তারিখ : ২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

মদনে ৬ হাজার হেক্টর বোরো ধানের জমি চিটা

মদনে ৬ হাজার হেক্টর বোরো ধানের জমি চিটা, প্রনোদনা পাবে কিনা এ নিয়ে অনিশ্চিয়তায় ভুগছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার
[ভালুকা ডট কম : ১১ এপ্রিল]
সামান্য বোরো জমি চাষ করে আসছে নেত্রকোনার মদন উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের সাইতপুর গ্রামের ফুলচান মিয়া। স্ত্রী দুই সন্তান  ও বৃদ্ধ মাকে নিয়ে বেশ ভালোভাবেই পরিবার চলত ৫০শতাংশ (৫কাটা)  বোরো জমি চাষ ও রিক্সা চালিয়ে । তবে জীবন যাত্রার মান রাখতে গিয়ে সঞ্চয় তেমন ছিল না। আর্থিক অসচ্ছলতা থাকার সত্বেও তাদের বিশ্বাস আর স্বপ্ন ছিল  এবার জমিতে যে ধান হয়েছে পরিবার পরিজন নিয়ে ভালভাবে সামনের দিন গুলি অতিবাহিত করতে পারবে। কিন্তু সামনে এসে  বাধা হয়ে দাড়ায় অজানা অচেনা একটি দমকা হাওয়া। তাদের জীবনে প্রলয় তুলে দিয়েছে। বোরো ধানের জমিতে(হিট শট) চিটা হওয়ার পর থেকে পরিবার নিয়ে দুশ্চিন্তা শুরু হয়েছে।   ফুলচানের মতো  চিটায় ক্ষতিগ্রস্তরা পরিবার গুলো  সরকারি প্রনোদনা পাবে কিনা এ নিয়ে  অনিশ্চিয়তায় ভুগছেন ।

জেলার সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে এ উপজেলায়। হিট শটে প্রায় ৬ হাজার হেক্টর বোরো ধানের জমিতে  চিটা হওয়ায়  কৃষক শ্রেণির পরিবার এখন স্থবির হয়ে গেছে। এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার  গুলো চলতে হিমশিম খাচ্ছে।  দৈনন্দিন জীবনের চাহিদাকে কাটছাট করতে গিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছে পরিবারের কাছে। সব মিলিয়ে তাদের এ করুণ দশা কাউকে বলা সম্ভব না সামাজিক মর্যাদার কারণে। চাইলেও কারো কাছে হাত পাতা সম্ভব নয়।  ফুলচানের  মতো পরিস্থিতিতে আছে মদন উপজেলার কৃষি অফিস সূত্র মতে ৮ হাজার ৫৫০ পরিবার। এ চিটায়  মানুষের  সাড়া বছরের আয় রোজগারের পথ রুদ্ধ  করে দিয়েছে। উপজেলার  প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ সীমাহীন দূর্ভোগে পড়েছে।

দেশে বিশ্ব মহামারী করোনার কারনে কাজের সন্ধানে বাড়ি ছেড়ে শহরেরও যেতে পারছেনা ক্ষতিগ্রস্ত এ পরিবার গুলো।  অন্যদিকে পাচ্ছেনা সরকারি কোন প্রনোদনা। যা আসবে তাও তাদের কপালে জোটবে কিনা এ নিয়েও দুশ্চিন্তার শেষ নেই। আচমকা এ বাতাস সব কিছুই বদলে দিয়েছে। এখন কোনভাবে তাদের বেঁচে থাকাটাই মুখ্য বিষয়। হাওরাঞ্চল মানুষের জীবনের টিকে থাকার লড়াইতে বোরো জমিতে চিটা দারিদ্রতার মুখে দাঁড় করে দিয়েছে। সেখান থেকে মুক্তি পাবার উপায় বলা  হাওরবাসীর তেমনই মুশকিল ।

সাইতপুর গ্রামের  ফুলচান মিয়া যুগান্তরকে  জানান,অনেক কষ্ট করে ৫ কাটা জমি করে ছিলাম। এ জমিটিই ছিল আমার সারা বছরের কুরাক। চিটায় সব শেষ হয়ে গেল। আমরা সংসার কেমনে চলবে ? রিক্সাতে মানুষ বেশি চলে না। সারা বছরের কুরাক কেমনে কিনব ? সরকার যে সাহায্য দিবে আমরার মতো লোককি পাইব ?

গোবিন্দশ্রী বড়হাটি গ্রামের রমজান,কদ্দুছ মিয়া জানান, আমরা পথে বসে গেছি। সারা বছর এ ফসলের দিকে থাকিয়ে থাকি। এ ফসল দিয়ে পেলাা হানের খরচ,ঋন পরিশোধ, হালখাতা পরিশোধ সকল কিছুই এ দিয়ে চলত। এখন কেমননে চলব ? সরকার যে  সাহায্যের কথা বলছে তা কি আমরা পাব ? না যাদের মাথায় তেল আছে তারাই পাবে ? এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

মদন উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান বলেন,সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এলাকায় পরিদর্শন করেছেন। তবে যারা প্রকৃত কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এ বিষয়ে আমরা সঠিকভাবে তদরকি করেই তালিকা প্রস্তুত কওে কর্তৃপক্ষের বরাবর প্রেরণ করব।

ইউএনও বুলবুল আহমেদ বলেন,সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদেও তালিকা চাওয়া হয়েছে। যারা প্রান্তিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদেও তালিকা মাঠ প্রশাসনের লোকজন তৈরি করছে। সরকার অচিরেই প্রনোদনার ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তালিকা প্রস্তুতে কোন অনিয়মের সুযোগ নেই।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

কৃষি/শিল্প বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই