তারিখ : ২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

নান্দাইলে পল্লী চিকিৎসকের নবম শ্রেণী ছাত্রীর সাথে বিয়ে

নান্দাইলে পল্লী চিকিৎসকের নবম শ্রেণী ছাত্রীর সাথে বিয়ে
[ভালুকা ডট কম : ২৭ জুলাই]
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বেতাগৈর ইউনিয়নের বীরখামাটখালি গ্রামের পল্লী চিকিৎসক নবম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে বিয়ে করার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁর নিজের মেয়ে নান্দাইলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে। আর একই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিয়ে করে বসেছেন পল্লী চিকিৎসক বাবা মিজানুর রহমান মিন্টু (৪৫)। নিবন্ধন ছাড়াই এই বিয়ের কাজটি শেষ করা হয়েছে হুজুর দিয়ে দোয়া পড়িয়ে। বাল্যবিয়ের পরদিনই ‘বিয়ের শর্ত’ মেনে কনের স্কুলে অধ্যয়নরত নিজের দুই মেয়ের ছাড়পত্র নিয়ে অন্য স্কুল ভর্তি করিয়েছেন মিন্টু।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পল্লী চিকিৎসক মিন্টু উপজেলার বৈতাগৈর ইউনিয়নের বীরখামাটখালি গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিন ছেলে। স্থানীয় বাজারে ‘চাঁদ মেডিকেল হল’ নামে একটি ওষুধের দোকান রয়েছে তাঁর। ২০০৪ সালে তিনি বিয়ে করলেও দেড় মাস আগে হঠাৎ স্ত্রী মারা যায়। তাঁর রয়েছে দুই মেয়ে। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকে বিয়ে করার জন্য কনে খুঁজতে থাকেন মিন্টু। একপর্যায়ে বাড়ির পাশের মো. ফারুক মিয়ার স্কুলপড়ুয়া মেয়ে লিমা আক্তারের দিকে চোখ পড়ে তাঁর। সে বীরখামাটখালী জেবি উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে। তাকে বিয়ের জন্য পরিবারের কাছে প্রস্তাব পাঠান মিন্টু।

প্রতিবেশীরা জানায়, মেয়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং একই স্কুলে নিজের (বরের) মেয়েরা পড়ায় প্রথমে বিয়েতে রাজি ছিল না কনের পরিবার। এ অবস্থায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কনের বাবাকে টাকার লোভ দেখিয়ে এবং দুই মেয়েকে স্কুল ছাড়ার কথা বলে বিয়েতে রাজি করান মিন্টু। রোববার নিজ গ্রামেই বিয়ের আয়োজন করা হলে স্থানীয় লোকজনের বাধার মুখে তা প- হয়ে যায়। পরে পাশের খারুয়া ইউনিয়নের জামতলা এলাকায় মেয়ের মামার বাড়িতে নিয়ে যায় উভয় পরিবারের লোকজন। বাল্যবিয়ে হচ্ছে এ খবর পাওয়ার পর সেখানেও স্থানীয় ইউপি সদস্য এসে বাধাঁ দেন। পরদিন সকালে হুজুর ডেকে গোপনে নিবন্ধন ছাড়াই বিয়ে পড়িয়ে মঙ্গলবার সকালে নিজ বাড়িতে নববধূকে নিয়ে আসেন মিন্টু। এর মধ্যে নববধূকে বাড়িতে রেখেই দুই মেয়েকে স্কুল ছাড়িয়ে নান্দাইল সদরে এক আত্মীয়ের বাসায় রেখে যান মিন্টু। সেখানে থেকেই লেখাপড়া করবে মেয়েরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এরই মধ্যে বড় মেয়েকে নান্দাইল পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে এবং ছোট মেয়েকে সদরের একটি কওমি মাদরাসার তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি করানো হয়েছে।এ ব্যাপারে মিজানুর রহমান মিন্টুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কাজি দিয়ে বিয়ে নিবন্ধনের কথা অস্বীকার করে বলেন,যা হওয়ার তো হয়েছে। এখন আর কী করা। আজ না হোক কাল তো হবেই। দুই মেয়েকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে নিলেন কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন,ভালো জায়গায় পড়াশোনার জন্য।

বাল্যবিয়ের শিকার মেয়ের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাকিম বলেন,আমি ঢাকায় আছি, তবে মঙ্গলবার সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (বরের মেয়ে) বদলি ছাড়পত্র দেওয়ার কথাটি শুনেছি।বাল্যবিয়ের শিকার মেয়ের মা সেলিনা বেগম বলেন,বিয়ের আলোচনা চলতাছে। কথাবার্তা ঠিক অইলে অহনি বিয়া পড়াইতাম না ,বরের বয়স কত জানতে চাইলে তিনি বলেন,পুরুষের বয়স ধরন যায় না, এই বলে মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে দেন।

প্রতিবেশীরা জানায়, মঙ্গলবার থেকেই লোকচক্ষুর আড়ালে বর-কনে বাড়ির একটি কক্ষে অবস্থান করছে। নান্দাইল উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার মাহমুদা আক্তার বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে বর ও কনের পরিবারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।#




সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

নারী ও শিশু বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই