তারিখ : ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

নওগাঁয় মাদ্রাসা সুপারের চাকুরি না থাকলেও বেতন আছে

নওগাঁয় জামায়াত নেতা মাদ্রাসা সুপারের চাকুরি না থাকলেও বেতন আছে,স্বপদে পুন:বহালের তোড়জোড়
[ভালুকা ডট কম : ১৮ এপ্রিল]
নওগাঁর রাণীনগরের আল-আমিন দাখিল মাদ্রাসার সুপার জামায়াত নেতা শরিফ উদ্দিন মাজহারীর চাকরী না থাকলেও বেতন পাচ্ছেন। এছাড়া মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে তাকে সুপারের পদে পুনর্বহালের জন্য পায়তারা করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে। এতে করে বর্তমানে মাদ্রাসার কমিটি ও শিক্ষক সমাজে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ জুলাই ২০১৬ইং তারিখে তার নিজ বাড়ি থেকে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে পুলিশ গ্রেফতার করেন তাকে। বেশ কিছু দিন হাজতে থাকার কারণে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি গত ২৩জুলাই ২০১৬ ইং তারিখে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। পরে অধিকতর তদন্তে ওই সুপারের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদে অমিল, নাগরিকত্ব ও শিক্ষক স্টাফিং প্যাটার্নে গড়মিলসহ নানা অসংগতি পাওয়ায় ১৮/০২/২০১৮ইং তারিখে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ চুড়ান্ত বরখাস্তের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তা অনুমোদনের জন্য আপিল এ্যান্ড আরবিট্রেশন পাঠানো হয়। তখন থেকেই তার সরকারি অংশের বেতন ভাতা বন্ধ থাকলেও হঠাৎ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাকে চাকুরিতে পুণঃবহাল না করে রহস্যজনক কারণে ৩মাসের বেতন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার নছিরপুর গ্রামের মোঃ আব্দুর রহমানের ছেলে শরিফ উদ্দিন মাজহারী ১জানুয়ারি ১৯৯৪ সালে রাণীনগর আল আামিন দাখিল মাদ্রাসায় সুপার পদে চাকুরিতে যোগদান করে। শুরুতেই তার নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে নানান ধরণের অনিয়মের অভিযোগ উঠলেও বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক ছত্র ছায়ায় নিয়মনীতিতে তোয়াক্কা না করে বিশেষ ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে চাকুরি করে যান তিনি। কিন্তু ১৩ জুলাই ২০১৬ সালে রাণীনগর থানা পুলিশ গোপন সংবাদে জানতে পারে মোঃ শরিফ উদ্দিন মাজহারীর পূর্ব বালুভরা গ্রামের ভাড়াকৃত বাসায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবি’র ১৪ থেকে ১৫ জন সক্রিয় সদস্য জঙ্গী তৎপরতা চলানোর উদ্দেশ্যে গোপন বৈঠক করছেন। এমন সংবাদে পুলিশ তার বাড়ি ঘিরে ফেলে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মিটিংয়ে থাকা জেএমবি’র সদস্যরা পালিয়ে গেলেও শরিফ উদ্দিন মাজহারীকে মুক্তির আলোর পথ নামক ১৬টি জিহাদী বই, একটি ইসলাম বিরোধী তথ্য সন্ত্রাস বই এবং তিনটি কথিত ককটেলসহ তাকে গ্রেফতার করে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলায় জেল হাজতে প্রেরণ করেন। পরে রাণীনগর থানা পুলিশ তার বিরুদ্ধে ২৭১নং অভিযোগ পত্র দাখিল করলে ওই তথ্যের ভিত্তিতে রাণীনগর আল-আমিন দাখিল মাদ্রাসার ম্যানিজিং কমিটি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কে আহবায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত শেষে ১৪-০১-১৮ইং  প্রতিবেদনে ওই সুপারের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদে অমিল, নাগরিকত্ব ও শিক্ষক স্টাফিং প্যাটার্নে গড়মিলসহ নানা অসংগতি পাওয়ায় তাকে চুড়ান্ত বরখাস্ত অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট  সুপারিশ প্রেরণ করে। পরে শরিফউদ্দিন মাজহারী ২০১৭ সালে হাইকোটে ১২১৫০/২০১৭ নং একটি রিটপিটিশন দায়ের করলে তা ১ জুলাই ২০১৯ সালে তার রিটপিটিশন মহামান্য হাইকোট বাতিল করেন।

শরিফ উদ্দিন মাজহারী জানান, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটিই প্রধান। বেশ কিছুদিন আমার বেতন বন্ধ ছিলো। কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি আমাকে ৩ মাসের বেতন দিয়েছে। আশা করছি সকল সমস্য কাটিয়ে শিঘ্রই আমাকে কর্তৃপক্ষ স্বপদে বহাল করবেন। আমার বিরুদ্ধে যে মামলা দেওয়া হয়েছে তা ষড়যন্ত্রমূলক এবং মিথ্যা।

মাদ্রাসার সুপার (ভারপ্রাপ্ত) রফিকুল ইসলাম জানান, চুড়ান্ত বরখাস্তকৃত সুপার শরিফ উদ্দিন মাজহারীকে বিধি সম্মত ভাবে বেতন দেওয়ার সুযোগ না থাকলেও বিশেষ চাপের কারণে তাকে ৩ মাসের বেতন দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে আমরা খুব বেকায়দায় আছি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আমিন জানান, আমি কয়েক মাস আগে যোগদান করেছি। ওই প্রতিষ্ঠান বিষয়ে আমার তেমন কিছু জানা নেই। যতটুকু জানি সুপারের ব্যাপারে মামলা রয়েছে। তার পরও যদি কমিটি বেতন দিয়ে থাকে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

লাইফস্টাইল বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই