তারিখ : ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ময়মনসিংহ শহড়ে খোলা আকাশের নীচে বস্তিবাসী

পলির ঘরে যাদের জীবন
ময়মনসিংহ শহড়ে খোলা আকাশের নীচে বস্তিবাসী
[ভালুকা ডট কম : ২১ ডিসেম্বর]
চারিদিকে হালকা কুয়শা কনকনে শীতে রেল লাইন ধরে হেটে চলা অনেক পথচারির সাথে আমিও একজন। হটাৎ নজর কাড়ে ময়মনসিংহ জং সংলগ্ন রেল লাইনের ভাঙ্গা বস্তির ভিটি আকড়ে থাকা চৌকিতে বসা দুটি শিশুর উপর। কে কি ভাবলো সে দিক চিন্তা না করেই এগিয়ে যাই তাদের কাছে। ১২ বছরের মুন্নির সাথে বসা ২ বছরের ফুট ফুটে শিশু সুমাইয়া।

সুমাইয়া জানায় তারা এ রেল বস্তিতে থাকে অনেকদিন। শিশু দুটির ছবি তুলতে দেখে বস্তির অন্যান্যরা এগিয়ে আসে। এখানে সেখানে খোলা জায়গায় উনুন জ্বালিয়ে কেউ কেউ ভাত রান্না করছিলো। একজন জানান তার নাম আশরাফ তিনি জানান অনুমান ১৫/২০ দিন আগে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তাদের ছোট ছোট পলিথিনের ঘরগুলো ভেঙ্গে দিয়েছেন। কিন্ত কোথাও যাওয়ার জায়গা না থাকায় পুলিশের তাড়া খেয়েও এখানেই পরে রয়েছেন খোলা আকাশের নীচে।

অশিতিপর পাঁকা চুল মাথায় বৃদ্ধা জরিনা খাতুন জানান “বাবা গোলা গুলির বছরের পর থাইক্কা(মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের) এই রেল লাইনের ধারত কতকান রপডের কাগজ দ্যেয়া ঘর বানাইয়া পইরা রইছি, হেদিনকা পুলিশ আইয়্যা ভাইঙ্গা দিছে, আংগরতো যাওনের জায়গা নাই কই যাইয়াম ?” এরকম বেগম (৪৪) আঃ হালিম (৪৫) সুফিয়া (৪৮) রহিমা (৫০)সহ অনেকেই জানান প্রায় ২০ দিন যাবৎ তারা ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের নিয়ে প্রচন্ড শীতের মাঝেও খোলা আকাশের নীচে দিবা রাত্রি পার করছেন। তাদের বাসন পত্র, কাপড় চোপর বিছানাপত্র সবই এখন খোলা আকাশের নীচে। তাদের আশ্রয় পাওয়ার মত কোন জায়গা না থাকায় এখানেই পরে রয়েছেন। তাদের পর্যাপ্ত শীত বস্ত্র নাকায় সবাই শীতে কষ্ট করছেন।অনেকেই টোকাই হিসেবে রাস্তায় পরে থাকা জিনিষপত্র কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। আবার কেউ রিক্সা ভ্যান চালিয়ে শুধুই বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখেন মাত্র। মাঝে মাঝে হটাৎ করে পুলিশ আসলে তাড়া খেয়ে জিনিষপত্র নিয়ে দৌড়াতে হয় তাদের।

আশরাফ আলী জাতীয় পরিচয় পত্র বের করে বললেন বেশ কয়েকটি নির্বাচনে তারা পৌর ও জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ১৬ নং ওয়ার্ডের নাটকঘর লেন ভোট কেন্দ্রে। একই কথা জানান সুফিয়া সহ অন্যান্যরা। তারা রেল বস্তিতে থাকলেও তাদের নাগরিক অধিকার আছে কিন্তু মাথা গুজার ঠাই নেই। সরকারী জমিতে তাদের থাকার কোন আইনগত বৈধতা নেই জেনেও তারা ওই ভাঙ্গা ভিটি আকড়ে পরে আছেন। তাদের এ দুরবস্থা যান্ত্রিক শহড়ের মানুষদের কাররই নজরে আসেনি। তারা কোন মানবাধিকার কর্মী কিংবা সমাজকর্মী অথবা কোন সামাজিক সাহায্য সংগঠন কাউকেই চিনেন না। সারাদিন কাজকর্ম করে রাতে একটু মাথা গুজার ঠাই ছারা আর কিছু তাদের চাওয়ার নেই। জরিনা সুফিয়ারা পৌরপিতার কাছে দাবী জানিয়েছেন তাদের ছোট শিশু সুমাইয়া মুন্নিদের নিরাপদ জীবনের জন্য একটু মাথা গুজার ঠাই করে দিবেন। পুলিশের দৌড়ানী হতে একটু নিস্তার চান তারা।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অন্যান্য বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই