বিস্তারিত বিষয়
ঐতিহাসিক নওগাঁ মুক্তিযুদ্ধ
পঞ্চাশ বছরেও বীরত্বের সম্মান পাননি বিজয়ী মুক্তিযোদ্ধারা
১৩০ জন পাকিস্তানী সৈন্য ও শতাধিক রাজাকার খতম / মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয় বিপুল পরিমাণ অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র
ঐতিহাসিক নওগাঁ মুক্তিযুদ্ধ
[ভালুকা ডট কম : ১৪ নভেম্বর]
দডিসেম্বর মাস এলেই প্রতীক্ষায় থাকি .........। প্রায় ৫০ বছর পার হয়ে গেল এই প্রতীক্ষার আর শেষ হলো না। আমাদের কথা করোই মনে হলো না, যুদ্ধ না করেও কেউ কেউ খেতাব পেয়েছেন, রাষ্ট্রীয় সম্মান পেয়েছেন। আর আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও নির্দেশকে পুঁজি করে শুধু সাহস ও সাধারণ অস্ত্র দিয়ে মরণপণ লড়াই করে প্রায় দুই হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা শত্রুমুক্ত করেও রাষ্ট্রের কাছে অপরিচিতই রয়ে গেলাম’’। ধরা গলায় কথাগুলো বলেন- জীবন সায়াহ্নে দাঁড়ানো ঐতিহাসিক নওগাঁ মুক্তিযুদ্ধে শত্রুবাহিনী প্রতিহতকারী কমান্ডার ও প্রশিক্ষক বয়সের ভারে ন্যুব্জ বীর মুক্তিযোদ্ধা ওস্তাদ গাজী আব্দুর রহমান মিঞা (৯৭)।
হানাদার বাহিনীর ত্রিমুখী হামলার বিরুদ্ধে প্রায় ১১ ঘন্টাব্যাপী মরণপণ সম্মুখ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা ১৩০ জন পাকিস্তানী সৈন্যকে খতম করেন। পালানোর পথে শতাধিক রাজাকার, আলবদর, আলসামস ও মেলেশিয়া সদস্যও নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে আসে পরাজিত পাকিস্তানী বাহিনীর বিপুল পরিমাণ ভারী সমরাস্ত্র ও গোলা-বারুদ। সৌভাগ্যক্রমে মাত্র ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। =মুক্তিযুদ্ধে গৌরবান্বিত গল্পের বড় অংশ জুড়ে আছে চলনবিল বিধৌত তাড়াশের এই ‘ঐতিহাসিক নওগাঁ মুক্তিযুদ্ধ’। মুক্তিযুদ্ধকালীন ৯ মাসে উত্তরবঙ্গে যতগুলো যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল তার মধ্যে নওগাঁ সম্মুখ যুদ্ধ অন্যতম। এখানে ’৭১ এর ১১নভেম্বর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও মুক্তিযুদ্ধকালীন সংগঠন পলাশডাঙ্গা যুবশিবিরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তুমুল যুদ্ধ হয়।
ঐতিহাসিক বিজয়ের এই স্মরণীয় লোমহর্ষক কাহিনী বর্ণনায় ওস্তাদ গাজী আব্দুর রহমান মিঞা বলেন- মুক্তিযুদ্ধকালীন সংগঠন ‘পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবির’ ছিল অপরাজেয়। এর প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক ছিলেন ‘উত্তরবঙ্গের লালসুর্য’ জন উপাধি খ্যাত তৎকালীন ছাত্রনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ মির্জা। ৪৬ টি বড় নৌকা ও ৬টি ডিঙ্গি নৌকায় স্থানীয়ভাবে প্রশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা এবং বেঙ্গলরেজিমেন্ট, ইপি আর, বিমান ও নৌবাহিনীর ৪০ জন সৈনিকসহ আমরা মোট ৬৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম। পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নাটোর জেলার ১৩টি উপজেলাসহ পাশবর্তী আরো কয়েকটি জেলার মুক্তিযোদ্ধারা পলাশডাঙ্গা যুব শিবিরের সাথে যুক্ত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সিরাজগঞ্জের প্রথম সম্মুখ যুদ্ধটি সংঘটিত হয় কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাটে। এরপর গ্রামগঞ্জে হানাদারদের সঙ্গে অসংখ্য প্রতিরোধ ও সম্মুখযুদ্ধ হয়। এর মধ্যে ভাটপিয়ারীর যুদ্ধ, বরইতলার যুদ্ধ, শৈলাবাড়ীর যুদ্ধ, ঘাটিনা ব্রীজ অপারেশন, জামতৈল ব্রীজ অপারেশন, ভারত যাত্রা পথে ময়মনসিংহের আন্ডার চরে পাক বিমান বাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করণ, সলঙ্গা রাজাকার ক্যা¤প অপারেশন, বেলকুচি ও তাড়াশ থানা রেইড, তাড়াশ থানা দখল করে অস্ত্র গোলাবারুদ দখল, বস্তুল অপারেশন, গুরুদাসপুর, কাছিকাটা ও ভাক্সগুড়া অপারেশন, ব্রহ্মগাছার যুদ্ধ ও তাড়াশের ঐতিহাসিক নওগাঁ যুদ্ধ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
পলাশডাঙ্গা যুব শিবিরের বিশাল বাহিনী সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও নাটোর (পুরো চলনবিল এলাকা) এলাকায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনগণকে উজ্জীবিত করাসহ স্মরণীয় বিস্তৃতি ঘটিয়েছিল। শৈলাবাড়ীতে যে যুদ্ধটি হয় সেটিই ছিল সিরাজগঞ্জে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের শেষ যুদ্ধ। মুক্তিবাহিনীর উপর্যুপরি আক্রমণে একের পর এক পর্যুদস্ত পাকিস্তানী বাহিনীর ১৮ জন সেনা নিহত হয়। শহীদ হন ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা। এ যুদ্ধেও পরাজিত হয়ে পাকবাহিনী ১৪ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জ ছেড়ে রাতে পালিয়ে যায়। মিত্রবাহিনী ছাড়াই সিরাজগঞ্জ শহর শত্রুমুক্ত করেন মুক্তিযোদ্ধারা। এসব যুদ্ধে যাদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা বিজয়ী হয়েছেন তারা হলেন-পলাশডাঙ্গা যুব শিবিরের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আব্দুল লতিফ মির্জাসহ, আব্দুস সামাদ, মনিরুল কবীর, আব্দুল আজিজ মির্জা, আব্দুল আজিজ সরকার, খায়রুজ্জামান গেদু মিয়া, বিমল কুমার দাস, আব্দুল হাই তালুকদার, চৌধুরী ইকতিয়ার, আতাউর রহমান, মোবারক হোসেন, আজাদুর রহমান, সোহরাব আলী সরকার, ম ম আমজাদ হোসেন মিলন, লুৎফর রহমান অরুণ, আব্দুস সামাদ মিঞা, মোজাহারুল ইসলাম, আব্দুস ছালাম, ওস্তাদ আব্দুর রহমান মিঞা, এমএ বাছেদ, খলিলুর রহমান, খোরশেদ আলম, লুৎফর রহমান (মাখন), আব্দুল বাকী মির্জা, হোসেন আলী, শফিকুল ইসলাম শফি, বাঘা মোহাম্মদ, আখতার হোসেন, আলী ইমাম দুলু, আব্দুর রহিম,আমির হোসেন ভুলু, মোজাফফর হোসেন প্রমুখ।
মুক্তিযুদ্ধের সময় রায়গঞ্জ ও তাড়াশ থানায় মোট প্রায় ৮০০ জন রাজাকার আলবদর বাহিনীর সদস্য ছিল। তারা থানা ও আঞ্চলিক শান্তি কমিটি গঠন করে ছিল। বস্তুলের মওলানা মফিজ উদ্দিন আল মাদানী থানা শান্তি কমিটির প্রধান ও চৌপাকিয়ার আজিজুর রহমান আঞ্চলিক শান্তি কমিটির প্রধান ছিলেন। তারা হিন্দুর মাল গণিমতের মাল ফতোয়া দিয়ে লুটতারাজে মদত দিতো এবং রাজাকারদের সহযোগিতায় বিভিন্ন গ্রামে লুটতরাজ অগ্নিসংযোগ ও হাটবাজারে অত্যাচার চালাতো। পাক বাহিনীকে মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি চেনাত ও স্বাধীনতা কামীদের ধরে নিয়ে নির্যাতন করে পাকিস্তানী সেনাদের দের হাতে দিতো। মানুষের গোহাল থেকে গরু, ছাগল, মহিষ জোর করে নিয়ে সেনা ক্যাম্পে দিত। মওলানা মাদানী এবং অনেক রাজাকার মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মুক্তিযোদ্ধার হাতে নিহত হয়। রায়গঞ্জ ও তাড়াশের ৫ জন রাজাকার পাক বাহিনী ত্যাগ করে পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবিরের অস্ত্র সহ সারেন্ডার করে এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিভিন্ন যুদ্ধে অংশ নেয়।
নওগাঁ মুক্তিযুদ্ধের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন- আমরা ১০ নভেম্বর রায়গঞ্জ থানার পাঙ্গাসীতে একটি অপারেশন শেষ করে ফেরার পথে উল্লাপাড়ার প্রতাপ হাটখোলায় আসার পর পাবনার ভাঙ্গুরার মুক্তিযোদ্ধা আনিসুর রহমান মাষ্টার (একজন জ্যোতিষী) বললেন আমাদের এই মূর্হুতে এস্থান ত্যাগ করে প্রস্তুতি নেয়া উচিৎ। কেননা আজ ভোররাতে আর্মিরা আমাদের উপর চর্তুদিক থেকে আক্রমণ করবে। যদি প্রত্যেক ফোর্স সজাগ থাকে তাহলে আমাদের কোন ক্ষতি হবে না। আমরা রওনা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এমন সময় তাড়াশের চৌপাকিয়া গ্রামের রাজাকার খোকা একটি ডিঙ্গি নৌকায় ছই তুলে বউ সেজে আমাদের নৌকা গুলি ফলো করার জন্য আসে। তখন সেন্ট্রি ছিলেন ঊলিপুরের মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান (মতি)। তার কাছে ধরা পড়ে যায় ছদ্মবেশী গুপ্তচর খোকা রাজাকার। ঐ হাটের পশ্চিম পাশে একটি জামগাছের সাথে পিঠমোড়া করে বেঁধে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানাগেল তাড়াশ ক্যাম্পের সেনাবাহিনীর নির্দেশে নওগাঁ আঞ্চলিক শান্তিকমিটির চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান তাকে পাঠিয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধাদের নৌকা, যোদ্ধার সংখ্যা ও অস্ত্র গোলা-বারুদের খোঁজ খবর নেয়ার জন্য। পরে রাজাকার খোকাকে রাইফেলের বাঁট দিয়ে পিটিয়ে মেরে সেখানে পুঁতে ফেলা হয়। তখন বিকাল প্রায় ৩টা। এরপর আমরা চলে আসি নওগাঁয় (হান্ডিয়াল নওগাঁ)। নওগাঁয় পৌঁছাতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। লতিফ মির্জা বললেন- অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আমাদের উপর নিশ্চিত চারদিক থেকে আক্রমণ হবে। এখানে পাশবর্তী কয়েক থানা থেকে একমাত্র প্রবেশের রাস্তা রংমহল পুকুর পাড়ের স্কুল মোড়। ঐখানেই মরণ-পণ প্রটেকশন দিতে হবে। এক্ষেত্রে বিচক্ষণ কমান্ডার একমাত্র ‘রহমান ভাই’। আমি তার নির্দেশমত ৭ জন ফোর্স নিয়ে ঐ স্থানে প্রটেকশনের প্রস্তুতি নেই।
আমাদের সামরিক কমান্ডের অন্যান্যদের বিভিন্ন পয়েন্টে (সেল্টারে) সেট করলেন লতিফ মির্জা স্বয়ং। আমার সঙ্গে ছিলেন এলএমজি ম্যান শাহজাদপুরের মনসুর রহমান, টুআইসি (এলএমজি পরিচালনায় দ্বিতীয় যোদ্ধা) তাড়াশের কামারশনের আব্দুল কুদ্দুস। ২জন ভারতে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ও আমার প্রশিক্ষণ দেয়া আরো ৩ জন। রংমহল পুকুর পাড়ে ২টি বাঙ্কার খুঁড়তে রাত প্রায় শেষ হয়ে এলো। তখন ছিল রমজান মাস। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা তখনও সবাই সেহেরি সম্পন্ন করতে পারেনি। সে সময় এত ঘন কুয়াশা নেমে এলো যে ১০ ফুট দুরে কি আছে দেখা যাচ্ছে না। এমন সময় আমাদের ডিউটিম্যান (সেন্ট্রি) বললো ওস্তাদ তাড়াতাড়ি আসেন, পুর্ব দিক থেকে একটা মেঘ খুব নিচ দিয়ে ভেসে আসার মত মনে হচ্ছে। ভাল বোঝা যাচ্ছে না। শত্রু আসছে কিনা তা নিশ্চিত হতে আমি যেইনা চাইনিজ রাইফেল দিয়ে একটা ফাঁকা গুলি করেছি। ওমনি ওপাশ থেকে পাকবাহিনী এলএমজি দিয়ে ব্রাশফায়ার শুরু করলো।
প্রথম পুর্ব দিক থেকে (সম্ভবতঃ রায়গঞ্জ ও উল্লাপাড়া ক্যাম্পের পাকিস্তানী সেনা), তারপর উত্তর দিক থেকে (তাড়াশ ক্যাম্প)। এর ৫/৭ মিনিট পরেই পশ্চিম দিক থেকে (গুরুদাসপুর ও সিংড়া ক্যাম্প থেকে, ওরা এসেছিল নৌকাযোগে) ব্যাপক গুলি বর্ষণ শুরু হলো। ত্রিমুখী আক্রমণের মধ্যে আমরা তখন বিভীষিকা দেখছি। আমার ৭ জন ফোর্সের মধ্যে ভারতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২জন পালিয়ে গেল। তখন মাত্র ৫ জনে তিনদিক কভার দিচ্ছি। আমরা খুব সীমিত গোলা বারুদ নিয়ে যুদ্ধ করছি। তাই ফোর্সদের প্রতি আমার নির্দেশ ছিল-একটা গুলির বিনিময়ে একটা শত্রুর লাশ চাই। অযথা যেন গুলি খরচ না হয়। এভাবে সকাল ৮টা পর্যন্ত বৃষ্টি বর্ষণের মত গুলি চলছে। তাড়াশের আতাউর রহমানের সেল্টার ছিল নওগাঁ শাহী মসজিদের উত্তরপাশে। ততক্ষণে আতাউর কয়েকজন পাকসেনা খতম করে ওদের বেশ কিছু হাতিয়ার কব্জা করেছে। এরমধ্যে ছিল একটি দুই ইঞ্চি ‘সিগন্যাল মর্টার সেল’ ( যা বিজয় সিগন্যাল হিসাবে ব্যবহার হয়ে থাকে)।
আমার সঙ্গে থাকা একজন মুক্তিযোদ্ধা যুবক চিৎকার করে জয়বাংলা বলে শ্লোগান দিতেই আতাউর মর্টার সেলটি বার্ষ্ট করলো। সাতরঙ ছড়িয়ে বিকট আওয়াজে বার্ষ্ট হলো সেলটি। আর সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানীদের বিজয় হয়েছে ভেবে পাকসেনারা ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ ধ্বনি দিয়ে ক্রলিং ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে উল্লাস শুরু করে দিল। তখন আমরা পাখি মারার মত উপর্যুপরি গুলি করে ওদের খতম করতে থাকি। ওরা ঘুরে পুনরায় আক্রমণের চেষ্টা চালিয়েও খুব একটা এঁটে উঠতে পারেনি। সকাল ১০টার টার দিকে পাকসেনাদের আক্রমণ নিস্তেজ হয়ে পড়ে। সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ করেই আকাশে উড়ে আসে দুটি ‘জেট ফাইটার’ বিমান। তবে পর মুহূর্তেই সেগুলো চলে যায়। পরে জানাগেছে, কোণঠাসা হয়ে পড়া পাকসেনারা বেতার বার্তা পাঠালেও তাতে উল্লেখ করা পজিশন ভুল থাকায় চলনবিলের নওগাঁর (হান্ডিয়াল নওগাঁ) পরিবর্তে তৎকালীন মহুকুমা নওগাঁয় গিয়ে জেট ফাইটার দু’টি ব্যাপক বোমাবর্ষণ করে। ওটা ছিল এক অসম যুদ্ধ। তবে দুপুর বারোটার পর থেকেই পরিস্থিতি পাল্টে যায়। আমরা হানাদারদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলি। উপর্যুপরি গুলি বর্ষণে নিহত হয় ১৩০ জন পাকসেনা। মেলেশিয়াসহ কিছু সৈন্য পালিয়ে যায়। অবশিষ্টরা আত্ম সমর্পণে বাধ্য হয়। ক্যাপ্টেন সেলিমসহ ৮ জন জীবিত পাকিস্তানী সেনাকে আমরা ধরে ফেলি।
এ ছাড়া পালিয়ে যাওয়ার সময় আসলাম নামের আরো এক পাকিস্তানী সৈন্যকে আটক করে এলাকাবাসী। এদিন লাঠি ফালা ইটা মুগুর নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসা বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী পলায়নরত প্রায় শতাধিক রাজাকার, ম্যালেশিয়া ও আলবদরকে খতম করে। এ যুদ্ধে আহত হন মাত্র ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা। অপরদিকে আর সিএল গান, এইচএমজি, এম,এম,জি, এল. এম.জি, মর্টার, চাইনিজ রাইফেলসহ বিপুল পরিমাণ অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র আমাদের হস্তগত হয়। বন্দী ক্যাপ্টেন সেলিমের নিকট থেকে জানাযায় ২৫ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের প্রায় আড়াই শতাধিক পাকিস্তানী সেনা আধুনিক ভারী অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঐ ত্রিমুখী হামলা চালিয়েছিল। এই যুদ্ধের খবরে তৎকালিন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র হতে ১৩০ জন পাকিস্তানী সৈন্য নিহত হয়েছিল বলে প্রচারিত হয়। #
সতর্কীকরণ
সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।
কমেন্ট
অন্যান্য বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- নওগাঁয় কলেজ ফান্ডের টাকা লোপাট করলেন ইউএনও [ প্রকাশকাল : ২২ মার্চ ২০২৪ ০১.১৩ অপরাহ্ন]
- গুরু শিষ্যের প্রেমময় জীবন [ প্রকাশকাল : ১৬ মার্চ ২০২৪ ০১.০২ অপরাহ্ন]
- নওগাঁয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন [ প্রকাশকাল : ১০ মার্চ ২০২৪ ০৫.০০ অপরাহ্ন]
- ঝুঁকিপূর্ণ ঘর নিয়ে বিপাকে প্রকল্পের বাসিন্দারা [ প্রকাশকাল : ০৮ মার্চ ২০২৪ ০১.৪০ অপরাহ্ন]
- অনুমোদন ছাড়াই চলছে প্রাণিসম্পদ ব্যাংক [ প্রকাশকাল : ০৪ মার্চ ২০২৪ ০৪.০০ অপরাহ্ন]
- আশ্রয়ণের ঘর নির্মাণে নয়-ছয় [ প্রকাশকাল : ০৩ মার্চ ২০২৪ ০১.১০ অপরাহ্ন]
- নওগাঁয় অনুষ্ঠিত হলো দুদকের গণশুনানি [ প্রকাশকাল : ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০১.০০ অপরাহ্ন]
- নওগাঁর সরকারী হাসপাতাল! [ প্রকাশকাল : ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০৯.০০ পুর্বাহ্ন]
- নওগাঁর বলিহার সংরক্ষিত পুরাকীর্তি [ প্রকাশকাল : ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০৩.০০ অপরাহ্ন]
- নওগাঁয় দুদকের গণশুনানি ১৮ফেব্রুয়ারী [ প্রকাশকাল : ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০৭.০০ পুর্বাহ্ন]
- নওগাঁয় টেন্ডার ছাড়াই কেজি দরে পাঠ্যবই বিক্রি [ প্রকাশকাল : ৩০ জানুয়ারী ২০২৪ ০১.০০ অপরাহ্ন]
- বিএসএফ'র গুলিতে নিহত বিজিবি সদস্যের লাশ হস্তান্তর [ প্রকাশকাল : ২৪ জানুয়ারী ২০২৪ ০২.০০ অপরাহ্ন]
- বিএসএফের গুলিতে প্রাণ গেল বিজিবি সদস্যের [ প্রকাশকাল : ২৩ জানুয়ারী ২০২৪ ০১.০০ অপরাহ্ন]
- ৬ মাাসে রাজস্ব ঘাটতি ৩২৮ কোটি ৯২ লাখ [ প্রকাশকাল : ১৮ জানুয়ারী ২০২৪ ১২.৩০ অপরাহ্ন]
- নওগাঁয় এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ [ প্রকাশকাল : ১৭ জানুয়ারী ২০২৪ ০১.০০ অপরাহ্ন]