তারিখ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

নওগাঁয় বাফার গুদামের স্থান নির্ধারন নিয়ে রশি টানাটানি

আন্দোলনের হুমকি বিএফএ নেতাদের
নওগাঁয় বাফার গুদামের স্থান নির্ধারন নিয়ে রশি টানাটানি
[ভালুকা ডট কম : ২৬ অক্টোবর]
নওগাঁয় বাফার গুদাম নির্মানে গোড়ায় গলদ দেখা দিয়েছে। ‘সার সংরক্ষন ও বিতরন সুবিধার্থে’ গুদাম নির্মাণ করতে চায় সরকার অথচ সেদিকে খেয়াল না রেখেই স্থান নির্ধারন করা হয়েছে। স্থান পরিবর্তনে জেলা প্রশাসন ও বিএফএ দফায় দফায় আবেদন করলেও আমলে নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। স্থানীয়দের মতামত উপেক্ষা করেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তারা। ফলে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে ব্যবসায়ী মহলে।

জানা গেছে, সার সরবরাহ ও কৃষকের মাঝে বিতরন সহজ করতে, দেশের বিভিন্ন স্থানে ৩৪টি গুদাম নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয় শিল্প মন্ত্রনালয়ের প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাষ্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি)। সেই প্রকল্পের অধীনে নওগাঁ জেলায় ২৫হাজার মেট্টিক টন ধারন ক্ষমতার একটি গুদাম নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৭সালে।

প্রকল্পের মেয়াদ অনুযায়ী ২০১৮সাল থেকে ২০২১সালের মধ্যে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। সেই মোতাবেক প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা প্রথমে স্থান নির্ধারন করতে আসেন। স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে মোট তিনটি স্থান প্রস্তাবনায় আনা হয়। স্থানগুলোর মধ্যে প্রথমটি ছিলো নওগাঁ সদর উপজেলার কুমুরিয়া, দ্বিতীয়টি মহাদেবপুর উপজেলার হাঁপানিয়া ও তৃতীয়টি ছিলো সদর উপজেলার খাট্টা সাহাপুর। স্থানগুলোর প্রত্যেকটিই সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। তবে প্রথমটি অর্থাৎ কুমুরিয়া নামক স্থানেই গুদাম নির্মাণ করার পক্ষে মত দেন সার স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বিএফএ নেতৃবৃন্দ।

কিন্তু পরবর্তীতে তাদের মতামত উপেক্ষা করে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা প্রস্তাবনার তৃতীয়টি অর্থাৎ খাট্টা সাহাপুর   মৌজার জায়গাটি গুদাম নির্মাণের জন্য চূড়ান্ত করেন। এই খবর জানতে পেয়ে বিসিআইসির ডিলাররা লিখিত ভাবে স্থান পরিবর্তনের আবেদন করেন। স্থান পরিবর্তন করে কুমুরিয়ায় গুদাম নির্মাণের জন্য জেলা প্রশাসনও লিখিত দেয় উপড় মহলে। কিন্তু তাতে সারা না দিয়ে সংশ্লিষ্টরা খাট্টা সাহাপুরে গুদাম নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহনে টাকা বরাদ্দ দেয়।

বিএফএ নওগাঁ জেলা শাখার সভাপতি রেজাউল করিম জানান, গুদাম নির্মাণের জায়গা নির্ধারনে কর্তৃপক্ষ ভূল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা মেনে নেয়া যায় না। খাট্টা সাহাপুর একটি আবাসিক এলাকা। সেখানে গুদাম নির্মাণ করতে গেলে একদিকে জমি অধিগ্রহনে বেশী অর্থ ব্যয় হবে অন্যদিকে সুফল থেকে বঞ্চিত হবে নওগাঁবাসী। গুদাম নির্মাণের উদ্দেশ্য সফল হবে না। তাছাড়া খাট্টা সাহাপুর বগুড়া জেলার সান্তাহার সংলগ্ন। তার নিকটেই বিসিআইসির একটি বাফার গুদাম আছে। সেখানে সার নিতে গিয়ে চরম বিড়ম্বনা পোহাতে হয় নওগাঁর ডিলারদের। কৃষকদের মাঝে সময় মত সার সরবরাহ কঠিন হয়ে পড়ে। এই বিরম্বনা থেকে মুক্তি পেতে স্থান পরিবর্তন অত্যাবশ্যক।

তিনি আরো বলেন, কুমুরিয়ায় অনেক পরিত্যাক্ত জমি আছে। ভবিষ্যতে প্রয়োজন মত আরো জমি অধিগ্রহনের সুযোগও রয়েছে। মূল্যও কম। গুদাম নির্মাণের জন্য ৩২কোটি টাকার স্থলে মাত্র ১০কোটি টাকার মধ্যেই জমি অধিগ্রহন করা সম্ভব। এতে সরকারের প্রায় ২২কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। এছাড়া কুমুরিয়ার জায়গাটি নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কের পাশেই। সেখানে গুদাম নির্মাণ হলে সার সংরক্ষন ও নওগাঁ জেলার ১১টি উপজেলার সবগুলোতেই সার সরবরাহ সহজ হবে। তাই স্থান পরিবর্তন করার জোড় দাবি জানানো হচ্ছে। বিষয়টি সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিল্প মন্ত্রীর দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

এদিকে স্থানীয়দের মতামত উপেক্ষা করে স্থান নির্ধারন করায় ব্যবসায়ী ও কৃষক সংগঠনের নেতৃবৃন্দদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জোড় করে সাহা খাট্টা সাহাপুরে গুদাম নির্মাণ করা হলে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।

এসব বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হোননি নওগাঁর জেলা প্রশাসক হারুন-অর-রশিদ। তবে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে গুদামের স্থান পরিবর্তনের জেলা প্রশাসন জন্য দুই দফায় আবেদন করেছে। ২০২০সালের মার্চ ও সেপ্টেম্বর মাসে আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত কোন জবাব আসেনি। উপরন্ত খাট্টা সাহাপুর মৌজায় জমি অধিগ্রহনের জন্য সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের কাছে ৩০কোটি ৭৬ লাখ ৩৮ হাজার টাকার একটি চেক পাঠিয়েছে শিল্প মন্ত্রনালয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক আবুল কাশেম জানান, স্থানীয় প্রশাসনের মতামতের ভিত্তিতেই স্থান নির্ধারন হয়েছে। স্থান পরিবর্তন করা, না করা এখন উপড় মহলের বিষয়। এরচেয়ে বেশী কিছু বলার সুযোগ নেই। স্থানীয়দের মতামতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকার বাইরে বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই