তারিখ : ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

লকডাউনে নওগাঁর আম চাষীরা আম নিয়ে বিপাকে

লকডাউন কেড়ে নিলো নওগাঁর আম চাষীদের মুখের হাসি,আম নিয়ে বিপাকে জেলার শত শত আমচাষীরা
[ভালুকা ডট কম : ৩০ জুন]
আমের দ্বিতীয় রাজ্য হিসেবে দেশজুড়ে পরিচিতি পেয়েছে উত্তরের সীমান্তবর্তি জেলা নওগাঁ। এই জেলায় উৎপাদিত সুমিষ্ট আম বর্তমানে দেশের গোন্ডি পেরিয়ে ইউরোপের দেশগুলোতেও রপ্তানি হচ্ছে। তাই আমের মৌসুমে এই আমকে নিয়ে জেলার শত শত আমচাষীরা প্রতিদিনই স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু মহামারি করোনা ভাইরাস গত বছরের ন্যায় চলতি বছরেও আমচাষীদের  স্বপ্ন ভেঙ্গে তছনছ করে দিয়েছে। বর্তমানে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের জারি করা লকডাউনে বাগানের আম বিক্রি না হওয়ায় মাথায় হাত আমচাষীদের।

করোনা পরিস্থিতিতে চলমান লকডাউনে যানবাহনের অভাবে পাইকারি ক্রেতার সংখ্যা তুলনামূলক কম থাকায় আম বাজারজাতকরণ নিয়েও যথেষ্ট চিন্তিত আমচাষীরা। গত মে মাসের শেষে আম পাড়ার মৌসুম শুরু হবার আগে আমের বাজারজাতকরণে সরকারের গৃহীত নানান পদক্ষেপে তারা যখন আবার আশাবাদী হয়ে উঠছিলেন এবং শুরুতে বাজারে আমের দাম যখন আম চাষীদের মনে কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছিল ঠিক তখনি সারা দেশে চলমান সীমিত লকডাউন ও ১জুলাই থেকে কঠোর লকডাউনের ঘোষনায় নওগাঁর আমের বাজারে তার প্রভাব ফেলেছে। বর্তমানে বাজারে ব্যাপারীগন আম কেনা এক রকম বন্ধ করে দেয়ায় আমাচাষীরা হতাশাগ্রস্থ্য হয়ে পড়েছেন। জেলার সবচেয়ে বড় আম বাজার হচ্ছে সীমান্তবর্তি সাপাহার উপজেলায় অবস্থিত। সরকারের ঘোষণা করা কঠোর লকডাউনের কারণে আম কিনছেন না পাইকারী ব্যবসায়ীরা। তাই বাজারে নিয়ে আসা আম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন আমচাষীরা।

আম বিক্রেতা ও আম চাষিদের বক্তব্য, কঠোর লকডাউন ঘোষণার কারণে বাজারে ক্রেতা নেই। আর সে কারণে আম বিক্রি হচ্ছে না। পাইকাররাও বাইরের জেলা থেকে আসতে ভয় পাচ্ছেন, যে কয়জন পাইকার এসেছেন লকডাউনের মধ্যে তাদের কেনা আম বিক্রি করার কোন জায়গা থাকবে কিনা সে চিন্তা মাথায় রেখে তারা প্রায় আম কেনা ছেড়ে দিয়ে বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন। কঠোর এই লকডাউনের কারণে যদি আম উৎপাদনকারীরা আম বিক্রি ও নায্য মূল্য না পাই তাহলে চলতি মৌসুমে আম নিয়ে তাদের শেষ আশাটুকুও ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। প্রতিদিনই অসংখ্য আম বিক্রেতাদের সারি সারি আমের লাইন নিয়ে বিকেল পর্যন্ত বসে থাকতে দেখা গেছে এবং সামান্য যে কয়েকমন আম বিক্রি হতে দেখা গেছে তাও গতকয়েক দিনের বাজার দরের অর্ধেকের চেয়েও কম। ক’দিন আগেই সাপাহারে যে আম বিক্রি হয়েছিল সর্বোচ্চ ২হাজার ৬শ টাকা মন দরে, চলতি সপ্তাহে সে মানের আম বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১হাজার ২শ’ টাকা মন দরে বলে অসংখ্য আম বিক্রেতাগন জানিয়েছেন।

অসহায় আমচাষীদের বক্তব্য করোনাকে কেন্দ্র করে বাজারে হয়তো এক শ্রেণীর আমব্যবসায়ী সিন্ডিকেট তৈরীর পায়তারা করতে পারে। ভবিষ্যতে কোন ব্যবসায়ী কিংবা ব্যক্তি গোষ্ঠি যাতে আম নিয়ে কোন সিন্ডিকেট তৈরী করতে না পারে সেজন্য তারা সর্বক্ষন প্রশাসনের তদারকি এবং নজরদারী কামনা করেছেন।

আড়তের মালিকগণ বলছেন, লকডাউনে ব্যপারীদের কেনা আম তারা বাহিরে বিক্রি করতে পারবে কিনা সেটা চিন্তা করে আম কিনছেনা ব্যাপারীগণ। যদি আম ক্রয় না করে তাহলে আমাদের করণীয় কি? সব মিলিয়ে জেলার আমচাষীগন তাদের কষ্টার্জিত উৎপাদিত আম নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন আম চাষীরা।

জেলা প্রশাসক মো: হারুন-অর-রশীদ বলেন জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলার আম যেন সুষ্ঠু ভাবে আমচাষীরা বিক্রি করতে পারেন শুরু থেকেই সেই বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। কিন্তু সরকারের আইনের প্রতি সকলের শ্রদ্ধা জানাতে হবে। কারণ এই মহামারি থেকে বাঁচতে একটু কষ্ট হলেও আমাদের সকলকেই বিধিগুলো মেনে চলতে হবে। এতে করে হয়তো বা এবার আমচাষীদের একটু লোকসানই গুনতে হবে। তবুও সঠিক ভাবে আম বাজারজাত করার ক্ষেত্রে আমরা তৎপর রয়েছি। কোন প্রকার অনিয়ম আমরা বরদাস্ত করবো না।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

কৃষি/শিল্প বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই