তারিখ : ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে-মির্জা ফখরুল

দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে-মির্জা ফখরুল
[ভালুকা ডট কম : ১০ আগস্ট]
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের ওপর অমানবিক ও বর্বোরোচিত হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পুলিশের ছত্রছায়ায় হেলমেট ও মুখোশ পরে আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠি, কিরিচ, রামদা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলায় বিএনপির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

আজ (শুক্রবার) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব মন্তব্য করেন। মির্জা ফখরুল বলেন,আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দাবি করেছেন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আক্রমণ নাকি বিএনপি-জামায়াতকর্মীরা করেছে। এদেশের এমন কোনো পাগলও নেই যে, তারা বিশ্বাস করবে যে পুলিশের সহায়তায় এবং তাদের সামনে বিএনপি-জামায়তকর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠি-সোটা নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মারপিট করবে, দায়িত্বপালনরত সাংবাদিকদের কোপাবে এবং ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ অফিস আক্রমণ করবে, আর তাদের গ্রেফতার করা হবে না।

তিনি বলেন,আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সহিংস কোনো কর্মকাণ্ডে বিএনপি কখনও জড়িত ছিল না। যারা পুলিশের সামনে হেলমেট ও মুখোশ পড়ে সহিংসতা করে, সাংবাদিকসহ আন্দোলনকারীদের ওপর নির্মম হামলা চালিয়েছে তারা আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী। আওয়ামী লীগের সেই সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে চিহ্নিত ও গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনারও জোর দাব জানাচ্ছি।

মির্জা ফখরুল বলেন,সরকারি দলের সিদ্ধান্তেই ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগের নেতকর্মীরা পুলিশের ছত্রছায়ায় হেলমেট ও মুখোশ পরে অগ্নেয়াস্ত্র, লাঠি, রামদা ইত্যাদি নিয়ে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের ওপর অমানবিক ও বর্বোরোচিত হামলা চালিয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভেতরে ঢুকে ছাত্রছাত্রীদের মারপিট করেছে। দলবদ্ধভাবে বিভিন্ন হোস্টেলে ও আবাসস্থলে গিয়ে ছাত্রদের মারপিট করে পুলিশে হস্তান্তর করেছে। এসব কিছুই ঘটেছে পুলিশের চোখের সামনে এবং তাদের সহযোগিতায়।

তিনি আরও বলেন,হেলমেট পরা ও মুখোশধারী আক্রমণকারীরা ছাত্রলীগ-যুবলীগকর্মী ছিল এটা আহত সব সাংবাদিক এবং ছাত্রছাত্রীরা বলার পরেও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাদের বিচার করার জন্য নাম চান। এমন বাজে রসিকতায় তিনি আনন্দ পেতে পারেন, কিন্তু দেশবাসী লজ্জিত হয়।

আওয়ামী লীগ পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করে- দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন,সেই পুলিশ তাদেরই নির্দেশে হেলমেট ও মুখোশধারীদের মানুষ কোপানোর এবং অতঃপর নির্বিঘ্নে সরে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছে। এরপরও হামলায় আহতদের কাছে নাম চাওয়া একটা নোংরা রসিকতা ছাড়া আর কিছু হতে পারে না। বলা বাহুল্য, সাংবাদিক ও টিভি চ্যানেলগুলোর ওপরে কড়া নিয়ন্ত্রণ রাখার পরও এই সত্যগুলো টিভি ক্যামেরার চোখ এড়িয়ে যায়নি এবং তা জনসমক্ষে প্রকাশ পেয়ে গেছে।

তিনি বলেন,পত্রিকায় আক্রমণকারীদের অনেকেরই ছবি ছাপা হয়েছে এবং স্যোশাল মিডিয়ায় আক্রমণকারীদের ছবির ছড়াছড়ি থাকার পরেও অপরাধীদের গ্রেফতারের জন্য ওবায়দুল কাদের কেন ছবি ও নাম চান? কেন সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে তথ্যমন্ত্রীর চিঠি পাঠাতে হয়? কি বিচিত্র এই দেশ! আর বিচিত্র বলেই তারা অপরাধ করে তার দায় চাপানোর চেষ্টা করছে আমাদের ওপর।

বিএনপিকে আক্রমণকারী হিসেবে চিহ্নিত করতে সরকারি অপচেষ্টার অংশ হিসেবে দৈনিক জনকণ্ঠে তিন বছর আগের একটি ছবি ছাপিয়ে জনমত বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে বলেও উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, তবে এর জন্য পত্রিকাটি ইতোমধ্যেই দুঃখ প্রকাশ করেছে। কিন্তু এতে সরকার ও তার সমর্থকদের থলের বিড়াল বেরিয়ে গেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন,আমরা ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনের প্রতি প্রকাশ্যেই সমর্থন জানিয়েছি। এটা অপরাধ হলে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে পুলিশ কর্মকর্তারা পর্যন্ত একই অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ার কথা। কিন্তু যে সরকার ভোট ছাড়া নিজেরাই নিজেদের নির্বাচিত ঘোষণা করে জোর করে রাষ্ট্র চালাতে লজ্জাবোধ করে না, তাদের কাছ থেকে পক্ষপাতমূলক বক্তব্য ও আচরণ ছাড়া আর কী আশা করা যেতে পারে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া বার্নিকাটের গাড়িতে হামলা এবং সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের বাড়ি আক্রমণ ও ভাঙচুরের জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করেন মির্জা ফখরুল।

মন্ত্রিসভায় সড়ক পরিবহন আইনের যে সংশোধনী অনুমদন করেছে তা ইতোমধ্যেই পরিবহন মালিক সমিতি ছাড়া সবাই প্রত্যাখ্যান করেছে বলেও দাবি মির্জা ফখরুলের। তিনি বলেন,সংশোধিত এই আইনে ছাত্রছাত্রীদের দাবিকৃত নিরাপদ সড়ক অর্জিত হবে না। কারণ এই আইনে সড়কে মানুষ হত্যা ও অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়ানোর স্পষ্ট দিকনির্দেশনা কিংবা কঠোর শাস্তির বিধান নেই। আন্দোলনে যুক্ত ছাত্রছাত্রী ও সাংবাদিক এবং এ বিষয়ে সরকারবিরোধী বক্তব্য দেয়ার জন্য যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব। এছাড়া, আহতদের সুচিকিৎসা এবং মিথ্যা ও নিপীড়নমূলক সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অন্যান্য বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই