তারিখ : ১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কে বিরল ও বিপন্ন উদ্ভিদের বাগান

বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কে বিরল ও বিপন্ন উদ্ভিদের বাগান
[ভালুকা ডট কম : ২৫ জুন]
সোনালু, শাল গাছের সহযোগী বৃক্ষ হিসেবে সারাদেশেই ছড়িয়ে ছিল এক সময়। তবে বর্তমানে এ উদ্ভিদটি বিপন্নের তালিকায়। একটা সময় “হলদু”র দেখা মেললেও এখন দেশে হাতে গোনা কয়েকটি বৃক্ষ রয়েছে। বাংলাদেশের প্রকৃতি হাজারো নাম জানা ও অজানা উদ্ভিদে পরিপূর্ণ ছিল একটা সময়। কালের বিবর্তনে এখন অনেক উদ্ভিদ বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এর ফলে প্রকৃতি প্রতিনিয়তই হারিয়েছে তার স্বকিয়তা। আশার কথা, গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আমাদের প্রকৃতি থেকে বিপন্ন হয়ে পড়া উদ্ভিদ নিয়ে একটি বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। উদ্দেশ্য হারানো এসব উদ্ভিদগুলো প্রকৃতিতে ফিরিয়ে আনা। যা প্রয়োজন অন্তত প্রাণীকুলের বেঁচে থাকার তাগিদে।

সাফারী পার্ক কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্য মতে, দেশের সর্ববৃহৎ এই সাফারী পার্কে একদিকে দেশী বিদেশী প্রাণীর সমাহার রয়েছে। প্রাকৃতিক পরিবেশ পাওয়ায় উল্লেখযোগ্য ভাবে প্রাণীর প্রজনন হচ্ছে। তবে উল্লেখ করার বিষয় দর্শনার্থীদের বিনোদনের পাশাপাশি পার্কটি আধুনিক বায়োডারভারসিটি হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ৩৬৯০একর জমিতে গড়ে উঠা এই সাফারী পার্কের সীমানাপ্রাচীরের ভেতরেই প্রায় ৩৪হেক্টর জমিতে বিলুপ্ত ও বিপন্ন উদ্ভিদ রোপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের অর্থায়নে পার্কের বর্ধিতাংশে এসব উদ্ভিদ রোপন করা হয়। রোপনকৃত ৬৫ প্রজাতির প্রায় ২০হাজার উদ্ভিদের মধ্যে রয়েছে লাগলিঙ্গম, রক্তন, শিমুল, ছাতয়ান, পিতরাজ, পলাশ, চাপালিশ, ডেউয়া, গর্জন, সিভিট, কদবেল, ঢাকিজাম, দেশী গাব, মহুয়া, ছালমুগড়া, লোহাকাঠ, জগডুমুর, সাদা পাকুর, কাঠবাদাম, জাম, আমলকি, হরতকি, খৈয়াবাবলা, বহেরাসহ বেশ কিছু উদ্ভিদ। পার্ক কর্তৃপক্ষের মতে, এই উদ্যোগের ফলে একদিকে এসব উদ্ভিদ আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশে টিকে থাকবে, সাথে পাখি ও পশুদের খাবারের জোগান দিবে। বেশ কিছুদিন পূর্বে এসব উদ্ভিদ রোপন করা হলেও পার্ক কর্তৃপক্ষের নজরের মধ্যেই বেশ দ্রুতই দ্যুতি ছড়াচ্ছে এসব উদ্ভিদগুলো। চলতি বর্ষায় আপন মহিমায় সেজেছে বিপন্ন উদ্ভিদের এই বাগান। যেন অনেকটা হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার মতো।

সাফারী পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তবিবুর রহমান বলেন, বিশাল আয়তনের এই সাফারী পার্কের সীমানপ্রাচীরের ভেতর এখনও অধিকাংশই শাল গজারী গাছ রয়েছে। এই পার্ককে ঘিরে এখন সরকারী ভাবে মাষ্টারপ্ল্যানের কাজ চলছে। পার্কের নির্দ্দিষ্ট এলাকায় বিভিন্ন প্রাণী বেস্টনীতে প্রাণী  ছাড়াও হাজারো পশু পাখি উন্মোক্ত অবস্থায় বিচরণরত রয়েছে। সেসব প্রাণীদের খাবার যোগানের উপযোগী বিলুপ্ত উদ্ভিদ রোপন করা হয়েছে। প্রায় বেশ কিছুদিন পূর্বে এসব উদ্ভিদগুলো রোপন করা হলেও এখন বেশ পরিপূর্ণ। আমদের আশা এই গাছগুলো বড় হয়ে উঠলে দেশী বিদেশী প্রাণীর অভয়ারণ্য হয়ে উঠবে এই পার্কটি। সাথে দর্শনার্থীরাও দেশীয় বিলুপ্ত ও বিপন্ন হওয়া উদ্ভিদ সম্পর্কে একটা ধারনা পাবে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ন সম্পাদক হাসান ইউসুফ খান বলেন, সরকারী ভাবে এমন উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়। আমরা মানুষরাই নানাভাবে প্রকৃতির উপর অত্যাচারে লিপ্ত হয়েছি। সে কারনেই প্রকৃতি থেকে অনেক উদ্ভিদ হারিয়ে যাচ্ছে। এমন উদ্যোগের ফলে হারানো অনেক উদ্ভিদই প্রকৃতিতে ফিরে আসার সম্ভাবনা তৈরী হবে। এর ফলে জীববৈচিত্রেও ভীন্নতা আসবে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

পরিবেশ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই