তারিখ : ২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

পার্ক কর্মকর্তাদের ব্যস্ত রেখেছে উট পাখির ছানাগুলো

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্ক
পার্ক কর্মকর্তাদের ব্যস্ত রেখেছে উট পাখির ছানাগুলো
[ভালুকা ডট কম : ০১ ফেব্রুয়ারী]
গাজীপুরের শ্রীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কে বেশ কয়েকবার উটপাখি ডিম দিয়েছিল। প্রাকৃতিকভাবে ডিম দেয়ার পর উটপাখিগুলো ডিমে পর্যাপ্ত “তা” না দেয়ায় ডিম ফুটে বাচ্চার জন্ম হচ্ছিল না। এনিয়ে ভাবনায় পড়েন পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী বন সংরক্ষক তবিবুর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।

নিজ উদ্যোগে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে নোয়াখালীর সাইফুল ইসলামের তৈরী একটি ইনকিউবেটর ১৩ হাজার টাকা দামে সংগ্রহ করেন। পরে ইনকিউবেটরটি পার্কে স্থাপন করে চলতি মৌসুমে উটপাখির কিছু ডিম সংগ্রহ করে তিনি ইনকিউবেটরে দেন। সেখান থেকেই ডিম ফুঁটে বের হয়ে আসে উটপাখির ৪ ছানা। কৃত্রিমতার এই সফলতার সাথে পার্কের প্রাকৃতিক পরিবেশে এবছর আরো ৬টি ছানার জন্ম হয়েছে। চলতি বছর জন্ম হওয়া নতুন ১০ছানা নিয়ে সাফারী পার্কে উটপাখির সংখ্যা দাঁড়ালো ১৬টিতে।

তিনি জানান, ইনকিউবেটরে ফোটা বাচ্চা গুলোকে প্রথমে উট পাখি বেষ্টনীতে দেয়া হয়। কিন্তু প্রাপ্ত বয়স্ক উট পাখিগুলো নতুন বাচ্চা গুলোকে মেনে নিতে পারছিলো না। প্রাপ্ত বয়স্ক উট পাখিগুলোর বাচ্চা গুলোকে তাপ না দেয়ায় তীব্র শীতে বাচ্চাগুলোর ক্ষতি হতে পারে, এ চিন্তায় পার্কের একটি কক্ষে হাতে তৈরী ব্রোডারের বৈদ্যুতিক বাতির মাধ্যমে তাপ দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু পর্যাপ্ত তাপের অভাবে বাচ্চা গুলো শীতে জুবুথুবু অবস্থা তৈরী হয়। মধ্য রাতে পার্কের ১৫কিলোমিটার দুর থেকে অপর একটি ব্রোডার কিনে এনে বাচ্চা গুলোকে বৈদ্যুতিক বাতির সাহায্যে তাপের ব্যবস্থা করা হয়। পরবর্তীতে পুনরায় বেষ্টনীর মাঝে একটি বিশেষ জায়গা তৈরী করে বাচ্চাগুলোকে বৈদ্যুতিক লোড শেডিংয়ের বিড়ম্বনা থেকে মুক্ত রাখতে ২৪ঘন্টা জেনারেটরের পাশাপাশি সোলারের লাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও একজন জুনিয়র ওয়াউল্ড স্কাউট সমীর সুর চৌধুরী সার্বক্ষণিক দাঁড়িয়ে থেকে বাচ্চা গুলোর দেখাশুনা করছেন এবং সুপারভাইজার আনিসুর রহমান দিকে সাত থেকে দশবার খাবার দিচ্ছেন। একজন চিকিৎসক দিনে কয়েকবার বাচ্চাগুলোকে দেখভাল করছেন।

সাফারী পার্কের ওয়াইল্ডলাইফ সুপারভাইজার আনিসুর রহমান বলেন, উটপাখি এক প্রকারের বৃহৎ, উড্ডয়নে অক্ষম আফ্রিকান পাখি। এদের উচ্চতা সর্বোচ্চ ৩মিটার ও ওজন ১৫০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এরা দৌড়বাজ হিসেবে পরিচিত। ঘন্টায় দৌঁড়াতে পারে ৭০কিলোমিটার পর্যন্ত। এরা তৃণভোজী পাখি। প্রাকৃতিক পরিবেশে একটি উটপাখি অর্ধশতাধিকের উপর ডিম দিয়ে থাকে। একটি ডিমের ওজন হয়ে থাকে দেড় কেজি পর্যন্ত।

তিনি আরো বলেন, পার্ক প্রতিষ্ঠালগ্নে দক্ষিন আফ্রিকা থেকে দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য ৬টি উটপাখি আনা হয়েছিল। পরে অসুস্থ হয়ে সেখান থেকে একটি উটপাখি মারা যায়। এর পর প্রতিবছরই উটপাখি ডিম দিলেও পর্যাপ্ত তা না দেয়ায় কয়েক বছরে মাত্র একটি ছানা পাওয়া যায়। বাকী ডিমগুলো নষ্ট হয়ে যায়। প্রতিবছর এতোগুলো ডিম নষ্ট হওয়ায় পার্ক কর্তৃপক্ষের মধ্যে একপ্রকার অস্বস্তি বিরাজমান ছিল। যদিও এ বছরের সফলতায় সব কেটে গেছে।

ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তবিবুর রহমান আরও বলেন, দেশের বৃহৎ এই সাফারী পার্ক দর্শনার্থীদের বিনোদনের পাশাপাশি  দেশী বিদেশী নানা ধরনের প্রাণীর সফল প্রজননে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এতোদিন প্রাকৃতিক পরিবেশে উটপাখি ডিম দিয়ে তাতে তা না দেয়ায় তা নষ্ট হয়ে যেত। এ মৌসুমে ইনকিউবেটর স্থাপন করে কৃত্তিমভাবে  ৪টি ছানা পাওয়া গেছে। এছাড়াও ডিম দেয়ার পর নজরদারী করায় প্রাকতিকভাবে আরো ৬টি ছানা মোট ১০টি ছানার জন্ম হয়েছে। এ ছানাগুলোর বয়স এখন প্রায় এক মাস হলেও আরো কয়েকমাস এদের বিশেষ পর্যবেক্ষনে রাখার পর তা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

বিনোদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই