তারিখ : ১৯ মার্চ ২০২৪, মঙ্গলবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকায় ধনুষ্টংকারের মতো মরণব্যাধিতে আক্রান্ত নবজাতক

ভালুকায় ধনুষ্টংকারের মতো মরণব্যাধিতে আক্রান্ত নবজাতক
[ভালুকা ডট কম : ২২ আগস্ট]
ভাবতে খুব অবাক লাগে। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের  এতো উৎকর্ষতার যুগেও ধনুষ্টংকারের মতো ভয়াবহ মরণব্যাধিতে আক্রান্ত এক নবজাতক। ভালুকা উপজেলার শিল্পাঞ্চল খ্যাত হবিরবাড়ী ইউনিয়নের সিডস্টোর এলাকায় বসবাস করেন এক দম্পতি। স্বামীর বাড়ি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলা গোবড়াকুড়ার মনোহারি ব্যবসায়ী এবং স্ত্রী ভালুকার একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে চাকুরী করেন।

জানাযায়, ২১শে আগস্ট রোজ বুধবার বিকেলে ভালুকা মাস্টার হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ মুশফিকুর রহমানের নিকট উক্ত দম্পতি তাদের ছয়দিন বয়সী নবজাতকটিকে নিয়ে আসেন। শিশুর মা-বাবা বলেন তাঁদের মেয়ে শিশুটি জন্মের তিন দিন পরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। বুকের দুধ খাওয়া বন্ধ করে দেয়। মুখ ও চোয়াল শক্ত হয়ে যায়। জোরে কাঁদতে পারে না। শরীর শক্ত হয়ে যায়। একটু পর পর যেকোন উত্তেজনা থেকে খিঁচুনি হয়। কখনো কখনো শরীর পেছনের দিকে ধনুকের মত বাঁকা হয়ে যায়। শিশু বিশেষজ্ঞ এসব উপসর্গ ও লক্ষণগুলো দেখে শিশুটির ধনুষ্টংকার হয়েছে বলে নিশ্চিত হন। নবজাতকের এই ধনুষ্টংকারের বিষয়ে সিভিল সার্জন অফিসের সার্ভিলেন্স মেডিকেল অফিসারকে রিপোর্ট করা হয়। পরবর্তীতে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য ধনুষ্টংকার আক্রান্ত শিশুটিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক বিভাগে রেফার্ড করা হয়।

ডাঃ মুশফিকুর রহমান বলেন,ধনুষ্টংকার প্রতিরোধে ১৫-৪৯ বছর বয়সের সন্তান ধারণক্ষম সকল মহিলাকে সময়সূচি অনুযায়ী পাঁচ ডোজ টিটি টিকা দিয়ে নবজাতক ও মায়ের ধনুষ্টংকার প্রতিরোধ করা হয়। আক্রান্ত শিশুটির সদ্যপ্রসূতি মা ধনুষ্টংকারের সেসব টিকাগুলো আগে কখনো নেননি। কিশোরী বয়সের ধনুষ্টংকারের পাঁচটি টিটি টিকার বিকল্প হিসাবে গর্ভধারণকালে যে দুটি টিটি টিকা নিতে হয় তারও মাত্র প্রথমটি তিনি নিয়েছিলেন কিন্তু দ্বিতীয় টিটি টিকার ডোজটি নেননি। কিশোরী বয়সে পাঁচটি (টিকা না নেয়া)বা গর্ভকালীন সময়ে টিটি টিকার অসম্পূর্ণ ডোজ নেওয়ার কারণে নবজাত শিশুটি ধনুষ্টংকারে আক্রান্ত হয়। নবজাতকের ধনুষ্টংকার শিশুমৃত্যুর একটি অন্যতম প্রধান কারন। এই রোগের চিকিৎসা করা অত্যন্ত জটিল ও কষ্টসাধ্য। চিকিৎসা না করলে প্রায় শতভাগ মৃত্যুহার। আর চিকিৎসা করলেও এই রোগে আক্রান্ত অনেক নবজাতকই মারা যায়।

ডাঃ মুশফিকুর রহমান আরো বলেন,টিটেনাস (ধনুষ্টংকার) থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য টিটি টিকা নিতে হয়। হবু মায়েদের টিটি টিকা নিতে হবে যেন মা ও বাচ্চার ধনুষ্টঙ্কার না হয়। যদি আগে কোন টিকা নেওয়া না থাকে, তবে সবগুলোই দিতে হবে। শিশুদের যে টিকা দেয়া হয় তাতে ধনুষ্টঙ্কার প্রতিরোধী টিকা থাকে। কিন্তু এই টিকা নবজাতককে সুরক্ষা দিতে পারে না বিধায় সম্প্রসারিত টিকা দান কর্মসূচির আওতায় আমাদের দেশে সন্তান জন্মদানে সক্ষম নারী—যাদের বয়স ১৫ থকে ৪৯ বছর, তাদের জন্য ধনুষ্টঙ্কার ও রুবেলার বিরুদ্ধে টিটি ও এমআর টিকা দেয়া হয়। টিটেনাসের ৫টি টিকার ডোজ সম্পন্ন থাকলে আর গর্ভাবস্থায় এই টিকা নেয়ার প্রয়োজন নেই। আর কেউ যদি কোনো টিকা না নিয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় ৫ মাসের পর ১ মাসের ব্যবধানে পর পর দুটি টিটি টিকা দিয়ে নিতে হবে। আর যদি পূর্বে দুই ডোজ টিকা নেয়া থাকে তাহলে প্রতি গর্ভাবস্থায় মাত্র একটি বুষ্টার ডোজ নিতে হবে।

ডাঃ মুশফিকুর রহমান জানান, মাকে দেয়া এই টিকা মা ও বাচ্চা উভয়েরই ধনুষ্টংকার রোগের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলে। প্রসবকালে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, পরিচ্ছন্নতায় অসতর্কতা এবং অপরিষ্কার ছুরি, ব্লেড বা কাঁচি ব্যবহার করলে (বাচ্চার নাভী কাটার সময়) অথবা নাভীর গোড়ায় নোংরা কিছু লাগিয়ে দিলে নবজাতকের ধনুষ্টংকার রোগ হয়। ধনুষ্টংকারের টিটি টিকা সরকারি হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ, ফার্মেসী ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারেও পাওয়া যায়। #



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই