তারিখ : ১৯ মার্চ ২০২৪, মঙ্গলবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

মধু মাসের মধু ফল, দেহে বাড়ায় বল

মধু মাসের মধু ফল, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেহে বাড়ায় বল
[ভালুকা ডট কম : ২৮ মে]
সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা অপূর্ব  সৌন্দর্যের আধার তার সাথে রয়েছে ছায়া-মায়া, ফুল, ফসল ও ফলের সমাহার। তাইতো খনার বচনে বলা আছে, “বারো মাসে বারো ফল, না খেলে যায় রসাতল”। উর্বর ভূমির এ বাংলাদেশে বিভিন্ন ঋতুতে প্রচুর ফল উৎপন্ন হয়ে থাকে। ঋতুচক্রে আসে গ্রীষ্ম, মূলত গ্রীষ্ম-বর্ষায় ফলের সমাহার থাকে দেখার মতো। এসময়ের অধিকাংশ ফল মিষ্টি, রসালো আর সুগ্রাণ যুক্ত। এজন্যই জৈষ্ঠ্য মাসকে ‘মধুমাস’ নামে অভিহিত করা হয়। শুধু স্বাদে গন্ধেই নয়,এসব ফলের রয়েছে পর্যাপ্ত পুষ্টিগুণ যা বিভিন্ন রোগব্যাধি নিরাময় করে এবং মানবদেহের ইমিউনিটি বাড়ায়। মানুষের দেহ মনকে সতেজ রাখে ও মনোবল বাড়াতে সহায়তা করে।

যেমন-
কাঁঠালঃ জাতীয় ফল কাঁঠালে রয়েছে ক্যালসিয়াম,সোডিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক, রিবোফ্লাভিন, থায়ামিন এবং পর্যাপ্ত শর্করা, আমিষ, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। এটি সর্দি-কাশির সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। রাতকানা, আলসার, ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ এবং বার্ধক্য প্রতিরোধ করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, ক্ষতিকর ফ্রি রেডিক্যাল থেকে রক্ষা করে। গর্ভবতী এবং দুগ্ধদানকারী মায়েদের জন্য খুব উপকারী।

ডেউয়াঃ এটি একটি অপ্রচলিত টক-মিষ্টি ফল। এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, প্রোটিন ও ভিটামিন এ, বি১,বি২, সি এবং খনিজ লবণ। এটি সাধারণ সর্দি-কাশি ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। ত্বক, চুল,নখ, দাঁত ও মাড়ির বিভিন্ন রোগপ্রতিরোধ করে। যকৃত ভাল রাখে, হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

আমঃ ফলের রাজা আম, সকলের খুব প্রিয়। রসালো এ ফলে রয়েছে ফলেট, রিবোফ্লাভিন, থায়ামিন, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন, বিটাক্যারোটিন ও ভিটামিন এ, বি, সি, কে।এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে, হার্টের সমস্যায় ও ক্যান্সার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। ত্বক ভালো রাখে, মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে।

জামঃ রসালো ফল কালোজাম  অত্যন্ত উপকারী ও রোগপ্রতিরোধী। এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন ও  ভিটামিন এ,বি১,বি৬, থায়ামিন, নিয়াসিন, এবং ভিটামিন সি, খনিজ উপাদান। এটি জরায়ু, ডিম্বাশয়, ও মলদ্বারের ক্যান্সার প্রতিরোধক। হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়, শারীরিক ও মানসিক অবসাদ দূর করে। রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।

লিচুঃ জনপ্রিয় ফল লিচুতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি,বি১,শ্বেতসার, খনিজ ও অল্প পরিমাণ আয়রন। এটি ত্বক ভালো রাখে,চর্ম রোগ নিরাময় করে, দেহ গঠন ও রোগপ্রতিরোধ ব্যাবস্থায় সহায়তা করে।

বাঙ্গি: দেশি ফল বাঙ্গি পুষ্টি সমৃদ্ধ। এতে আছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যারোটিনয়েড,ফাইবার ও ভিটামিন-এ, বি, সি এবং ফলিক এসিড।এটি দ্রুত ক্ষত সারাতে, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে, দেহের ওজন কমাতে সহায়তা করে। নিদ্রাহীনতা,ক্ষুধামান্দ্য, হাড়ের ভঙ্গুরতা প্রতিরোধ করে। রক্ত উৎপাদন ও হজমশক্তি বাড়ায়।

তরমুজঃ পর্যাপ্ত পানি আর পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ফল তরমুজে রয়েছে সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, রিবোফ্লাভিন, থায়ামিন, আয়রন, ক্যারোটিনয়েড ও ভিটামিন-এ,বি,সি এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর ভালো উৎস, পাকস্থলী, ফুসফুস, স্তন, প্রোস্টেট এবং জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। উচ্চ রক্তচাপ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। চোখ ও ত্বক ভালো রাখে।

আতাঃ মিষ্টি স্বাদের দেশি ফল। এতে রয়েছে সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, প্রোটিন, অ্যান্টঅক্সিডেন্ট, ও ভিটামিন এ,সি প্রভৃতি।এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, রক্তশূন্যতা দূর করে। হাড় মজবুত করে, দৃষ্টিশক্তি ও হজমশক্তি বাড়ায়। ক্যান্সার ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

পেয়ারাঃ ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ এ ফলে রয়েছে ফলিক এসিড, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, নিয়াসিন, থায়ামিন, প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট। এছাড়াও ভিটামিন-এ, বি-কমপ্লেক্স ও খনিজ উপাদান থাকে। এটি ক্যান্সার ও থাইরয়েড সমস্যায় প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। স্তন ক্যান্সারে প্রতিরোধক ভূমিকা রাখে। দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়, পাকস্থলী ভালো রাখে। দাঁত, মাড়ি ও হাড়ের গঠনে ভূমিকা রাখে।

ফল খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই পরিমাণ মতো খেতে হবে। পরিমাণের অতিরিক্ত খাওয়া ভালো না। প্রত্যেক ফলেই রয়েছে ঔষধি গুণ। নিয়মিত ফল খাওয়ার অভ্যাসে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। তাই সুস্থ সবল জীবন যাপনের কৌশল  হিসেবে সুষম খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি পরিমাণমতো ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলার বিকল্প নেই।ফলদ গাছ থেকে যেমন উপকারী ফল পাওয়া যায় তেমনি কাঠ, ছায়া ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার প্রত্যাশা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। চলুন বেশি করে দেশি ফলের গাছ লাগাই, ফল পাই, ফল খাই, দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াই।

লেখক/বার্তা প্রেরক
জাহাঙ্গীর আলম তরফদার
প্রভাষক, উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ
সরকারি এম এম আলী কলেজ, টাঙ্গাইল।
(তথ্য সূত্রঃ ইন্টারনেট, এআইএস)



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অন্যান্য বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই