তারিখ : ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকা পৌর নির্বাচনে বড় দুই দলে মনোনয়ন প্রত্যাশী যারা

ভালুকা পৌরসভা নির্বাচনে বড় দুই দলে এক ডজন নেতা কর্মী মনোনয়ন প্রত্যাশী
[ভালুকা ডট কম : ১২ অক্টোবর]
কোভিড-১৯ প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস মহামারির শেষ কবে এ প্রশ্নের বিশ্বজুড়ে এখনো কোন উত্তর অজানা থাকলেও এর মধ্যেই দেশে সময় ঘনিয়ে আসছে পৌরসভা নির্বাচন। গত ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে ২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের অধিকাংশ পৌরসভার নির্বাচন সম্পন্ন হয়।নিয়মানুযায়ী এ বছরের ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে এসব পৌরসভার মেয়াদ শেষ হবে। পৌরসভা নির্বাচন বিধি অনুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পূর্বেই ওইসব পৌরসভায় নির্বাচন সম্পন্ন করার প্রস্তুতি রয়েছে নির্বাচন কমিশনের।

ভালুকা  পৌরসভার সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর।  নির্বাচনে ধানে শীষের প্রার্থী আলহাজ্ব হাতেম খান কে পরাজিত করে নৌকা প্রতীক নিয়ে  বিজয়ী হন ডাঃ এ.কে.এম মেজবাহ্ উদ্দিন কাইয়ুম। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে  ভালুকা  পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাশীন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে মাঠে রয়েছেন হাফ ডজন নেতাকর্মী। পিছিয়ে নেই ক্ষমতাচুত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) দলীয় মনোনয়নের জন্য লবিং করে মাঠে রয়েছেন হাফ ডজন নেতাকর্মী।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, মহামারি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে (নিয়ন্ত্রণে থাকলে) এবং বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে মেয়াদোত্তীর্ণ পৌরসভাগুলোতে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে নির্বাচন হবে। ৪০ থেকে ৪৫ দিন সময় হাতে রেখে এসব পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন নির্বাচন কমিশন। এ বছরও দলীয় প্রতীকে পৌরসভা নির্বাচন হতে যাচ্ছে।

আসন্ন ভালুকা পৌরসভার নির্বাচন কে সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে লিফলেট ছাপিয়ে গণসংযোগ করে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্ভাব্য মেয়র, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা করোনা পরিস্থিতির কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ভোটারদের সাথে কুশল বিনিময় এবং খোঁজ খবর নিচ্ছেন। মহামারি করোনাকালীন সময় কেউ কেউ বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ বিতরণ করেছেন। পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের করোনার সময় খাদ্য সামগ্রী হিসেবে চাল, ডাল, আলু, তেল, পেয়াঁজ, রসুন এবং মাস্ক,সাবান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার,পানির ট্যাঙ্ক বিতরণ করতে দেখা গেছে। তবে করোনার কারণে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ভোটারদের সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেইসবুক ও মোবাইল ফোনে খোঁজ খবর নিতেও দেখা যায়।

আসন্ন ভালুকা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে উপজেলা আওয়ামীলীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক পৌর মেয়র ডাঃ এ.কে.এম মেজবাহ্ উদ্দিন কাইয়ুম, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমার্ডের সাবেক আহবায়ক সাদিকুর রহমান তালুকদার, পৌর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন সরকার, ভালুকা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফজলুল আমিন লিটন, আ’লীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার মাসুদ পারভেজ, পৌর যুবলীগের সভাপতি আলমগীর হোসেন সোহেল।দলীয় মনোনয়ন পেতে প্রার্থীরা জেলা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাদের সাথে জোড় লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

অপরদিকে বিএনপি থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে আলোচনায় রয়েছেন বিএনপি নেতা আনোয়ার উদ্দিন আহম্মেদ, আলহাজ্ব হাতেম খান, আলী আজগর চৌধুরী মহন মিয়া, আহসান উল্যাহ খান রুবেল, উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, জেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহবায়ক সিরাজুল ইসলাম ঢালী।

দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশায় আওয়ামীলীগ ও বিএনপি থেকে উভয় দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছেন এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে যার যার অবস্থান তুলে ধরছেন। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আরো কয়েকজনের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে।

পৌর মেয়র ডাঃ এ.কে.এম মেজবাহ্ উদ্দিন কাইয়ুম বলেন, পৌরসভায় উন্নয়নের কাজ করেছি। ভালুকা পৌরসভাকে তৃতীয় শ্রেণি থেকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নিত করেছি। তিনি আরো বলেন, দল ও জনগণ যদি সুযোগ দেয় টানা তৃতীয় বারের মত মেয়র নির্বাচিত হয়ে আমি অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করবো।

সাদিকুর রহমান তালুকদার বলেন, আমি কোভিট-১৯ এ কর্মহীন হয়ে পরা মানুষের বাড়ী বাড়ী গিয়ে বিভিন্ন খাদ্য সহায়তা ও প্রতি বছর ঈদে ঈদসামগ্রী বিতরণ করে আসছি অসহায়দের মাঝে। আমি যে ভাবে মানুষের সাড়া পাচ্ছি দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেন তাহলে আমি জনগণের ভোটে নির্চাচিত হতে পারবো ইনশাআল্লাহ।

সালাউদ্দিন সরকার বলেন, আমার বাবা মরহুম মফিজ উদ্দিন সরকার ৪বার ইউপি চেয়ারম্যান ও ২বার পৌরসভার মেয়র থাকায় আমার  পরিবার ও আত্মীয় স্বজন সহ প্রতিটি ওয়ার্ডেই আলাদা ভোট রয়েছে দল যদি আমাকে নৌকার মনোনয়ন দেন জনগণের ভোটে মেয়র নির্বাচিত হতে পারবো ইনশাআল্লাহ।

ফজলুল আমিন লিটন বলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও মরহুম মেজর আফসার উদ্দিন আমার নানা, বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ ধনু আমার মামা, আমি ভালুকা বাজারে ব্যবসায়ি সমিতির সধারণ সম্পাদক হিসাবে দীর্ঘ দিন যাবৎ দ্বায়িত্ব পালন করা অবস্থায় সকল ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর সাথে রয়েছে সু-সম্পর্ক এবং আমাদের পরিবারের ব্যক্তিগত ভোট ব্যাংক রয়েছে। দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেন তাহলে জনগণের সমর্থনে মেয়র নির্বাচিত হব  ইনশাআল্লাহ।

ইঞ্জিনিয়ার মাসুদ পারভেজ বলেন, আমি কোভিট-১৯ মহামারি অবস্থায় গরীব অসহায় মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করি এবং প্রতি ঈদে অসহায় পরিবারের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করে পৌর বাসীকে বিভিন্ন সেবা দিয়ে যাচ্ছি এবং করোনার সময় জনগনের মাঠে থেকে নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলাম দলীয় মনোনয় পেলে জনগণের যে সাড়া আছে তাতে মেয়র নির্বাচিত হবো ইনশাআল্লাহ।

আলমগীর হোসেন সোহেল বলেন, আমি সাংগঠনিক ভাবে যুবলীগকে নিয়ে দিবা রাত্রী মানুষের ধারে ধারে গিয়ে কোভিট-১৯ মহামারি অবস্থায় গরীব অসহায় মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করি এবং প্রতি ঈদে অসহায় পরিবারের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করে পৌর বাসীকে বিভিন্ন সেবা দিয়ে যাচ্ছি এবং দলী মনোনয় পেলে জনগণের দোয়া ও সমর্থনে মেয়র নির্বাচিত হবো ইনশাআল্লাহ।

আলহাজ্ব হাতেম খান বলেন, গত পৌর নির্বাচনে ধানে শীষ প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করেছিলাম। জনগণ আমাকে যে ভাবে সমর্থন দিয়েছিল আওয়ামীলীগ ভোট লোটে না নিলে আমি আজ মেয়র থাকতাম। আমি কোভিট-১৯ মহামারি অবস্থায় গরীব অসহায় মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করি এবং ১০ বছর যাবৎ প্রতি ঈদে অসহায় পরিবারের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করে পৌর বাসীকে বিভিন্ন সেবা দিয়ে যাচ্ছি এবং দলী মনোনয় পেলে জনগণের দোয়া ও সমর্থনে  মেয়র নির্বাচিত হবো ইনশাআল্লাহ।

আলী আজগর চৌধুরী মহন মিয়া বলেন পৌরসভার মাঝে আমাদের চৌধুরী পরিবারের ভাল সুনাম ও জনমত রয়েছে দলীয় মনোয়ন পেলে জনসমর্থনে মেয়র নির্বাচিত হতে পারবো ইনশাআল্লাহ।

আহসান উল্যাহ খান রুবেল বলেন, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক থাকাবস্থায় সংগঠনকে শক্তিশালী করে দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে সমগ্র আন্দোলনে মাঠে রয়েছি এবং সামনেও মাঠে থাকবো। দল আমাকে মনোনয়ন দিলে জনগণের সমর্থনে মেয়র নির্বাচিত হবো ইনশাআল্লাহ।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমি উপজেলা যুবদলের নির্বাচিত সভাপতি হিসাবে দলকে শক্তিশালী করে বিভিন্ন আন্দোলন ও সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছি। দল আমাকে মনোনয়ন দিলে জনগণের দোয়া ও সমর্থনে মেয়র নির্বাচিত হবো ইনশাআল্লাহ।

সিরাজুল ইসলাম ঢালী বলেন, আমি উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি হিসাবে দলকে শক্তিশালী করে বিভিন্ন দলীয় প্রোগ্রামে অংশ গ্রহণ করে নেতাকর্মীদের সুখে দুঃখে পাশে আছি ও থাকবো। দল আমাকে মনোনয়ন দিলে জনগণের সমর্থনে মেয়র নির্বাচিত হবো ইনশাআল্লাহ।

আনোয়ার উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, অনেকেই আমার কাছে জানতে চাইছে আমি মেয়র প্রার্থী কিনা এখনো পর্যন্ত চুড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত নেইনি।

১৯৯৮ সালে ভালুকা পৌরসভা স্থাপিত হয়। ১০.৬৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তনে ১লক্ষ ৬০হাজার জন সংখ্যা রয়েছে।  পৌরসভায় মেয়র ৯টি ওয়াডের্, ৯জন কাউন্সিলর ও ৩জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর, ২জন কর্মকর্তা ও ২১ জন কর্মচারী নিয়ে পৌরসভাটি পরিচালিত হয়ে আসছে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই