তারিখ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

লকডাউনে নান্দাইলে ভালো নেই নিম্ন আয়ের মানুষেরা

লকডাউনে নান্দাইলে ভালো নেই নিম্ন আয়ের মানুষেরা
[ভালুকা ডট কম : ০৬ জুলাই]
কোভিড-১৯ সংক্রমন প্রতিরোধকল্পে সরকার ঘোষিত সারা দেশে লকডাউনে নিম্ন আয়ের মানুষের চরম দূর্ভোগ দেখা দিয়েছে। একদিকে যেমন বর্ষাকাল- দিনভর বৃষ্টিতে কোন কাজ করা যাচ্ছেনা, অন্যদিকে তেমন করোনা ভাইরাসের লকডাউনের কারনে ঘর বন্দি হয়ে আছে নিম্ন আয়ের সাধারন মানুষ। এ যেন ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’।

দিনে আনে দিন খায় তথা হতদরিদ্র পরিবারগুলো বের হতে পারছেনা অর্থ বা খাদ্যের খোঁজে। যেখানে নুন আনতে পানতা ফুরায় সেখানে নেই কোন কর্ম। লকডাউনে পাচ্ছেনা কোন কাজ। এছাড়া সেলুনের নাপিত, মুচি, কাঠ মিস্ত্রি, দিন মুজুর, পরিবহন শ্রমিক, হকার, ফেরিওয়ালা, ক্ষুদ্র যানবাহন মেকার, চায়ের দোকন, পান দোকান ইত্যাদি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পড়েছে বিপাকে। ফলে সংসারের খরচ যোগাতে হিমশিম খাচ্ছে।

ঠিক তেমনি বিপাকে পড়েছে ময়মনসিংহের নান্দাইল চৌরাস্তা এলাকার শ্রী মানিক রবি দাস ও শিবনাথ রবি দাস নামে দুই মুচি। মানুষের জুতা সেলাই করে তাদের সংসার চলে। যাদের একদিন কাজ না করলে পরিবারে সদস্যদেরকে নিয়ে না খেয়ে থাকতে হয়। তবে পেটের ক্ষুধা তো মানে না বারণ। তাই লকডাউনের দিনেও রবি দাস ও শিবনাথ দাস বাধ্য হয়ে নান্দাইল চৌরাস্তা গোল চত্বরে জুতা সেলাই কাজ করতে বসে থাকতে দেখা যায়। লকডাউনে কেন বাহির হয়েছেন তা জানতে চাইলে তারা জানায় যে, গত লকডাউনেও তাদেরকে খুব কষ্ট করতে হয়েছে। তাই এবার লকডাউন উপেক্ষা করেই পেটের দায়ে বের হয়েছেন। কিন্তু লকডাউনে সব কিছু বন্ধ থাকায় অর্থাৎ মানুষের চলাফেরা না থাকায়, কেউ জুতা সেলাই বা রং করতে আসে না। ফলে দিনের ৫ ঘন্টা শেষে মাত্র ৫০ টাকা রোজগার করেছেন।

রবিদাস এই প্রতিবেদককে জানান, “হয় সরকার আমাদের খাবার দেউক, না হয় লকডাউন তুলে নেউক। আর যে পারছিনা। চোখের সামনে স্ত্রী ও দুই সন্তানদের না খেয়ে মরতে দেখতে পারবো না।” শ্রী শিবনাথ দাস জানান, তার পরিবারে ১০জন সদস্য রয়েছে, দিন শেষে মাত্র ৭০ টাকা রোজগার করেছে। তিনি আরও জানান, ‘এই টাকা দিয়ে না পারমু চাউল কিনতে, না পারমু মাছ কিনতে’। কিভাবে যে বাড়ির লোকজনের খাবার যোগাবো তা জানিনা।”

লকডাউন যে ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়িয়েছে তা জানেন কিনা জানতে চাইলে তারা বলেন, বাবা লকডাউন কখন দেয়, কখন বাড়ায় তা জানিনা। দেখি যে রাস্তায় লোকজন বের হয় না। আর শুধু জানি যে পরিবারের সদস্যদের খাবার যোগার করতে হবে। ”কাঠ মিস্ত্রী সোহেল ও আসাদ মিয়া জানান, তারা হেলপারের কাজ করে সংসারের খাবার যোগাড় করতো, এখন অতি কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। কি খাবে ? কি করবে তারা কোন ভেবে পাচ্ছেনা।

এরকম বিভিন্ন নিম্ন আয়ের মানুষদেরকে একই কথা বলতে জানাগেছে। সরকারিভাবে করোনার ত্রাণ সহায়তা আসলেও তাদের নিকট তা অধরা থেকে যায়। এছাড়া নান্দাইলে বিত্তশালীদেরওকে তেমন ভাবে প্রণোদনা দিতে দেখা যাচ্ছেনা। ফলে এই লকডাউনে আরো বেশী বিপাকে পড়ছে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো। এ ব্যাপারে তারা বর্তমান সরকারের দলীয় নেতাকর্মী সহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিকট তাদের ব্যাপারে সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই