তারিখ : ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

গৌরীপুরে ইটভাটায় কাজ করেও তুহিন পেলো জিপিএ-৫

গৌরীপুরে ইটভাটায় কাজ করেও তুহিন পেলো জিপিএ-৫
[ভালুকা ডট কম : ০৭ মে]
অর্থের অভাবে বড় ভাই-ছোটদের লেখাপড়া হয়নি। তবে দমে যায়নি তুহিন। দৃঢ় মনোবল, কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায় আর মনের জোরে অসম্ভবকে সম্ভব করেছে তুহিন মিয়া। সে ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করে এবছর এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে। দেখছে ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন!

তুহিনের বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরের সতিশায়। সে গৌরীপুর আর.কে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। প্রাথমিক ও জেএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ অর্জন করে।  তার বাবা সোবান মিয়া মিষ্টির দোকানে কাজ করেন। মা পারুল আক্তার গৃহিনী। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে তুহিন দ্বিতীয়। অভাবের কারণে তুহিনের বড় ভাই শাহিন মিয়া ও ছোট বোন রুনা আক্তার পড়াশোনা করতে পারেনি। সংসারের হাল ধরতে শাহিন ইটভাটায় ও রুনা  ঢাকায় একটি গার্মেন্টসে কাজ  নেয়। সবার ছোট ভাই তৌফিক ইসলাম শিশু শ্রেণিতে পড়েন।

সরজমিনে তুহিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়। ছোট একটি ধাড়ির খুপড়ি ঘরে তাদের বসবাস। টিনের চালেও রয়েছে অসংখ ছিদ্র। এই ঘরের একটি চৌকির কোণে বই-খাতা রেখে চলতো তার পড়াশোনা। তুহিন জানায়, জেএসসি পাশ করার পর তার পরিবারের পক্ষ থেকে লেখাপড়া খরচ চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই পড়ালেখার খরচ চালানোর জন্য সে স্থানীয় ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ  নেই। সেই আয়ের টাকা দিয়েই পড়াশোনা ও কোচিংয়ের খরচ চালিয়ে এবার এসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছি। ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করার কারণে মাঝে মাঝে স্কুলে যেতে পারতাম না। কিন্তু রাত জেগে ঠিকউ পড়াশোনা করতাম। বর্ষাকালে পড়াশোনা করতে অনেক কষ্ট হতো। টিনের চালের ছিদ্র দিয়ে বৃষ্টি পানি পড়ে বইখাতা ভিজে যেতো। তুহিন বলেন, আমার ভালো ফলাফলের পেছনে আমার মা ও মালেক স্যারের অনুপ্রেরণা ছিলো সবচেয়ে বেশি।  ফল শোনার পর মা আমাকে জড়িয়ে ধরিয়ে ধরে আনন্দে অনেকক্ষণ কেঁদেছে। তখন আমারো চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে আসে।

তুহিনের এই সাফল্যে তার বাবা-মা অনেক খুশি। তুহিন বলেন একসময় স্বপ্ন দেখতাম ক্রিকেটার হওয়ার কিন্তু অভাবের কারণে ভালো কোনো ক্রিকেট একাডেমীতে ভর্তি পারিনি। কিন্তু এখন পড়াশোনা করে ডাক্তার হতে চাই। তবে অভাবের কারণে তার উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হওয়ার বিষয় নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তার বাবা সোবান মিয়া বলেন, ছেলে পাশ করছে আমরা অনেক খুশি হইছি কিন্তু আমরার তো টেকা নাই কলেজে কিভাবে পড়ামো ছেলেডারে।

গৌরীপুর রাজেন্দ্র কিশোর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীর চর্চা শিক্ষক আব্দুল মালেক বলেন, মেধাবী তুহিনের অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের ছেলে। ক্রিকেটে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের ক্ষুদে ক্রিকেটার হিসাবে সুনাম রয়েছে। আমরা তার সাফল্যে অনেক গর্বিত।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই