তারিখ : ১৯ মার্চ ২০২৪, মঙ্গলবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকায় ব্যবসায়ী,পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় এসপি প্রত্যাহার

ভালুকায় ব্যবসায়ী ও পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় শিল্প পুলিশের এসপি প্রত্যাহার
[ভালুকা ডট কম : ২৩ মে]
মোবাইলে ফ্ল্যাক্সিলোডের টাকা না দেয়াকে কেন্দ্র করে ভালুকা উপজেলায় শিল্প পুলিশের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় বুধবার রাতে ভালুকা জোনের শিল্প পুলিশের এসপি সোয়েব আহম্মেদ কে খুলনা জোনের শিল্প পুলিশে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিল্প পুলিশ ও ময়মনসিংহ রেঞ্জ পুলিশের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

মোবাইলে ফ্ল্যাক্সিলোডের টাকা না দেয়াকে কেন্দ্র করে সোমবার সন্ধ্যায় সীডস্টোর বাজারে ব্যবসায়ীদের সাথে  ভালুকা জোনের শিল্প পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় ব্যবসায়ীরা সাড়ে তিন ঘন্টা মহা সড়ক অবরোধ করে রাখে। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে পুলিশ অন্তত ৩০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। খরব পেয়ে ঘটনাস্থলে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার,ভালুকা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান,ভালুকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভালুকা মডেল থানা পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। পুলিশের মহা পরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারী ময়মনসিংহের পুলিশ সুপারের মোবাইল ফোনে দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধকারীরা অবরোধ তুলে নেয়।

সিডস্টোর বাজারের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, শিল্প পুলিশের সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে হোটেলে খাবার খেয়ে বিল দেন না। সড়কে গাড়িতে চাঁদাবাজি করেন। এত দিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ থেকে এই ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তি ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেন ব্যবসায়ীরা। এ ঘটনায় শিল্প পুলিশ ও ময়মনসিংহ রেঞ্জ পুলিশের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

ময়মনসিংহ রেঞ্জ পুলিশের পক্ষ থেকে ময়মনসিংহ জেলার অতিরিক্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) হুমায়ুন কবীরকে প্রধান করে পুলিশ সুপার (ক্রাইম)শাহ নেওয়াজী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হায়দার আলী, ডিআই ওয়ান পুলিশ পরিদর্শক মোখলেছুর রহমান ও ভালুকা মডেল থানার (ওসি) মোহাম্মদ মাইন উদ্দিনকে সদস্য করে ৫সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অপর দিকে শিল্প পুলিশের পক্ষ থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যার হলেন,শিল্প পুলিশের ডিআইজি আওলাদ হোসেন, শিল্প পুলিশের হেড কোয়ার্টের পুলিশ সুপার আব্দুর রউফ,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরহাদ হোসেন। ময়মনসিংহ রেঞ্জ পুলিশ ও শিল্প পুলিশের পক্ষ থেকে গঠিত দুটি তদন্ত কমিটির সদস্যরা মঙ্গল ও বুধবার সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরির্দশণ করে স্থানীয় ব্যবসায়ী,সাধারণ মানুষ ও পুলিশ সদস্যের সাথে কথা বলেন।

এই ঘটনায় বুধবার রাতে শিল্প পুলিশের ভালুকা জোনের পুলিশ সুপার সোয়েব আহম্মেদকে শিল্প পুলিশের খুলনা জোনে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভালুকা শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ নুর ন্নবী।

সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ নুর ন্নবী জানান,ভালুকা শিল্প পুলিশের এসপি অফিসে অফিসার সহ মোট দুইশত বাষট্রিজন সদস্য রয়েছে। দুটি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সম্পর্কে অমি কিছুই জানি না। মনে হচ্ছে অত্র অফিসের সবার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে। আমরা সবাই সঙ্কিত।

সীডস্টোর বাজার ব্যবসায়ী ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সীডস্টোর বাজারের পূর্ব পাশে ভালুকা শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপারের কার্যালয়। ইফতারের আগ মূহুর্তে শিল্প পুলিশের দুই সদস্য  উপজেলার সীডস্টোর বাজারে ফ্লেক্সি লোডের দোকান থেকে মোবাইলে টাকা রিচার্জ করতে যায়। রিচার্জ করার পর টাকা না দিয়ে ওই পুলিশ সদস্য চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় দোকানের মালিকের সাথে ওই দুই পুলিশের কথা কাটাকাটি থেকে এক পর্যায়ে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। পরে এই বিষয়টি ভালুকা শিল্প পুলিশ সুপারের কার্যালয়সহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের জানান। পরে শিল্প পুলিশের হাতে লাঠি শোঠা নিয়ে কয়েকটি দল বাজারে গিয়ে দোকান ঘর সহ আরও অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাংচুর করে ইফতার সামগ্রী ফেলে দেয়। পুলিশের এ তন্ডবের সময় লুট পাটের ঘটনাও ঘটে। বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন ভাংচুরের পাশাপাশি তাদের দোকানে লুট-পাট করা হয়েছে। ইফতার ফেলে দেয়া দোকানে লুটপাট ভাংচুরের ঘটনায় ব্যবাসায়ী ও আশা-পাশের লোকজন একত্রিত হয়ে পুলিশের উপর চড়াও হন। এতে ব্যবসায়ীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এ সময়  একটি হায়েজ ভাংচুর ও পুলিশের মটর সাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এতে তিন পুলিশসহ অন্তত অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। মামলার ভয়ে আহতরা বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর পুলিশের অফিসার ভালুকা মডেল থানার এস.আই কাজল হোসেন,শিল্প পুলিশের এএসআই গৌতম চন্দ্র ও এএসআই নাজিম। ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়।

খবর পেয়ে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক ড.সুবাষ চন্দ্র বিশ্বাস,জেলাপুলিশ সুপার আবিদ হোসেন,ভালুকা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ও ভালুকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ কামাল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ক্ষোব্ধ জন সাধারণের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই