তারিখ : ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকায় খাদ্যের অভাবে বিলুপ্ত হচ্ছে বনের পশু পাখি

ভালুকায় খাদ্যের অভাবে বিলুপ্ত হচ্ছে বনের পশু পাখি
[ভালুকা ডট কম : ০৫ ডিসেম্বর]
ভালুকায় অজত্ন অবেহলা, খাদ্যের অভাব ও মনুষ্যসৃষ্ট জটিলতার কারনে প্রকৃতি বান্ধব পশুপাখি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রকৃতির আবাহমান কালের রুপসৌন্দর্য এখন বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছে। নির্বিচারে বনজ ও ফলদবৃক্ষ কর্তন, ফসলী ও জলাভূমি ভরাট করে অপরিকল্পিত শিল্প কারখানা নির্মাণ, প্লাবনভূমি ও মুক্ত জলাশয় গুলি পুঁজিবাদীদের দখলে নিয়ে ব্যাক্তিকেন্দ্রিক মৎস্যচাষ করা ইত্যাদি কারনে বহু প্রজাতির পশুপাখি সম্পুর্ণ বিলুপ্ত হয়ে গেছে।উল্লেখিত বিষয় গুলিই ছিলো পশু পাখির আবাস স্থল ও খাদ্যের উৎস।

সম্প্রতি হবিরবাড়ী বনে খাদ্যাভাবে বানর দলের দুরাবস্থা দেখে স্থানীয় শিল্পপতি হাজী শহিদুল ইসলাম দয়াপরবশ হয়ে তার লোকজনের মাধ্যমে দু’একদিন পর পর বন্য বানরগুলোকে খাবার হিসেবে কলা সরবরাহ করছেন। নির্দিষ্ট জায়গায় কলা নিয়ে গেলে শত শত ছোটবড় বানরের পাল জমায়েত হয়ে কলা খায়। তিনি জানান হবিরবাড়ী গ্রামের বাড়ী থেকে আসার সময় একদিন দেখতেপান বনের মধ্যে ছোটবড় অনেক বানর খাদ্যাভাবে কাহিল অবস্থায় খাবারে জন্য ছোটাছুটি করছে, এদের বেশির ভাগ রোগা হয়ে গেছে। তিনি নিজ উদ্যোগে আরৎ থেকে কলা কিনে তার লোকজনদের সাহায্যে বানরের দলে খাবার পরিবেশন করছেন। এলাকাবাসী জানায় ওই বনে শত শত বানর এখনও বস বাস করে কিন্ত বন এলাকায় কোন খাদ্য না পেয়ে এরা দলবেঁধে কৃষকের ফসল নষ্ট করে।

এলাকার প্রবীন লোকেরা জানান খাল বিল নদীনালা , ফলফলাদি ও বনজ বৃক্ষের আচ্ছাদনে সমৃদ্ধ ভালুকায় বহু প্রজাতির পশু পাখি সব সময় চোখে পরতো। মেছুভাগ, বনো শুয়ার, সজারু, বন বিড়াল, খেকশিয়াল, বাগডাসা, খরগোশ, কাঠবিড়ালী, বেজি, ঘুইসাপ, মুখপুড়া হনুমান, বানর ইত্যাদিতে ভরপুর ছিল ঝাড় জংলা গাছপালা। অথচ মনুষ্যসৃষ্ট নানা জটিলতায় আজ হারিয়ে গেছে এসব প্রাণীর বেশীর ভাগই। কড়ই বিচি, বটগুটা, ডেওয়া, ডেফল, কাওয়াঝিংগা এসব বানর হুনুমান ও পোকপাখালীর খাদ্য ছিল। অথচ এসব গাছ এখন সচরাচর চোখে পরেনা।

গাছে গাছে ভূতুম পেঁচা,শকুন,লালচিল, গাংচিল, ঈগল, হলদেপাখি, বউকথাকও, কাঠকুড়ালী, বানাশপাখী, বাদুর, ইষ্টিকুটুম, টিক্কা ময়না, টিয়া, বাওই, বুলবুলি,ঘুঘু, হরিয়ালী,আর খালে বিলে সাদা বক, কানিবক, সারস,ডাহুক, কালেম, পানকৌড়ি, মাছরাঙ্গা, হটটিটি, বলাকা ইত্যাদি আরও কত নাম না জানা পাখি। কিছু পাখি খালবিলের পোকা মাকর ছোটবড় মাছ খেয়ে বাঁচতো আর কিছু গাছের ফল মুল খাদ্য হিসেবে গ্রহন করে বেঁচে থাকতো। বর্তমানে জল জঙ্গল কোথাও পশুপাখির নিরাপদ আবাস স্থল ও খাদ্যের পর্যাপ্ত যোগান না থাকায় ক্রমশ এরা প্রকৃতি হতে হারিয়ে যাচ্ছে। সন্ধায় বটবৃক্ষে বাদুরের চিঁচিমিচি, বাঁশবনে শালিকের কিচির মিচির কলরব,শিয়ালের হাঁক সূর্যদয়ে কাকের ডাক যেন এখন ঠাকুমার ঝুলির রুপকথার গল্প। মৎস্য খামারে একটা দুটা মাছ খায় বলে জালপেতে ফাঁদ পেতে নির্বিচারে পাখি মারা হচ্ছে। অথচ এসব বিষয়ে কোন নজরদারি নেই। বনের পশুপাখি সংরক্ষনে স্থানীয় বন বিভাগের কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নেই বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

এ ছাড়াও অপরিকল্পিত ভাবে শিল্প কারখানার বর্জ মিশ্রিত কালো পানি খাল বিল ও নদী নালায় ফেলার কারনে পশু পাখীর খাদ্য পোকা মাকর মাছ সহ জলজ প্রাণী বিনষ্ট হওয়ায় পশু পাখীর ক্ষতি সাধন হচ্ছে। মুক্ত জলাশয় গুলি পুনরায় অবমুক্ত করন ও বন সংরক্ষনের মাধ্যমে গ্রাম বাংলার ঐতিয্য মানুষের পরিবেশ সুবান্ধব পশু পাখির কলরব ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে এলাকার সচেতন মহল মনে করেন।

#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই