তারিখ : ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

পুলিশের ভয়ে কটিয়াদীরের কাজিরচর গ্রাম পুরুষ শূণ্য

পুলিশের ভয়ে কটিয়াদীরের কাজিরচর গ্রাম পুরুষ শূণ্য
[ভালুকা ডট কম : ১৫ আগস্ট]
একটি মৃত্যুকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া ইউনিয়নের কাজিরচর গ্রামটি এখন পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। মামলা ও পুলিশের ভয়ে পুরুষরা বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। বাড়িতে মহিলা ও শিশুরা অবস্থান করছে চরম আতংক এবং উৎকন্ঠায়। সরেজমিন আজ কাজিরচর গ্রামে গিয়ে এ দৃশ্য দেখা গেছে।

এলাকাবাসী জানান- গত ৬ আগষ্ট গভীর রাতে চোর সন্দেহে গ্রামবাসীর ধাওয়া খেয়ে  নাজির আকন্দ (৩২) নামে এক যুবক পানিতে ডুবে মারা যায়। নাজির একই  গ্রামের মোঃ মন্টু আকন্দের ছেলে।ঐ গ্রামের নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসার পাশে শামসুদ্দিন তালুকদারের বড় ছেলে আলমগীর হোসেনের মুদি দোকানের তালা ভাঙ্গার শব্দ শুনে দোকানের মালিক আলমগীর  জেগে উঠে । পরে তার চিৎকারে জনতা এগিয়ে আসলে চোর সন্দেহে ধাওয়া করলে তারা দৌড়ে পালানোর সময় অন্ধকারে পরিত্যক্ত পোলট্রি খামারের পিলারে বাধাগ্রস্ত হয়ে ডোবায় পড়ে যায় নাজির আকন্দ নামে এক যুবক।  এসময় গ্রামবাসী রাকিব নামে অপরজনকে আটক করলেও  নাজিরের সন্ধান পায়নি।

এসময় প্রত্যক্ষদর্শী মার্জিয়া আক্তার (২৫) সহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই এ প্রতিবেদককে জানান, রাকিবকে আটক করার পর নাজিরের পিতা মন্টু আকন্দ ডোবার পাড় থেকে তার ছেলেকে ডাকাডাকি করেন এবং বলেন, ও বাবা তই চলে আয় তোর কিছু হবে না । তিনি আরো বলেন, আমার ছেলে চোর না ; মাদকাশক্ত।সকালে গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বৈঠকে বসলে আটক রাকিব জানায়, তার বাড়ি ভৈরব উপজেলায়। নাজিরের সাথে সে বেড়াতে এসেছে । বৈঠকে সবার উপস্থিতিতে মন্টু আকন্দের কাছে রাকিবকে বুঝিয়ে দেন।পরে সকাল ৯ টার দিকে এলাকার ল্কোজন ডোবায় নাজিরের লাশ দেখে কটিয়াদী মডেল থানায় খবর দেয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে পাঠায়।

এদিকে নাজিরের পিতা মন্টু আকন্দ বাদি হয়ে শামসুদ্দিন তালুকদারের তিন পুত্রসহ অজ্ঞাত আরো ঐ গ্রামের ৮/১০ জনের বিরুদ্ধে কটিয়াদী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। থানায় দায়েরকৃত আরজিতে মন্টু আকন্দ দাবি করেন, ঘটনার দিন রাত সাড়ে বারটার দিকে তার ছেলে সিগারেট কেনার উদ্দেশ্যে আলমগীরের মুদি দোকানে গেলে চোর সন্দেহে ওরা তিন ভাইসহ আরো ঐ গ্রামের ৮/১০ জন মিলে নাজির ও বেড়াতে আসা তার বন্ধুকে মারপিট করে এবং নাজিরকে হত্যা করে ডোবায় গুম করে রাখে ।

অপরদিকে ঘটনাস্থলের বাসিন্দারা বলছেন, বিষয়টি সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। ঐ রাতে নাজিরকে প্রহার করার কোনো ঘটনা’ই ঘটেনি । সে গ্রামবাসীর ধাওয়ায় পালাতে গিয়ে ডোবায় পড়ে মারা গেছে ।সামনে ঈদ, অথচ গ্রামটি এখন পুরুষ শূন্য। শিশু কিশোর ও মহিলারা বাড়িতে অবস্থান করলেও উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছে। সারাদেশে  ঈদকে কেন্দ্র করে আনন্দের জোয়ার বইলেও কাজিরচর গ্রামে মানুষের মুখে নেই কোনো হাসি।এ ব্যাপারে সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে জরুরি ভিত্তিতে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে মূল রহস্য বের করে সত্য প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসি।

এ বিষয়ে কটিয়াদী মডেল থানার ওসি জাকির রব্বানী বলেন, কাজিরচর গ্রামের পুরুষ পুলিশের ভয়ে এলাকাছাড়া কথাটি সত্য নয় । এলাকায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার জন্য পুলিশ নিয়মিত টহল দিচ্ছে । এ ঘটনায় কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না । মামলাটি এখন পিবিআই তদন্ত করছে ।

বার্তা প্রেরক
রুহুল আমীন রাজু
কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ ।



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই