তারিখ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

নওগাঁয় কিস্তির চাপে অস্থির গ্রাহকরা,নেই প্রশাসন

নওগাঁয় এনজিও-সমবায় সমিতির কিস্তির চাপে অস্থির গ্রাহকরা,নেই প্রশাসনের হস্তক্ষেপ
[ভালুকা ডট কম : ১১ জুলাই]
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে জনজীবন বিপর্যস্ত। স্থবির হয়ে পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য। ভেঙে পড়েছে অর্থনীতি। ইতোমধ্যে দেশের কয়েকটি জেলায় রেডজোন ঘোষণা করা হয়েছে। আয় রোজগার না থাকায় মধ্যবিত্ত ও নিন্মবৃত্তদের অবস্থা অনেকটা নাজুক। বর্তমানে নাভিশ্বাস ও আতঙ্কে দিন কাটছে বিভিন্ন এনজিও গ্রাহকদের। অনেকে আবার এলাকা ছেড়ে পালাতেও বাধ্য হচ্ছেন কিস্তির চাপের কারনে।

বিশেষ করে যারা বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে ঋণ নিয়েছেন। করোনার মধ্যে ঋণ পরিশোধ করা তাদের পক্ষে অনেকটা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। ছোট বড় এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঠকর্মীরা ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য গ্রাহকদের উপর চড়াও হচ্ছে। কিস্তির টাকা না দিলে তারা বাড়িতে বসে থাকাসহ অশোভন আচরণ করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে। আর এমন অভিযোগ উঠেছে নওগাঁ ও পার্শ্ববর্তি বগুড়ার আদমদীঘিতে অবস্থিত দেশের সুনামধন্য বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

মহামারী করোনাভাইরাসের আতঙ্কে বিশ্ববাসী। এমন পরিস্থিতিতে গত সাড়ে তিনমাসে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এমন সঙ্কটময় অবস্থায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। যেখানে দু’বেলা খাবার জোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে দরিদ্র পরিবারের মানুষগুলোকে। সেখানে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা (এনওজিও) থেকে ঋণের কিস্তির চাপে দিশেহারা হয়ে পড়ছে দরিদদ্র গ্রাহকরা। উপজেলার ছোট-বড় বেসরকারি সংস্থাগুলো কয়েক দিন ধরে ঋণ পরিশোধের জন্য গ্রাহকদের চাপ দিয়ে যাচ্ছে।

যেখানে সরকার করোনা পরিস্থিতিতে চলতি মাসের ৩০জুন পর্যন্ত। ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি শিথিলযোগ্য করা হলেও তা বাড়িয়ে আগামী ৩০সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। নতুন প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে ‘করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ঋণগ্রহীতাদের আর্থিক অক্ষমতার কারণে ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি অপরিশোধিত থাকলেও তাদের আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে আগামী ৩০সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রাপ্য কোনো কিস্তি বা ঋণকে বকেয়া বা খেলাপি দেখানো যাবে না। তবে কোনো ঋণের শ্রেণিমানের উন্নতি হলে তা বিদ্যমান নিয়মানুযায়ী শ্রেণিকরণ করা যাবে।

তারপরও জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জোরপূর্বক এনজিওর ও সমবায় নামের সমিতির ঋণের কিস্তি আদায় অব্যাহত রয়েছে। কখনো স্বশরীরে এলাকায় গিয়ে আবার কাউকে মুঠোফোনেও কল করে তাগাদা দিচ্ছে ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য। এনিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে দিন দিন ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে।

জেলা সদরের খলিসাকুড়ি গ্রামের একাধিক সদস্যরা বলেন, নওগাঁ মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি, মৌসুমিসহ বেশ কয়েকটি এনজিও থেকে ঋণের টাকা নিয়েছি এবং তা রীতিমতো পরিশোধও করে আসছি কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে আয় কমে যাওয়ায় প্রায় ৩মাস কিস্তি দিতে পারছি না। কিন্তু বর্তমানে এনজিও কর্মীরা প্রতিদিনই বাড়িতে এসে অপমান করে যাচ্ছে। কিস্তি দিতে চাপ প্রয়োগ করছেন। তারা কোন কথাই মানছেন না। বিভিন্ন রকমের হুমকি-ধামকিও দিয়ে আসছে তারা। তাদের যন্ত্রনায় বাড়িতে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। প্রশাসনকে বিষয়টি একাধিকবার জানানোর পরও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এখন আমাদের মরণ ছাড়া কোন উপায় নেই। এখন তো কাজ কর্ম না থাকায় খুব সমস্যা হচ্ছে, টাকা যখন নিয়েছি অবশ্যয় দিবো।

এসকেএস ফাউন্ডেশনের সান্তাহার পৌর এলাকার এক সদস্য বলেন, প্রত্যেক সপ্তাহে এসে কিস্তির জন্য চাপ দেয়। যেখানে দু’বেলা খাওয়ার সমস্যা কিস্তি দিবো কোথায় থেকে। বাধ্য হয়ে ধার দেনা করে কিস্তির টাকা দিতে হচ্ছে। দিনকে দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে করোনা পরিস্থিতি। এমন পরিস্থিতিতে এ সংকট মোকাবেলায় এনজিওগুলোর কিস্তি আদায় বন্ধে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।

গ্রাহকদের এমন অভিযোগের বিষয়ে নওগাঁ মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির প্রতিনিধি আব্দুল হান্নান বলেন, আমাদের এই প্রতিষ্ঠান এনজিও নয় সমবায় ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। মাঠে আমাদের কোটি কোটি টাকা ইনভেষ্ট করা আছে। তাই কিস্তি তুলতে বাধ্য হচ্ছি। কিছু কিছু গ্রাহক আছেন যাদের কিস্তি দেবার সামর্থ থাকলেও করোনা পরিস্থিতিকে সুযোগ হিসেবে নিয়েছে তাই আমরা গ্রাহকদের চাপ প্রয়োগ করিছি। আর সরকারের প্রজ্ঞাপন সম্পর্কে আমার কোন কিছু জানা নেই।

নওগাঁ জেলা প্রশাসক হারুন-অর-রশীদ বলেন, যারা একান্ত দরিদ্র টাকার সঙ্কট তাদের কাছ থেকে জোর পূর্বক কিস্তি আদায় করতে পারবে না। এক্ষেত্রে যদি কোনো এনজিও জোর করে তবে মালিক পক্ষের সাথে কথা বলবো যেন এই কাজ থেকে বিরত থাকে। অত:পর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

জীবন যাত্রা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই