তারিখ : ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

রাণীনগরে শিকার করা হচ্ছে বন্য প্রানী,নজর নেই কর্তপক্ষের

রাণীনগরে শিকার করা হচ্ছে বন্য প্রানী,নজর নেই কর্তপক্ষের
[ভালুকা ডট কম : ০৯ ডিসেম্বর]
শীত মৌসুম এলেই দেখা মেলে এদের। ঘাড়ে তীর-ধনুক, হাতে হাতে লাঠী। শিকারীদের পিছনে ছুটে চলেছে হ্যামিলনের বাঁশি ওয়ালার মতো ছেলে ছোকরার দল। শিকারীদের লক্ষ বনবিড়াল (গাবড়া),বেজি, শেরুল্যাসহ বিভিন্ন বন্য প্রানী। এসব বন্যপ্রানী প্রকাশ্যে নিধন করলেও নজর নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

সম্প্রতি উপজেলার কালীগ্রামে হঠাৎ করেই চোখে পড়ল কিছু লোকজন তীর-ধনুক, লাঠী হাতে স্থানীয় ছেলে ছোকরারা একটি বাড়ীর চারিদিকে ঘিড়ে রেখেছে। স্থানীয়দের জিজ্ঞেস করে জানা গেল আদিবাসীরা বনবিড়াল (গাবড়া) শিকারের জন্য বাড়ীটি ঘিড়ে রেখেছে। কিছুক্ষন অপেক্ষার পর দেখা গেল একটি বনবিড়াল শিকারীর তীরে ঘায়েল হয়েছে।

শিকারীর দলনেতা রাবন মরমু (৬৫) তার সাথে কথা বলে জানাগেল ওই দলে দিলিপ মরমু (২৫), রাইসেন সরেণ (৪২) ও সুমন বাস্কে (২৬) সহ প্রায় ১৭ জন রয়েছেন। তারা সবাই এসেছেন রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার নহানি গ্রাম থেকে। শীত মৌসুম এলেই প্রতিবছর তারা এই এলাকায় আসেন শিকার করতে। গ্রাম্য লোকজনের কাছে ক্ষতিকর প্রানী হিসেবে পরিচিত বনবিড়াল, বেজি এগুলো ধরে দিতে স্থানীয় উৎসুকজনতা তাদের সার্বিক সহযোগিতা করেন। এক বাড়ীতে বনবিড়াল ধরতেই আরেক বাড়ীওয়ালা এসে হাজির শিকারীদের কাছে। দাদা, আমাদের বাড়ীতে আসেন গাবড়া আছে, প্রতিরাতেই গোয়াল ঘড়ে হানা দিয়ে হাঁস-মুরগী খেয়ে ফেলছে । সাথে সাথেই ছুটে চলছেন সেখানে বনবিড়াল ধরতে। আবার বাড়ীর আশে পাশে ছোট খাটো বাঁশঝাড় বা পুকুর পারের জংগলে নিয়ে যাচ্ছেন বেজি ধরতে। স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিবছর দাদারা না আসলে আমাদের হাঁস-মুরগী সাবার হয়ে যেত। বনবিড়াল আর বেজির অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে ওঠি। এই এলাকায় বনবিড়াল বিশেষ করে বাড়ীর তালা বা মাচায় অথবা সামান্য জংগলে বাসা বেধে থাকে। রাত হলেই কোন না কোন বাড়ীর গোয়াল ঘড়ে, হাঁস-মুরগীর ঘড়ায় হানা দেয় ।

এব্যাপারে শিকারী দিলিপ মরমু জানান, তারা পাঁচ ভাই এসেছেন শিকার করতে । রাবন মরমু জানান, এই এলাকায় প্রায় ১০ বছর ধরে শিকার করতে আসেন ।এবার ২ ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন ।  তাদের স্থানীয় এলাকার ধান-পানের কাজ শেষ করেই শিকারে আসেন এই এলাকায় । দু/চার দিন শিকার করে যা জোগে তা নিয়ে বাড়ী ফেরেন তারা। তাদের প্রধান শিকার হলো বনবিড়াল, বেজি, শেরুল্যা, বাদুরসহ বিভিন্ন বন্য প্রাণী। প্রতিটি বনবিড়ালের প্রায় ৫ থেকে  ৭ কেজি করে মাংস হয় । প্রতিদিন ভাগে পরলে ৫/৭টি করে বনবিড়াল শিকার করতে পারেন তারা। ক’দিন থেকে খেয়ে পরে যা বাঁচে সেগুলো পাতিলে গড়ম করে পাতিলের মূখ শক্ত করে বেধে রেখে বাড়ীতে নিয়ে যান। পারিবারিক খাবার চাহিদা মেটার পর প্রতি কেজি মাংস ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন তারা। শিকারীরা বলছেন,পেশা নয়,সখের বসে তারা আসেন শিকার করতে। স্থাণীয়দের সহযোগিতা এবং উৎসাহের কারনেই প্রতিবছর আসেন এই এলাকায়।

এব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা আবু তালেব জানান, যদিও এসব প্রানী নিধনকরা বা শিকার করা আইনত: দন্ডনিয় অপরাধ,কিন্তু তার পরেও এসব প্রানীর এই এলাকায় নিজস্ব কোন আবাসস্থল না থাকায় গ্রামের লোকজনের হাঁস-মুরগী সহ বিভিন্ন ক্ষতি করে থাকে। তাই স্থানীয়রা শিকারীদের শিকার করতে সহযোগিতা করে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই