তারিখ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

নওগাঁর কোলা হাটের খাস টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ

নওগাঁর কোলা হাটের খাস আদায়কৃত লাখ লাখ টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ
[ভালুকা ডট কম : ২৮ জুলাই]
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার সবচেয়ে বড় কোলা হাটের হাটের খাস আদায়কৃত লাখ লাখ টাকার খাজনা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আত্নসাতের অভিযোগ উঠেছে। এই সরকারি টাকা আত্নসাতের ঘটনাটি দ্রুত তদন্তের জন্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, উপজেলার কোলা ইউনিয়নের কোলা হাটটি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় হাট হিসাবে পরিচিত। এই হাটে প্রচুর পরিমাণে গরু, ছাগল, মাছ, সাইকেল, কাঁচা তরকারি, আসবাপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী কেনা-বেচা হওয়ায় প্রতি বছর সরকারি ভ্যাট ও আয়করসহ প্রায় ১কোটি টাকায় ইজারা হতো। ১৪২৬ বঙ্গাদ্ধে ইজারাদার ফেরদৌস হোসেন প্রায় ৬৮লাখ টাকায় হাটটি টেন্ডারের মাধ্যমে ইজারা নিয়ে ছিলেন। গড়ে প্রতি সপ্তাহে দেড় লাখ টাকা আয় হতো সরকারি কোষাগারে। হাটের মেয়াদ শেষ না হতেই ১৪২৬ বঙ্গাদ্ধের শেষের দিকে তৎকালিন হাট ইজারাদার ফেরদৌস হোসেন ওই হাটটি সরকারি ভাবে আবার নতুন করে ইজারা না দেওয়ার জন্যে উচ্চ আদালতে একটি রিট করেন। রিট করার ফলে হাটটি থেকে সরকারি নিয়মতান্ত্রিক ভাবে স্থানীয় তহশীল অফিসের (ভূমি) তহশিলদার ও হাটের রিটকারি ফেরদৌস হোসেনের সহযোগিতায় খাস আদায় শুরু করেন সদ্য বদলীকৃত উপজেলা নির্বাহী কর্তকর্তা আবু তাহির।

গত প্রায় ৪মাস আগে নতুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলপনা ইয়াসমিন এই উপজেলায় যোগদান করেন। এরপর তিনি স্থানীয় তহশীলদারকে বাদ দিয়ে দেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোলা হাটের খাস আদায়ের লক্ষে তার অফিসের প্রধান অফিস সহকারি রেজাউল ইসলামের মাধ্যমে খাস আদায় শুরু করেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসের প্রধান অফিস সহকারির সূত্রে জানা, বাংলা ১৪২৭সনে কোলা হাটে খাস আদায় হয়েছে ২১লাখ ২হাজার ৯৭৯ টাকা। আর এবছর ১৬ এপ্রিল হতে ১৬ জুলাই পর্যন্ত হাটের খাস আদায় হয়েছে ৬ লাখ ৪২ হাজার টাকা।

এলাকাবাসী ও স্থানীয় দোকানদারা বলেন, বদলগাছী উপজেলার মধ্যে আমাদের এই কোলা হাটটি সবচেয়ে বড় হাট আর এই হাটটি প্রায় দেড় বছর থেকে খাস আদায় হচ্ছে। আর এই হাট থেকে রমজান ও কোরবানীর ঈদে প্রায় ৩৫থেকে ৪০লাখ টাকা খাস আদায় হয়ে থাকে। কিন্তু সরকারি কোষাগারে কতো জমা হয় তা আমারা এখনো জানিনা। কিন্তু লোক মুখে জানতে পারি নাম মাত্র সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে হাটের খাস আদায়কৃত অর্থ। লাখ লাখ টাকা এই হাট থেকে আদায় হলেও গত বাংলা ১৪২৭ সন থেকে এই হাটের উন্নয়ন মূলক কোন কাজ হয়নি। তাই আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে এর সঠিক তদন্ত চাই।

কোলা ইউনিয়নের বাসিন্দা নওফেল, আবসারসহ শতাধিক ব্যক্তি বলেন, গত ৯ জুলাই, ১৩ জুলাই, ১৬ জুলাই ও ২০ জুলাই কোরবানী ঈদ উপলক্ষে এই  হাটে মোট ৪টি বিশাল গরু-ছাগলের হাট লাগানো হয় আর এই ৪টি হাটেও প্রায় প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা খাস আদায় হয়েছে বলে আমরা মনে করছি। এ ছাড়াও প্রতি সপ্তাহে দুই হাটে প্রায় ২ থেকে ৩ লাখ টাকা খাজনা আদায় হয়।

হাটের রিটকারি ফেরদৌস হোসেন জানান, আমি বহু আগে থেকে হাট ইজাদারের ব্যবসা করি তাই কোলা হাটে শতভাগ খাস আদায়ের জন্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমার সহযোগিতা চেয়েছিলেন। তাই আমার লোকজন নিয়ে হাটের খাস আদায় করে তার মনোনীত লোককে বুঝিয়ে দিয়েছে। আমাদেরকে দিনে জন প্রতি ৫শত টাকা করে দিতো।

স্থানীয় কোলা, আধাইপুর ও বদলগাছী ইউনিয়নের তহশীল (ভূমি) অফিসের তহশীলদার রঞ্জিত কুমার জানান, আগের ইউএনও স্যারের সময় কোলা হাটের খাস আদায় করতাম। কিন্তু পহেলা বৈশাখ থেকে আমাকে এই দায়িত্ব থেকে অব্যাহত দেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রধান অফিস সহকারি রেজাউল ইসলামের মাধ্যমে এখন খাস আদায় হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রধান অফিস সহকারি রেজাউল ইসলাম বলেন, হাটের খাস আদায়ের অর্থ সরকারি কোষাগারে কতো জমা হবে তা ঠিক করবেন ইউএনও স্যার তিনি যা বলবেন সেটায় জমা হবে। ইউনিয়ন হাট কমিটির সভাপতি ও কোলা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত শাহিনুর ইসলাম স্বপন জানান, বাংলা ১৪২৬ সনে  ইউএনও অফিস থেকে হাটের ১৭লাখ টাকা পাওয়া গিয়েছিল ইউনিয়নে। ১৪২৭ সনে সেখানে মাত্র ২লাখ টাকা। এ বছর এখনো কোন টাকা পাওয়া যায়নি। তিনি আরো জানান, গত কোরবানী উপলক্ষে ৯ জুলাই থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত কোলা হটে মোট ৪টি গরু-ছাগলের হাট চলেছে।

বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা: আলপনা ইয়াসমিন বলেন ওই হাট থেকে যে পরিমাণ অর্থ খাস আদায় হয়েছে সেই অর্থই আমি সরকারের কোষাগারে জমা করেছি। নয়ছয় করার কোন প্রশ্নই আসে না।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই