তারিখ : ২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকায় ফেরি করে জীবন চালায় চাঁপাইয়ের ঝন্টুরা

ভালুকায় বাইসাইকেলে ফেরি করে জীবন চালায় চাঁপাইয়ের ঝন্টুরা
[ভালুকা ডট কম : ১৫ মে]
ভালুকার বিভিন্ন গ্রামে বাইসাইকেলে করে হরেক মালের ফেরি করে জীবন জীবিকার পথ বেছে নিয়েছেন সুদুর চাঁপাই নবাবগঞ্জের ঝন্টু মিয়া ও তার বন্ধুরা।ভালুকা পৌর এলাকার ৯ নং ওয়ার্ড কাঠালী বাগড়াপাড়া আঃ করিম মিয়ার বাসার সামনে প্রতিদিন সকালে শুরু হয় ৮/১০ টি সাইকেলে ছোট ছেলে মেয়েদের খেলনা পাতি, প্লাষ্টিক ও এ্যালোমোনিয়ামের বাসন পত্র সাজানোর কাজ। মোটামোটি সাজানো হয়ে গেলে একে একে বড় রাস্তা ধরে তারা সাইকেল চালিয়ে বিভিন্ন গ্রামের উদ্দেশ্যে চলে যায় যে যার মতো।

সারাদিন এ গ্রাম ও গ্রাম সাইকেল চালিয়ে গৃহস্থ্যের বাড়ি বাড়ি ঘুরে ফেরি করে বেচাকিনি শেষে সন্ধ্যায় আবার সবাই চলে আসে নিজ আস্তানায়। আঃ করিমের টিন শেড বাসায় তারা অল্প টাকায় ভাড়া থাকেন। সোমবার সকালে এক সাথে অনেকগুলো সাইকেলে সাজানো মালামাল দেখে আপনা হতেই যেন মোটর সাইকেলের ব্রেকে পা চলে যায়।

যাত্রার জন্য তৈরী সাইকেলের হ্যান্ডেলে ধরা একজনের কাছে গিয়ে জানলাম তার নাম ঝন্টু মিয়া। বয়স অনুমান (৪৮) বললেন। রাজশাহীর সুদুর চাঁপাইয়ের শিবগঞ্জ উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের মুনসুর আলীর ছেলে জন্টু মিয়া জানান নিজের জমি জমা না থাকায় স্ত্রী সন্তানদের মুখে দু’মুঠো ভাত আর সংসার খরচ চালাতে আপন জনদের ফেলে বিদেশের মাটিতে ফেরি করে বেরান। তিনি প্রায় ৯/১০ বছর যাবৎ ভালুকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে বন্ধুদের সাথে সাইকেলে ফেরিওয়ালার ব্যবসা করে জীবন চালাচ্ছেন। কিছুদিন পর পর স্ত্রী সন্তানদের সাথে দেখা করতে বাড়ীতে যান। দু’একদিন থেকে আবার চলে আসেন। ফেরি করে প্রতিদিন খরচ বাদে ৪/৫ শ টাকা লাভ থাকে। মাস শেষে স্ত্রী সন্তানের বরণ পোষনের খরচ বাবদ ৮/১০ হাজার টাকা পাঠাতে পারেন। সামান্য পুঁিজ নিয়ে তারা ১০ জনের মতো লোক ঢাকার চক বাজার হতে পাইকারী মাল এনে ভালুকার গ্রামাঞ্চলে ফেরি করে বিক্রি করে থাকেন। তাদের প্রত্যেকের একটি করে নিজস্ব বাইসাইকেল বাহন থাকায় ও গ্রামে গ্রামে ফেরি করে মাল বিক্রি করায় কোন খরচ হয়না। ফলে লাভের বেশীর ভাগই সঞ্চয় থাকে।

ঝন্টু মিয়ার সংসারে স্ত্রী ও চার ছেলে মেয়ে রয়েছে। বড় মেয়ে নয়নের (২৫) বিয়ে দিয়েছেন, মেঝো মেয়ে ইতির বয়স (১৬) ছেলে রাজু (১০) চথুর্ত শ্রেণীতে পরে সবার ছোট রাসেল (৬) মায়ের কোলে। এলাকায় কোন কাজ কাম না থাকায় চাঁপাই হতে তারা একটি করে বাই সাইকেল আর সামান্য কিছু টাকা পুঁজি নিয়ে ভালুকায় এসে দীর্ঘদিন ধরে হরেক মালের ফেরি করে স্ত্রী সন্তানের অন্ন বস্ত্রের সংস্থান করছেন। রমজানের শেষে  ঈদুল ফিতরের জন্য স্ত্রী সন্তানের সামান্য কাপর চোপর আর সেমাই চিনি কিনে বাড়ী যাওয়ার আশায় প্রতিদিন গ্রামে গ্রামে ফেরি করে বেড়ান।

তার সাথে চাঁপাইয়ের আরও রয়েছে বাবুল মিয়া, খাইরুল ইসলাম,গুদু মিয়া, মানিক সহ ১০ জনের মত ফেরিওয়ালা। সৎ পথে পরিশ্রমের দ্বারা অর্থ উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহের লক্ষে স্ত্রী সন্তানকে দুরে রেখে তারা বিদেশ বিভূঁইয়ে পরে আছেন, এতেও তারা নিজেদেরকে অনেক সুখী ও স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। ভালুকায় তারা নির্ভিগ্নে ব্যবসা করে আসছেন কখনো তাদের কোন ক্ষতি কিংবা কারো সাথে লেনদেনের সমস্যা হয়নি। গ্রামের সহজ সরল মানুষ বিশ্বাসের সাথে তাদের কাছ থেকে দোকান হাট বাজারের চাইতে কম দামে জিনিষ কিনতে পেরে খুশি হয় বলে তারাও উৎসাহিত বোধ করেন।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই