তারিখ : ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

নদীতে বিলীনের পথে নওগাঁর প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

নদীতে বিলীনের পথে নওগাঁর প্রত্যন্ত গ্রামের কয়েকটি ঐতিহ্যবাহী প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,রক্ষার কোন পদক্ষেপ নেই কর্তৃপক্ষের
[ভালুকা ডট কম : ০৯ মার্চ]
ছোট যমুনা ও আত্রাই নদী বেষ্টিত নওগাঁর আত্রাই উপজেলা। এই উপজেলার ৩টি ঐতিহ্যবাহী প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীর ভাঙ্গনের ফলে বিলীনের পথে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই সব ঝুঁকিপূর্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষার কোন পদক্ষেপ নেই কর্তৃপক্ষের। যদি এই শুকনো মৌসুমে বিদ্যাপিঠগুলো রক্ষার কোন পদক্ষেপ দ্রুত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা না হয় তাহলে আগামী বর্ষা মৌসুমে নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ১৭৫৭সালে প্রতিষ্ঠত আটগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়টির পূর্ব পাশ দিয়ে বয়ে গেছে এক সময়ের খরস্রােতা ছোট যমুনা নদী। বছরের পর বছর নদীর ভাঙ্গনে ভাঙ্গনে বিদ্যাপিঠটি বর্তমানে নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। কয়েকটি গাছ বিদ্যালয়টিকে পুরোপুরি বিলীনের হাত থেকে রক্ষা করে আসছে। এছাড়াও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসী মিলে বিদ্যালয়টি নদীর ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য সিমিত অর্থ দিয়ে একটি সুরক্ষা প্রাচীর তৈরি করলেও কোন লাভ হয়নি। নদী ও বিল বেষ্টিত কয়েকটি গ্রামের শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের এটিই একমাত্র বিদ্যাপিঠ।

এছাড়াও নদীর পাশ দিয়ে কোন নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকায় খেলার সময় শিশুরা নদীতে পড়ে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। শুকনো মৌসুমেই বিদ্যালয়টি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ন হলেও আগামী বর্ষা মৌসুমে বিদ্যাপিঠটি কোমল মতি শিশুদের জন্য একটি মরণ ফাঁদে পরিণত হবে। তাই শুকনো মৌসুমেই যদি বিদ্যায়লটিকে নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে যদি রক্ষা করার পদক্ষেপ গ্রহন করা না হয় তাহলে আগামী বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি এলেই বিদ্যালয়টি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। নিভে যাবে প্রায় ২শত বছরের পুরনো প্রাথমিক শিক্ষার বাতিঘরটি। এছাড়াও উপজেলার বাউল্লাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গুড়নই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একই অবস্থা।

আটগ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা মতিউর রহমান, রফিকুল ইসলামসহ অনেকেই বলেন এই শুকনো মৌসুমে দ্রুত পরিকল্পনা গ্রহণ করে বিদ্যালয় সংলগ্ন নদীর তীরবর্তি ভাঙ্গন অংশ মেট্টোসিম, ব্লক কিংবা জিওব্যাগ দিয়ে সুরক্ষা প্রাচীর নির্মাণ করতে হবে। প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকার কোমলমতি শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের বিদ্যাপিঠ রক্ষা করাসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানের জন্য সরকার বাহাদুরের অতিদ্রুত সুদৃষ্টি কামনা করছি আমরা।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুকুল উদ্দিন বলেন বিদ্যাপিঠটি বিলীন হয়ে গেলে এই অঞ্চলের শিশুরা অপূরনীয় ক্ষতির মুখে পড়বে। আমি এই বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার লিখিত ভাবে জানিয়েছি কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন লাভ হয়নি। তাই আমরা সবাই বিদ্যালয় নিয়ে মহা হতাশার মধ্যে দিনানিপাত করছি।

আটগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যবস্থা কমিটির সভাপতি শহীদুল ইসলাম বলেন বিদ্যালয় ও স্থানীয় গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় কয়েক বছর আগে একটি নামমাত্র সুরক্ষা প্রাচীর তৈরি করা হয়েছিলো। কিন্তু সেটি নদীর পানির তোড়ে ভেঙ্গে গেছে। এখানে বড়ধরনের অর্থ বরাদ্দ ও সুপরিকল্পনা মাফিক প্রকল্প প্রয়োজন। তা না হলে আগামী বর্ষা মৌসুমে বিদ্যাপিঠটি নদী নর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দীক মোহাম্মদ ইউসুফ রেজা বলেন ইতিমধ্যেই নদীর ভাঙ্গনে বিলীনের পথে আটগ্রাম, বাউল্লাপাড়া ও গুড়নই বিদ্যালয়গুলো আমরা পরিদর্শন করে পরবর্তি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন পাঠিয়েছি। প্রকৃতপক্ষে আমামের মন্ত্রণালয় বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত বিষয়গুলো দেখভাল করে কিন্তু নদীর তীর সংক্রান্ত বিষয়গুলো পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায়। তাই বিদ্যালয়গুলো যাতে রক্ষা করা যায় সেই বিষয়ে আমরা কাজ করছি।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফউজ্জামান খাঁন বলেন ইতিমধ্যেই আমরা আটগ্রাম বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে পরবর্তি করনীয় বিষয়ে একটি চাহিদাপত্র উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠিয়েছি। অর্থ বরাদ্দ ও পরবর্তি নিদের্শনা পেলেই আমরা কাজ শুরু করবো।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

শিক্ষাঙ্গন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই