীতি দেখান। তাই ইচ্ছে না থাকলেও বাধ্য হয়ে সেই সব বাণিজ্যিক শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট পড়তে হয়। পরীক্ষার পূর্বে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার রীতি এই বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিনের। তাই দিন দিন এই পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সুনাম বর্তমানে শূণ্যের কোঠায়।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুস সোবহান জানান, আমরা নিজেদের প্রশ্ন নিজেরাই তৈরি করি এবং সেইসব প্রশ্নপত্র নিয়ে আমি আমার কাছে শক্ত হাতে সংরক্ষণ করে রাখি যা পরীক্ষার কিছু সময় পূর্বে বের করা হয়। তাই আমাদের কাছ থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: জালাল উদ্দিন জানান,উপজেলার পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় সহ বেশ কিছু সংখ্যক বিদ্যালয় আমাদের সমিতির আওতার বাহিরে। তাই আমাদের শিক্ষক সমিতির সঙ্গে এই বিদ্যালয়ের প্রশ্নের কোন প্রকার সম্পর্ক নেই। তারা তাদের প্রশ্ন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের দিয়ে তৈরি করেন। সেই সব শিক্ষকরাই এই ধরণের অবৈধ্য কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত ।

উপজেলা মাধ্যমিক ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মো: আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বিষয়টি জেনেছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই