তারিখ : ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

শিশুর ডায়ারিয়া হলে করণীয়

শিশুর ডায়ারিয়া হলে করণীয়
[ভালুকা ডট কম : ০৪ জানুয়ারী]
ডায়ারিয়া শিশুদের বহুল পরিচিত একটা খাদ্য ও পানিবাহিত রোগ। এটি বাংলাদেশে শিশু-মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। চব্বিশ ঘন্টায় তিন বা তার চেয়ে বেশি সংখ্যকবার পাতলা পায়খানা থাকলে তাকে Diarrhoea বলে। পাতলা পায়খানার সাথে রক্ত গেলে তাকে Dysentery বা আমাশয় বলে। Vibreo Cholera জীবাণু দিয়ে হলে তখন প্রচুর পরিমাণে চালধোয়া পানির মতো পাতলা পায়খানা ও ঘনঘন বমি হলে তাকে কলেরা বলে।

বুকের দুধ পান করে শিশু যদি হাসিখুশি থাকে খেলাধুলা করে, ঠিকমতো খায় ও পানিশূন্যতা না থাকে তখন তিনবারের বেশিবার পায়খানা হলেও সেটি ডায়ারিয়া নয়। ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায় ও পানি স্বল্পতা দেখা দেয়। ডায়রিয়ার সঙ্গে কখনো কখনো জ্বর, বমি কিংবা পেটের ব্যথাও হতে পারে। ডায়ারিয়াকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে। চৌদ্দ দিনের কম হলে স্বল্প মেয়াদী, বেশি হলে দীর্ঘমেয়াদী ও মলে রক্ত গেলে ডিসেন্ট্রি বলা হয়।

ডায়রিয়ার কারণ:- দূষিত খাবার, পানি, রোগ জীবাণু ও কৃমি। ডায়ারিয়ার জীবাণু: রোটাভাইরাস, ই কোলাই, শিগেলা, ভিবরিও কলেরা, এন্টামিবা হিস্টোলাইটিকা ও জিয়ারডিয়া লেম্বলিয়া। ডায়ারিয়ার বিপদজনক লক্ষণ:- ডায়রিয়ার কিছু বিপদজনক লক্ষণ আছে যা সবার জানা প্রয়োজন। এর কোন একটা লক্ষণ দেখামাত্র চিকিৎসকের শরনাপন্ন হতে হবে।

লক্ষণগুলো হচ্ছে-
১. শিশুর নিস্তেজ হয়ে পড়া।
২. চোখ বসে যাওয়া।
৩. বুকের দুধ টেনে খেতে না পারা।
৪. অন্য কোন তরল খাবার না খাওয়া বা খুব কম পরিমানে খাওয়া।

ডায়রিয়া হলে করনীয়:
১। বার বার খাবার স্যালাইন দিন।
২। লবণ গুড়ের শরবত।  
৩। ভাতের মাড়, চিড়ার, ডাবের পানি।
৪। নিরাপদ টিউবওয়েলের পানি।

৫। পুকুর বা নদীর ফুটানো পানি।
৬। স্বাভাবিক খাবার চলবে।
৭। অল্প করে বার বার খাওয়ানো।
৮। ঘনঘন মায়ের দুধ দিতে হবে।
৯। স্বাস্থ্যকর্মীর পরামর্শে এন্টিবায়োটিক ও জিন্ক খাওয়াতে হবে।

ডায়রিয়া হলে যা করা যাবে না:
১। কখনো খাবার বন্ধ করা যাবে না।
২। স্বাস্থ্যকর্মীর পরামর্শ ছাড়া ঔষধ দেয়া যাবে না।

স্যালাইন বানানো ও খাওয়ার নিয়ম:
পুরো এক প্যাকেট স্যালাইন প্যাকেটের গায়ে নির্দেশিত পরিমাণ পানিতে একবারেই ঢেলে দিতে হবে। স্যালাইনের প্যাকেট আংশিক বানালে শরীরে লবণ পানির জটিলতা হয়। স্যালাইন পানিতে পুরোপুরি না মিশে যাওয়া পর্যন্ত নাড়তে হবে।দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য প্রতি বার পায়খানার পর ১০-২০ চা চামচ, দুই-দশ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের ২০-৪০ চা চামচ পরিমান স্যালাইন খাওয়াতে হবে এবং দশ বছরের বেশি বয়সের শিশুদের যতটুকু খেতে চায় সেই পরিমাণ খাওয়াতে হবে। বমি করলে পাঁচ-দশ মিনিট থেমে আবার স্যালাইন দিতে হবে।প্যাকেট থেকে বানানো স্যালাইন বারো ঘন্টা পর্যন্ত খাওয়ানো যায়। এরপরে ফেলে দিন। গরম পানিতে স্যালাইন বা স্যালাইন গরম করা নিষেধ। ডায়রিয়া ভাল হয়ে গেলেও পরবর্তী দুই সপ্তাহ শিশুকে একবেলা বাড়তি খাবার প্রতিদিন দিতে হবে।

জটিলতা : ডায়ারিয়াতে খাবার স্যালাইন না খাওয়ালে পানিশূন্যতায় শিশুর মৃত্যু অনিবার্য। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদী ডায়ারিয়া থেকে রাতকানা ও অপুষ্টি হয়ে থাকে।

ডায়রিয়া প্রতিরোধ:
১। শিশুকে মায়ের বুকের দুধ দিন।
২। খাবার তৈরী, খাওয়ানোর পূর্বে এবং পায়খানার পর সাবান দিয়ে হাত ধোয়া।
৩। খাবার ভালভাবে ঢেকে রাখা।
৪। ফুটপাতের পঁচা বাসী খাবার না খাওয়া।
৫। সব সময় ফুটানো ঠান্ডা পানি ব্যবহার।
৬। বোতলে দুধ খাওয়ানোর থেকে বিরত থাকা।
৭। খাওয়ানোর সময় চামচ ব্যবহার করতে হবে।
৮। স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার।
৯। শিশুকে ডায়ারিয়া ও হামের টিকা দিতে হবে।
১০। সবাইকে স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

নারী ও শিশু বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই