তারিখ : ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

নওগাঁয় কারাম উৎসব অনুষ্ঠিত

নওগাঁয় কারাম উৎসব অনুষ্ঠিত
[ভালুকা ডট কম : ০৩ সেপ্টেম্বর]
নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার নাটশাল ও বকাপুর গ্রামে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ওঁরাও, মুন্ডা ও সাঁওতাল সম্প্রদায়ের লোকজন ‘ডালপূজাকে’ কেন্দ্র করে কারাম উৎসব উদযাপন করেছেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এই উৎসব পালিত হয়।বুধবার বিকেলে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের উদ্যোগে নাটশাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে কারাম মেলা অনুষ্ঠিত হয়। বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে বিকেল ৩টায় মেলার উদ্বোধন করেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন।

উদ্বোধন পর্ব শেষে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। এতে নওগাঁর মহাদেবপুর, পত্নীতলা, নিয়ামতপুর ও ধামইরহাট উপজেলা ছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জ, দিনাজপুর ও রাজশাহী জেলা থেকে আসা বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিসত্তার সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো মেলায় অংশ নেয়। করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার সীমিত পরিসরে সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এর আগের বছরগুলোতে ৩০ থেকে ৪০টি সাংস্কৃতিক দল একসঙ্গে নাটশাল মাঠে নাচ-গান পরিবেশ করলেও এবার ২০টি সাংস্কৃতিক দল একসঙ্গে নাচ-গান পরিবেশন করে। নাচে-গানে ও ঢোল-মাদলের আওয়াজে মাতোয়ারা হয় নাটশাল মাঠ।

সাংস্কৃতিক পর্ব শেষে আলোচনা সভা ও পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। নাটশাল কারাম মন্দিরের পুরোহিত কার্তিক ওঁরাও-এর সভাপতিত্বে¡ আলোচনা সভা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, মহাদেবপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীবিষয়ক গবেষক ও অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আতাউল হক সিদ্দিকী। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মহাদেবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আহসান হাবিব, বাসদ নওগাঁ জেলা কমিটির সমন্বয়ক জয়নাল আবেদিন, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পল্লী সহযোগী বিষয়ক সংস্থা (আরকো) নির্বাহী পরিচালক সজল কুমার চৌধুরী প্রমুখ।

সভায় বক্তারা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের সংবিধানে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি ও সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী মানুষের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠনের দাবি জানান। এছাড়া ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের ওপর সকল অন্যায়-অত্যাচার-জুলুমের বন্ধে সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তারা। আলোচনা শেষে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক দলগুলোকে পুরস্কৃত করা হয়।

আগের দিন সন্ধ্যায় নাটশাল ও বকাপুর গ্রামে কারাম পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাতভর গ্রামের আখড়ায় পুঁতে রাখা কারাম (খিল কদম) ডালকে ঘিরে নাচ-গান অনুষ্ঠিত হয়। সকালে আখড়া থেকে কারাম ডাল উঠিয়ে গ্রামের কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সের নারী-পুরুষ নেচে-গেয়ে গ্রামের বাড়ি বাড়ি ঘুরে শেষে গ্রামের পুকুরে বিসর্জন দেয়।

কারাম উৎসবকে ঘিরে ওঁরাও গ্রামগুলোতে প্রস্তুতি চলে ১৫ থেকে ২০ দিন। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাত ১০-১১টা পর্যন্ত নাচ-গান চলে। ওঁরাও, মুন্ডাসহ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ এ উৎসবের জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করে থাকে।

কারাম উৎসব কমিটির আহ্বায়ক ও জাতীয় আদিবাসী পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সবিন চন্দ্র মুন্ডা বলেন, ঐতিহাসিক ভাবেই আদিবাসীরা প্রকৃতি পূজারী। আদিবাসীদের কৃষিভিত্তিক ও ফসলমুখী পূজা হলো কারাম পূজা। প্রতিবছর ভাদ্র মাসে এর তিথি আসে। কারাম একটি গাছের নাম। যাকে আমরা খিল কদম নামে চিনে থাকি। আদিবাসীদের মতে পবিত্র গাছটি তাঁদের মঙ্গলের প্রতীক।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

বিনোদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই