তারিখ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকায় মাদরাসার সভাপতি ও সুপারের বিরুদ্ধে অভিযোগ

ভালুকায় মাদরাসার সভাপতি ও সুপারের বিরুদ্ধে কমিটি গঠন নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ
[ভালুকা ডট কম : ০৩ মার্চ]
ভালুকা উপজেলার কাতলামারি ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার কমিটি গঠন নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। অত্যন্ত গোপনিতার সাথে মাদরাসার সুপার ও এডক কমিটির সভাপতির যোগসাজশে ২০২০-২১ইং সালের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের অভিযোগ ওঠেছে। কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় অনিয়ম করায় মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগে জানাযায়,২০১৪ সালে বর্তমান এডক কমিটির সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন মজনু তৎকালীন এমপির সুপারিশ নিয়ে কাতলামারী ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সভাপতি হন। সভাপতি হয়েই সহকারী সুপার মাওলানা মাজেদুল হককে বাদ দিয়ে, নীতিমালা বহির্ভূতভাবে প্রভাব খাটিয়ে তাঁর বাবা মাদরাসার সহকারী মৌলভী সাইফুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসাবে নিয়োগ দেন। বাবাকে ভারপ্রাপ্ত সুপার বানিয়ে পিতা-পুত্র মিলে সুপারসহ আরও দুই পদে তিন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। সভাপতি তাঁর মনপুত মোফাজ্জল হককে সুপার নিয়োগ দিয়ে সভাপতি ও সুপার মিলে প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম ও দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছে। ওই ঘটনায়  তারিখ ০৯.১২.২০১৪ইং যুগান্তরে “পিতা পূত্রের নিয়োগ বাণিজ্য” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। নিয়োগ বাণিজ্য ও প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের বিরুদ্ধে মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের পক্ষ থেকে  বাহারুল ইসলাম ফকির বাদী  হয়ে ময়মনসিংহ সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা করেন যার নং-১৭।

নিয়ম অনুসারে মাদরাসা পরিচালনা কমিটির নির্বাচন করার জন্যে তফসিল ঘোষণার আগে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর অভিভাকদের অন্তর্ভূক্তির মাধ্যমে খসড়া ভোটার তালিকা প্রস্তুত এবং সংশোধনির জন্যে তা নোটিশের মাধ্যমে ক্লাশে ক্লাশে ও এককপি নোটিশ বোর্ডে টানিয়ে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে তাদের অভিভাবকদের অবহিত করার কথা। তা ছাড়া, চুড়ান্ত ভোটার তালিকা তৈরির পর নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হলে একই ভাবে তা শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে তাদের অভিভাবকদের জানানোর কথা রয়েছে। প্রয়োজনে এলাকায় মাইকিং করার বিধান রয়েছে। কিন্তু ভালুকা উপজেলার কাতলামারি ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার পরিচালনা কমিটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে তার কোনটিই মানা হয়নি। কারণ মাদরাসা সুপার মাওলানা মোফাজ্জল হক তার পছন্দের মোয়াজ্জেম হোসেন মজনুকে সভাপতি করার জন্যে। কমিটি গঠন সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানের কর্মরত শিক্ষক কর্মচারী,ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী কিছুই জানেন না। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী মধ্যমিক প্রতিষ্ঠানে আরো ৩জন কর্মচারী নিয়োগ দিতে হবে। সেই নিয়োগ বাণিজ্যের জন্য সুপার তার পছন্দের সভাপতি নির্বাচন করেছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। মাদরাসার সুপার জানান,গত ২৪ফেব্রুয়ারী মাদরাসার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হয়ে গেছে।

গত ২৫ফেব্রুয়ারী সরেজমিনে গিয়ে সুপারকে মাদরাসায় উপস্থিত পাওয়া যায়নি। কমিটি গঠন নিয়ে কথা হয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক,কর্মচারী,ছাত্র-ছাত্রী,অভিভাবক ও এলাকাবাসীর সাথে। প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষকই কমিটি গঠন ব্যাপারে কিছুই জানেন না। ২৫তারিখ একটি নোটিশ খাতায় শিক্ষকদের স্বাক্ষর নেন সুপার। প্রতিষ্ঠানের টিআরকে নির্বাচিত হয়েছেন প্রশ্ন করা হলে উপস্থিত শিক্ষকরা জানান  কমিটি যে গঠন হচ্ছে সেটাই তো আমরা জানি না।

মাদরাসার ১০মশ্রেনীর শিক্ষার্থী সোহানা ও লিমা জানান, অভিভাবকদের ভোটার তালিকা প্রণয়নের কোনো নোটিশ তারা পাননি। কমিটি গঠন সম্পর্কে তারা কিছুই জানে না। ছাত্র অভিভাবক মফিজ উদ্দিন ফকির জানান, আমার ছেলে মাদরাসায় ১০ম শ্রেণির ছাত্র। গোপনে মাদরাসার নির্বাচন সম্পন্নের বিষয়টি জানতে পেড়ে তিনি প্রতিকার দাবি করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।

প্রতিষ্ঠাতার ছেলে অভিযোগকারী কামরুল ইসলাম জানান, মজনু এ প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হওয়ার পর সুপার ও তিনি মিলে প্রতিষ্ঠানটি লুটপাট করে খাচ্ছেন।মাদরাসার সহকারী শিক্ষক সাইদুর রহমান ও কামাল হোসেন জানান, কমিটি গঠন ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না। টিআর নির্বাচন ও অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোটার তালিকা প্রনয়ণের নোটিশ দিবো কি ভাবে।

সুপার মাওলানা মোফাজ্জল হক জানান, গত ২৪ফেব্রুয়ারী পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়ে গেছে। কমিটিতে টিআর কে কে নির্বাচিত হয়েছে প্রশ্ন করা হলে। সুপার ক্ষেপে গিয়ে বলেন আপনি যা পারেন তা লিখেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বজলুর রশিদ বলেন,কাতলামারি ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার নির্বাচন বিষয়ে কেউ আমাকে কিছু জানায়নি। নির্বাচনে অনিয়ম কিছু ঘটে থাকলে তদন্ত করে দেখা হবে এবং সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বোর্ডকে জানানো হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ কামাল বলেন, কাতলামারি ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার নির্বাচন বিষয়ে তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্যে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তে অনিয়মের সত্যতা পাওয়া গেলে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডকে বলা হবে ওই কমিটিকে অনুমোদন না দেওয়ার জন্যে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই