তারিখ : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

নদী দখল ও দূষণের শাস্তি বৃদ্ধি করে নতুন আইন

নদী দখল ও দূষণের শাস্তি বৃদ্ধি করে নতুন আইন: সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছরের কারাদণ্ড
[ভালুকা ডট কম : ১১ ডিসেম্বর]
নদী দখল ও দূষণের শাস্তি বৃদ্ধি করে নতুন আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। ইতোমধ্যেই ‘জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইন, ২০২০’ এর খসড়া তৈরী করেছে কমিশন। আইনের খসড়ায় নদীর দখল ও দূষণের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছরের কারাদণ্ড বা পাঁচ কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

২০১৩ সালের নদী রক্ষা কমিশন আইনে এই ধরনের অপরাধের জন্য কোনো শাস্তি নির্ধারিত ছিল না। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, নদী দূষণ ও দখল রোধে সুপারিশ করা ছাড়া নদী রক্ষা কমিশনের কোনো দায়িত্ব নেই। তবে প্রস্তাবিত নতুন আইন অনুযায়ী, কমিশন নদী দখল ও দূষণ রোধ এবং নদীর উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে নির্দেশনা দেবে। এই নির্দেশনা মানতে সংস্থাগুলো বাধ্য থাকবে। সংস্থাগুলো তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করে কমিশন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে। খসড়া আইনে নদী সংক্রান্ত অপরাধের বিচারের জন্য ‘নদী রক্ষা কোর্ট’ গঠনের বিধান রাখা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের মতামত নেয়ার পর চলতি মাসের মধ্যে খসড়া আইনটি মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন নদী রক্ষা কমিশনের কর্মকর্তারা।বর্তমান আইনে চারটি অধ্যায়ে ২১টি ধারা রয়েছে। আর খসড়া আইনটিতে ১৪টি অধ্যায়ে ১০৮টি ধারা সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়া, শাস্তি সংক্রান্ত তিনটি তফসিল রয়েছে।

এ প্রসংগে, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান জানান, পরিবেশবাদীদের আন্দোলনের ফলে নদী কমিশন গঠন করা হলেও তাকে ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। তাই কমিশনের আওতা বাড়িয়ে নদীর দখল-দুষন রোধে  শাস্তির মাত্রা বৃদ্ধি এবং নদী বিষয়ক আদালত গঠনের বিধান  সম্বলিত আইন প্রনয়ন এখন সময়ের দাবী।

এ প্রসংগে পরিবেশ আইনজীবি এডভোকেট মঞ্জিল মুরশিদ জানান, নদী বিষয়ক তার দুটি রীটের প্রেক্ষিতে নদী কমিশন গঠন এবং কমিশনকে নদীর অভিভাবক ঘোষণা করা হলেও তার এক্তিয়ার ও  আইন যথেষ্ট ছিলনা। নথির খসড়া আইনটি কার্যকর হলে নদী রক্ষা, নদীকে দূষণমুক্ত রাখা এবং অপরাধীদের শাস্তিবিধান করা সহজ হবে।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার গণমাধ্যমকে বলেছেন, ইতোমধ্যে আদালত দুটি আদেশ দিয়েছেন-তারা কমিশনকে নদীর অভিভাবক নির্ধারণ করে দিয়েছেন। নদী রক্ষা ও উন্নয়নে কমিশন সব কাজ করতে বাধ্য বলেও আদালত আদেশ দিয়েছেন। আমরা আদালতকে দেখিয়ে দিয়েছি যে,  গত কয়েক বছরে নদী রক্ষায় যেসব সুপারিশ দিয়েছি সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো তা ফেলে রেখেছে, তারা কোনো কাজ করেনি। নদী রক্ষা কমিশন আইনে না থাকলেও অন্যান্য আইনে নদীর দখল-দূষণের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার বিধান আছে। সেটা না নেয়ায় নদী দখল ও দূষণ বন্ধ হচ্ছে না। এ অবস্থায় আমরা সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে গিয়ে কিছু কাজ করাতে পেরেছি।

তিনি জানান, এ পর্যন্ত আমরা প্রায় ৫৮ হাজার নদী দখলদার ও দূষণকারীর তালিকা প্রকাশ করেছি। এরমধ্যে ১৯ হাজারের মতো দখলদার উচ্ছেদ করেছি। আমরা নির্বাহী ক্ষমতা খাটিয়ে এই কাজগুলো করেছি, কিন্তু আইনে তো সেটা নেই। আইনের বলে আমরা সেটা করতে পারছি না।

কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, আমরা চাইছি যে, নদীর দখল-দূষণ রোধে সংস্থাগুলোকে যেমন- বিআইডব্লিউটিএ,পরিবেশ অধিদফতর, পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা প্রশাসনসহ অন্যান্যদের যে ক্ষমতা দেয়া আছে সেটার ব্যবহার তারা করুক। যদি সেটা তারা না করে তবে তাদের জবাবদিহি করতে হবে কমিশনের কাছে। তাদের যুক্তি গ্রহণযোগ্য না হলে তখন আমরা আমাদের ক্ষমতা ব্যবহার করব, কারণ নদীকে তো রক্ষা করতেই হবে। নদী রক্ষায় কমিশনকে সংস্থাগুলো যে কোনো সহযোগিতা দিতে বাধ্য থাকবে। অন্যথায় আমরা তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করে দেব। এসব বিষয়ই আইনের খসড়ায় থাকছে।

কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমান আইনে নদী দখল ও দূষণকারীদের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট শাস্তির কথা নেই।  তবে দণ্ডবিধিতে নদীর প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করার শাস্তির কথা আছে। পরিবেশ আইনেও নদী দখল-দূষণের বিষয়ে শাস্তির বিধান আছে। পানি আইনেও নদী সংক্রান্ত অপরাধের জন্য শাস্তির বিধান রয়েছে। কিন্তু নদীর ক্ষেত্রে এই আইনগুলোর বাস্তবায়ন তারা করছে না। নদী দখল ও দূষণের জন্য কাউকে কারাদণ্ড পেতে হয়নি। শুধু কিছু জরিমানা করা হয়েছে।

তিনি জানান, নতুন কমিশন আইনে ওই আইনগুলোর শাস্তির বিষয়গুলো উল্লেখ করা থাকবে। একইসঙ্গে নদী সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অপরাধের শাস্তি নির্দিষ্ট করে দেয়া হবে। আইনের প্রয়োগে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ব্যর্থ হলে জবাবদিহি করতে হবে কমিশনের কাছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা এমনকি ক্রিমিন্যাল অ্যাকশনও নেয়া যাবে। কমিশন এই ব্যবস্থা নিতে পারবে।’ তিনি বলেন, ‘নতুন আইনে নদী রক্ষা কোর্ট করার বিধান প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে  প্রচলিত আদালতেও বিচার চলবে, মোবাইল কোর্টও থাকবে। এ ফলে মামলা নিষ্পত্তিতে গতি আসবে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

জাতীয় বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই