তারিখ : ২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

রাণীনগরে রুলিবালা তৈরী করে সংসারে স্বচ্ছলতা এনেছে গৃহবধূরা

রাণীনগরে রুলিবালা তৈরী করে সংসারে স্বচ্ছলতা এনেছে গৃহবধূরা
[ভালুকা ডট কম : ১৬ নভেম্বর]
পিতল দিয়ে তৈরী রুলিবালা। আর এ রুলিবালা তৈরি করে গৃহবধু সুচরিতা সংসারে নিয়ে এসেছে স্বচ্ছলতা। গত তিন বছর আগে যেখানে সাংসারিক কাজের পাশাপাশি প্রতিবেশেীদের সাথে গল্প করে সময় পার করতেন। আর এখন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাতুড়ি ও ছোট ছোট সেনি দিয়ে পিতল থেকে তৈরী রুলিবালায় নানা ধরণের কারুকার্য ফুটাতে ব্যস্ত থাকেন। আর এর মাঝে কাজ করেন সাংসারিক। তিনি প্রতিদিন পাঁচ জোড়া রুলিবালা তৈরী করে ২শ’ টাকা মজুরি পান।

এ কাজ করে যে আয় করেন তা দিয়ে গত দুই বছর থেকে মাসে ২ হাজার টাকার মুদারাবা মাসিক কিস্তি (ডিপিএস) খুলেছেন। মেয়ে সুমাইয়া গ্রামের স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়াশুনা করাচ্ছেন। স্বামী এনামুল সরদার ‘স’ মিলে কাজ করেন। ফলে দুজনের উপার্জনে সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরেছে রনসিঙ্গার গ্রামের এ দম্পত্তির।

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম রনসিঙ্গার। এ গ্রামের বাজারে সাবেক সেনা সদস্য এমদাদুল হক গড়ে তুলেছেন রুবিবালার কারখানা। কারখানাটির নাম রেখেছেন ‘এমদাদ বালা ঘর’। এ গ্রামটি এখন কারিগর গ্রাম নামে পরিচিত পেয়েছে। এ গ্রামের প্রায় ১৫০ জন নারী রুলিবালার কাজ করেন। সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত কাজ করে সংসারে স্বচ্ছলতা নিয়ে এসেছেন দরিদ্র পরিবারের এসব গৃহবধুরা। এছাড়া উপজেলার খট্টেশ্বর, পশ্চিম বালুভরা, রাণীনগর বাজারসহ বিভিন্ন গ্রামে আরো প্রায় শতাধিক নারীরা কাজ করে থাকেন।

জানা গেছে, পিতল দিয়ে তৈরী হয় রুলিবালা। পিতলের রং এবং সোনার রং প্রায় সমান। স্বর্ণের দাম বেশি হওয়ায় সবার পক্ষে অলংকারের স্বাদ গ্রহণ করাও সম্ভব হয়না। রুলিবালাতে কারুকার্য তৈরী করে সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা হয়। ফলে পছন্দের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ক্রেতাদের। আর এ কাজ এলাকার বেকার নারীদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় এসব রুলিবালা এখন সরবরাহ করা হচ্ছে।

রনসিঙ্গার গ্রামের গৃহবধু হাসনাহেনা বলেন, রুলিবালার উপর নকশা করতে গ্রামেই ২০ দিনের একটা প্রশিক্ষণ নিই। গত চার বছর ধরে এ কাজ করছি। এখানকার প্রতিটি বাড়িতে রুলিবালা তৈরী করা হয়। আগে গল্প করে এ গ্রামের নারীরা সময় পার করলেও এখন সবাই রুলিবালা তৈরীতে ব্যস্ত। কারোই যেন অবসর নেই। প্রতিদিন প্রায় ১৫০-২০০ টাকা পারিশ্রমিক পান এ কাজ করে। এখন বাচ্চাদের নিয়ে একটু ভাল ভাবে খেয়ে পরে দিন কাটাতে পারছি।

রাণীনগর উপজেলার রুলিবালা কারখানার মালিক এমদাদুল হক বলেন, ২৩ বছর সেনাবাহিনীতে চাকুরির পর ২০১৩ সালে অবসর গ্রহন করেন। এরপর নাটোর, সৈয়দপুর ও পাবর্তীপুরসহ বেশ কয়েকটি জেলায় প্রায় ছয়মাস রুলিবালা তৈরির উপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ২০১৪ সালে স্ত্রী রুমাকে রুলিবালার কাজ শেখান। এরপর বাড়িতে ১০ জন নারী শ্রমিক দিয়ে কারখানায় কাজ শুরু করেন। সাধ্যের মধ্যে হওয়ায় সবার কাছেই পছন্দ রুলিবালা।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে এ উপজেলায় প্রায় ৩৫০ জন নারী কারিগর রুলিবালার সাথে সম্পৃক্ত। তার কারখানায় কাজ করে ১৮৫ জন নারী শ্রমিক। কাজের মান ভেদে নারী শ্রমিকদের ৮-৯ হাজার টাকা বেতন দেয়া হয়। এছাড়া প্রতি জোড়া ভেদে ৭০-৮০ টাকা করেও মজুরি দেয়া হয়। রুলিবালা বাজারে বিক্রি হয় রং ছাড়া ১৫০-১৬০ টাকা এবং রংসহ বিক্রি হয় ২৫০-৩০০ টাকা জোড়া। এসব রুলিবালা ঢাকার তাঁতিবাজার, সিলেট, বগুড়া, নাটোর ও নওগাঁ সহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। এছাড়া কুরিয়া সার্ভিসের মাধ্যমে অনেকে নিয়ে থাকেন।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

লাইফস্টাইল বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই