তারিখ : ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী কূপিবাতি

বিজলীর আলোর ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী কূপিবাতি
[ভালুকা ডট কম : ০১ মার্চ]
বিদ্যুৎ মানুষের এক অনন্য আবিষ্কার। আর এই বিজলীর আলো অর্থ্যাৎ বিদ্যুতের ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার হাতবাতি ও চুঙ্গা শিল্প। আঞ্চলিক ভাষায় এটি কূপিবাতি নামে বেশি পরিচিত। এক সময় কেরোসিনের হাতবাতি বা কূপিবাতি ছিল রাতের আঁধার নিবারণের একমাত্র অবলম্বন। আর এ বাতিতে কেরোসিন ঢুকানোর জন্য চুঙ্গা ছিল একমাত্র উপাদান। প্রযুক্তি ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় বর্তমানে গ্রামে লেগেছে শহরের ছোঁয়া। নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার প্রায় সব বাড়িতেই পৌছে গেছে বিদ্যুৎ, রাতে গ্রামের রাস্তার পাশে জ্বলছে লাম্পপোস্ট।

এক সময় ক’পি বাতির এই শিল্প ছিল লাভজনক। বাতি ও চুঙ্গা তৈরী করে আনেক পরিবার জীবিকা নির্বাহ করতো। টিন, কাঁচ, মাটি এই তিন উপাদান দিয়েই তৈরি করা যায় হাতবাতি। কাঁচের বাতি গুলোর দাম ছিল ৪০/৫০ টাকা, টিনের বাতিগুলোর দাম ছিল ২০/৩০ টাকা আর মাটির বাতিগুলোর দাম ছিলো ৫/১৫ টাকা। উপজেলার বিভিন্ন বাড়িতে তৈরি হতো এই শিল্প। এ উপজেলার হাত বাতি একসময় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে নিয়ে যেতো। আর এ শিল্প এখন নেই বললেই চলে।

এক সময় বিদ্যুৎ চলে গেলেও হাত বাতির ও চুঙ্গার চাহিদা ছিল। তখন কিছু কিছু মানুষ এ পেশাকে আকড়ে ধরে সংসার চালাতো। কিন্তু বর্তমানে বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে বিদ্যুতের বিকল্প হিসেবে অনেক সহজলভ্য ইলেকট্রিক উপকরনগুলো তৈরি করছেন। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইমারজেন্সী লাইট, চার্জার লাইট, এলইডি লাইট, আইপিএস, সোলার প্যানেলসহ বিভিন্ন উপকরন। এগুলো বর্তমান বাজারে কম দামে হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে। কারণ বিদ্যুৎ চলে গেলে মানুষ বিকল্প হিসেবে এসব জিনিস ব্যবহার করে থাকেন। যার ফলশ্রুতিতে কেরোসিনের হাতবাতি ও চুঙ্গার চাহিদা উদ্বেগজনক হারে কমে গেছে।

আগে উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে সন্ধ্যা হলেই টিম টিম করে জ্বলতো কোরোসিন তেলের হাতবাতি। কিন্তু সময়ের সাথে এখন হাট বাজারে জ্বলে উঠে বিদ্যুৎতের আলো। তাই গ্রামের হাটবাজারগুলোতে এখন আর কেরোসিনের বাতি ও চুঙ্গা এখন আর চোখ পড়েনা।

গ্রামের মানুষরা সামর্থ্য অনুযায়ী কূপি কিনে ব্যবহার করতেন। বাজারে সাধারণত দুই ধরনের ক’পি পাওয়া যেত বড় ও ছোট। বেশি আলোর প্রয়োজনে ক’পি বাতিগুলো কাঠ এবং মাটির তৈরি গছা অথবা স্ট্যান্ডের উপর রাখা হতো। এই গছা অথবা স্ট্যান্ডগুলো ছিল বাহারি ডিজাইনের। রূপসী-গ্রামবাংলা আপামর মানুষের কাছেু ক’পি বাতির কদর কমে গেলেও আবার কেউ কেউ এই ক’পি বাতির স্মৃতি আঁকড়ে ধরে আছেন। আবার অনেকেই স্ব-যত্নে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের নিদর্শন স্বরূপ ক’পি বাতি সংরক্ষণ করে রেখেছেন। ক’পি বাতির ব্যবহার ও কদর যে হারে লোপ পাচ্ছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে এটি শুধুই স্মৃতি হয়ে থাকবে অথবা কোন এক যাদুঘরে সংরক্ষন করে রাখা হবে আগামীর প্রজন্মের কাঝে তুলে ধরার জন্য।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

জীবন যাত্রা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই