তারিখ : ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

খাগড়কুড়ি গ্রাম হরেক প্রজাতির পাখির অভয়ারন্য

নওগাঁর খাগড়কুড়ি গ্রাম এখন হরেক প্রজাতির পাখির অভয়ারন্য
[ভালুকা ডট কম : ০৬ নভেম্বর]
নওগাঁর খাগড়কুড়ি গ্রাম এখন হরেক প্রজাতির পাখির অভয়ারন্যে পরিণত হয়েছে। সবুজে ঘেরা ও ছায়া সুনিবিড় গ্রাম খাগড়কুড়ি। এখন পাখি গ্রাম হিসেবে পরিচিত পেয়েছে। এক সময় পাখিরা অতিথি হলেও এখন তারা স্থায়ী বাসিন্দা। এখানে দেখা মেলে বক, শালিক, ঘুঘু, কাকসহ হরেক প্রজাতির বড়-ছোট পাখি।

গত ৮-১০বছর আগ থেকে পাখিদের বিচরণ শুরু হয়েছে। প্রতি বছর তাদের আসা-যাওয়া থাকলেও এবার তারা বাসা বেঁধে সংসার পেতেছে গাছে। ডিম পেড়ে বাচ্চা দিয়েছে। তাই মনের সুখে এবার তারা নিশ্চিন্তে সংসার করছে। সকাল-বিকেল তাদের কিচির-মিচির শব্দে মুখরিত থাকে গ্রামটি। সূর্যদয়ের পরপরই তারা আহারে বেরিয়ে যায়, আবার ফিরে আসে বিকেল নাগাদ। প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা পাখিদের কিচিরমিচির উপভোগ করতে গ্রামটিতে বেড়াতে আসছেন।

নওগাঁ শহর থেকে প্রায় ৫কিলোমিটার দূরে উত্তর-পূর্বে দিকে গ্রামটির নাম খাগড়কুড়ি দক্ষিণ পাড়া। গ্রামটি খাগড়কুড়ি হলেও হাতিপোতা নামেও পরিচিত। তৎকালিন জমিদার আমলে হাতি নিয়ে খাজনা আদায় করতে এসে হাতিটি মারা যায়। এরপর হাতিটি এ গ্রামের দক্ষিণ পাড়ায় মাটিতে পুতে রাখা হয়। একারণে হাতিপোতা হিসেবেও এলাকাটি পরিচিত। গ্রামের আক্তার ফারুক নামে এক ব্যক্তির বাগানে বড় গাছ শিমুল, আম ও কড়ই এবং বাঁশ ঝাঁড় রয়েছে। গত ৮-১০বছর আগ থেকে তার বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের বিচরণ শুরু হয়। সেখানে গড়ে ওঠে পাখি কলোনী। যেখানে আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের মধ্যে রয়েছে শামুকখোল, সাদা বক, রাতচোরা, পানকৌড়ি ও বিভিন্ন প্রজাতির ঘুঘু।

নিরাপদ মনে করে প্রতি বছরের নির্দিষ্ট সময় আসে এবং শীতের সময় চলে যায়। তবে কিছু অংশ সারা বছরই থাকে। এবছর পাখিরা গাছে বাসা বেঁধে সংসার পেতেছে। ডিম পেড়ে বাচ্চা দিয়েছে। সবসময় কিচির মিচির শব্দে মুখরিত হয়ে আছে গ্রামটি। গ্রামের মানুষরাও এখন পাখি প্রেমি হয়ে গেছে। তারা পাখিদের বিরক্ত করে না। নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন গ্রামের সকলেই। এছাড়া কাউকে বিরক্ত এবং শিকার করতে দেয়না। পাখি শিকার রোধে গ্রামবাসী নিয়েছেন নানা উদ্যোগ। ফলে সারা বছরই সেখানে হাজার হাজার পাখির আগমন ঘটে। গ্রামে প্রবেশে আগে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ থেকে একটি সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে পাখি কলোনীসমূহ দেশের সম্পদ, এদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমাদের সকলের।

স্থানীয় গৃহবধু লিমা ও নাজমা বলেন, অতিথি পাখি হিসেবে আমাদের কাছে পরিচিত। গরমের সময় আসে। আর শীতের মৌসুমে অধিকাংশ পাখি চলে যায়। তবে প্রতিবারের মতো এবার কোন পাখি চলে যায়নি। গাছে অসংখ্য বাসা বেঁধে বাচ্চা দিয়েছে। ভোর থেকে সকাল এবং বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাখিদের কিচির মিচির শব্দে মুখরিত থাকে। সূর্য উঠার পরপরই তারা আহারে বেরিয়ে যায় আবার ফিরে আসে বিকেল নাগাদ। তারা যে শামুক খেয়ে খোল ফেলে দেয় নিচে থাকা হাঁস সেগুলো খেয়ে নেয়। বলতে গেলে পাখির ডাকে ভোর হয় এবং ঘুম ভাঙে। প্রথম প্রথম একটু বিরক্ত হলেও এখন ঠিক হয়ে গেছে।

স্থানীয় মোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমরা এখন বিষয়টি উপভোগ করি। এছাড়া প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন পাখি দেখতে আসে। তবে এলাকাটি শহরের কাছে হওয়ায় একটু প্রশান্তি পেতে শহরের মানুষরা বেশি আসেন। আমরা পাখি শিকার রোধে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি। তবে সরকার যদি এই অভয়ারন্য রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাহলে দর্শকদের জন্য আরো ভালো হতো। এছাড়া এই পাখিদের রক্ষায় যদি নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে পাখিগুলো শিকারের হাত থেকে রক্ষা পেতো।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

পরিবেশ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই