তারিখ : ১৭ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকায় দখলে দূষনে নাব্যতা হারা খীরু নদী

ভালুকায় দখলে দূষনে নাব্যতা হারা খীরু নদী,সেচ ব্যবস্থা বিগ্নিত বিলুপ্ত মৎস্য সম্পদ
[ভালুকা ডট কম : ২৯ নভেম্বর]
প্রভাবশালীদের ক্রমাগত মাটি ভরাট,বালু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ব আর কল কারখানার দূষিত বর্জ নেমে নাব্যতা হারিয়ে মরা খালে রুপ নিয়েছে এক সময়ের ভালুকার প্রমত্তা খীরু নদী। ফলে বিগ্নিত হচ্ছে কৃষকের সেচ ব্যবস্থা বিলুপ্ত হচ্ছে প্রাকৃতিক মৎস্য সম্পদ কর্মহীন হচ্ছে জেলে সম্প্রদায়।

বন সুন্দরী খ্যাত ক্ষীরুর মাঝখানে সরু বুকে এখন কল কারখানার দূষিত বর্জের কিচ কিচে কালো পানি আর বেশীর ভাগ অংশে গোচারণ ভূমি। কল কারখানার দূষিত বর্জ বন্ধ করন ও খীরু নদী খননের মাধ্যমে নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে এলাকাবসী সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতি বার বার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

ভালুকা উপজেলার দক্ষিন পূর্ব শ্রীপুর সমান্ত হতে প্রায় ২৫ কিলোমিটার জুরে ভালুকার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া এ নদী দুই পাড়ের কৃষকের হাজার হাজার একর বোরো জমিতে পানি সেচের একমাত্র উৎসস্থল বহু বছর পূর্ব থেকে। শুধু বোরো ফসলই নয় রবি মৌসুমে নদী হতে পাওয়ার পাম্প (দমকল) দিয়ে পানি উঠিয়ে রবিশস্য যেমন গম,বেগুন,আলু,টমেটো,মুলা, গাজর, মরিচ, সরিষা,সীম, লাউ ইত্যাদির আবাদ করে থাকেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। এক দিকে নদী ভরাট হয়ে নাব্যতা হৃাস অপরদিকে কালো বর্জে পানি সেচ অনোপযোগী হওয়ায় কৃষকরা পরেছেন বিপাকে।শুধু কৃষকরাই নয় পানি দূষিত হওয়ায় জলাশয় নির্ভর জেলে সম্প্রদায় তাদের পেশা বদলাতে বাদ্য হচ্ছেন। সারা বছর খীরু নদীর মিঠা পানি হতে মাছ ধরে জিবিকা নির্বাহ করতেন প্রায় শতাধিক জেলে পরিবার। আজ তাদের জাল ডোলা থাকলেও নদীতে মাছ নেই।

শনিবার দুপুরে ভালুকা মল্লিকবাড়ী ব্রীজের উত্তর দিকের নদীতে উড়া জালে মাছ ধরছিলেন সুবল মাঝি। তিনি জানান বহুদিনের অভ্যাস ছাড়াইতে পারিনা মাছ পাইনা, পানিতে নামলে আলকাতরার মত শরীরে আঠা লাগে চুলকায়, দশ খেও দিলে দুই চারটা টেংরা পুটি পাওয়া যায়, খাওয়া চলে কোন মতে বেচন যায়না। তিনি জানান এক সময় এই নদীর মাছ তাদের ভাত কাপড়ের জোগান দিত।   

আশির দশকেও থানার ঘাট মানেই লঞ্চের ভেঁপু আর যাত্রীদের তারাহুড়ো সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে আবার সিড়ি বেয়ে নীচে লঞ্চের ডেকে কাঠের সীটে বসে ইঞ্জিনের ঠক ঠক শব্দে ঢেও তুলে এগিয়ে যাওয়া। রেল গাড়ীর সাথে সময় মিলিয়ে ইত্তেফাক আর লেমুয়া নামে দুটি লঞ্চ ভালুকা হতে কাউরাদ পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন করতো প্রতিদিন। সেই থানার ঘাট নেই থানার পাশেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহা সড়কে খীরু নদীর উপর শোভা পাচ্ছে পাশাপাশি দুটি সেতু। নদী আছে পানি নেই পাল তোলা নৌকা নেই লঞ্চের ভেঁপুর শব্দ শোনা যায়না দুরের বাঁকে। ভাটি হতে বেপারিদের পালতোলা নৌকা, বেদে নৌকার লম্বা বহর মাঝিদের দাঁড় টানার ছলাৎ ছলাৎ শব্দ তীরে চলা পথিকের নজর কাড়ে না। চাঁদনী রাতে মাঝ নদীতে নৌকার পাটাতনে খোল করতাল আর ঘোংরোর শব্দে ঘাটু গানে রাতভর মেতে থাকেনা ঘেটুর দল। নদীর মাঝে মাঝে পানির উপর হিজল গাছের শাখায় পানকৌরি আর বালি হাস সকলের দৃষ্টি ফেরাত।

মানুষ ও প্রকৃতির নির্মমতা বন খীরুর রুপ কেড়ে নিয়েছে। স্বচ্ছ সাদা নির্মল খীরুর বুকে এখন শুধুই কল কারখানার দূষিত বর্জের কালো পানি। ভালুকার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠা অসংখ্য কল কারখানার দূষিত গরম কালো বর্জ পানি দিন রাত খীরু নদীতে ফেলা হচ্ছে। আর তাতে নষ্ট হচ্ছে এলাকার পরিবেশ হারিয়ে যাচ্ছে পোখ পাখালী, মিঠা পানির নানা প্রজাতির মাছ ধ্বংস হচ্ছে সবুজ শ্যামল বনাঞ্চল । বোরো অধ্যোষিত ভালুকার কৃষকদের সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে দাবী নদীটি পুনঃখননের মাধ্যমে পূর্বের নাব্যতা ফিরিয়ে এনে ফসল উৎপাদনে দেশকে এগিয়ে নিতে চাষীদের সহযোগিতা দিন।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই