তারিখ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

শ্রীপুরে ব্রি-৫১ ধানের বীজতলায় পঁচন,শঙ্কিত চাষীরা

শ্রীপুরে ব্রি-৫১ ধানের বীজতলায় পঁচন,রোপা আমন ফলনে শঙ্কিত চাষীরা
[ভালুকা ডট কম : ০৯ আগস্ট]
ফলন ভালো হওয়ার আশায় গাজীপুরের চাষীরা ব্রি-৫১ ধানের জাত আবাদের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। কিন্তু বীজতলা পঁচে যাওয়ায় অধিকাংশ কৃষকের সেই আশা গুঁড়েবালি। পঁচে যাওয়ার মধ্যেও যেসব চারা ভালো রয়েছে সেগুলো রোপনের পর ধান বের হওয়ার সময় একই রোগে আক্রান্ত হয়ে গাছ মরে যাওয়া নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থাকলেও অল্প জমিতে ভালো ফলনের আশায় বেশিরভাগ চাষী ব্রি-৫১ জাতের ধান আবাদের প্রস্তুতি নিয়েছেন।

ব্রি-৫১ ধানের বীজতলা রোগাক্রান্ত হয়ে পঁচে যায়। শুধু যে বীজতলা আক্রান্ত হয় তাই-ই নয়। ভাল চারা জমিতে রোপনের পর গাছে ধান বের হওয়ার সময়ও গাছ আক্রান্ত হয় বলে জানান, শ্রীপুর উপজেলার টেংরা গ্রামের চাষী জাহাঙ্গীর আলম।

তিনি জানান, এ রোগের কারণেই ব্রি-৫১ ধান করতে তারা নিরুৎসাহিত হন। কিন্তু অন্যান্য জাতের ধানের চেয়ে ফলন ভালো হওয়ায় আবাদের লোভও সামলাতে পারেন না। বীজতলা বা ধান গাছে পঁচন ধরলে চারা বা ধান গাছ হলুদ ও ধূসর বর্ণ ধারণ করে মাটিতে মিশে যায়।

ব্যাক্তিগত এবং ঋন নেওয়া ৫ একর ৩৫ শতক জমি আবাদ করবেন এবার। সেই লক্ষ্যমাত্রায় বীজতলা তৈরী করেছিলেন। কিন্তু বীজতলা পঁচন রোগে আক্রান্ত হওয়ায় অনেক চারা নষ্ট হয়েেেছ। বাইরে থেকে ধানের চারা ক্রয় করে জমিতে রোপন করতে হবে। এতে ধানের বীজ ভাল হবে কি না তা ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিতে হবে।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা পরিদর্শনে এসে ওষুধ প্রয়োগের পরামর্শ দেন বলে জানিয়েছেন টেংরা উত্তরপাড়া গ্রামের লেহাজ উদ্দিন। সে অনুযায়ী গত ২৫ জুলাই ওষুধ প্রয়োগ করেও কোনো উন্নতি দেখছেন না। বরং আরও নষ্ট হচ্ছে। এখন ধানের চারা কিনে রোপন করা ছাড়া কোনো উপায় নেই তার। দুই একর জমিতে ধান আবাদের লক্ষ্যে ব্রি-৫১ এবং রঞ্জিত জাতের ধানের বীজতলায় বীজ রোপন করেছিলেন। কিন্তু তার দুটো জাতের চারা-ই পঁচে গেছে। ৩০ কেজি ধানের বীজতলায় তিন কেজি ইউরিয়া সার প্রয়োগ করেছিলেন। ধানের চারা প্রাপ্ত বয়ষ্ক হওয়ার পর সব জ্বলে-পুড়ে গেছে।

অন্যদের মতো কৃষক মুজিবুর রহমানের বীজতলায়ও পঁচন ধরার কারণে এবার অন্য জায়গা থেকে ধানের চারা সংগ্রহ করে রোপন করতে হবে। তিনি জানান, এ বছর ১ একর ৭০ শতক জমিতে ধানের চারা রোপনের জন্য বীজতলা তৈরী করেন।

ধানের চারা প্রাপ্ত বয়স্ক হলেই পাতা মরে চারা গাছ ছোট হয়ে আসে। ব্রি-৫১ জাতের ধানের চারা দিয়ে রোপন করতে না পারলে রঞ্জিত ধানের চারা দিয়ে ১ একর জমি আবাদ করবেন। চারার সংকট হলে অন্য জায়গা থেকে সংগ্রহ করতে হবে বলে জানিয়েছেন চাষী সাহাব উদ্দিন।

তিনি বলেন, ব্রি-৫১ এবং রঞ্জিত দুটো জাতের বীজতলা রোপন করেন প্রায় দেড় মাস আগে। কিন্তু ব্রি-৫১ তে পঁচন ধরলেও রঞ্জিত ধানের বীজতলা অক্ষত রয়েছে। গত কয়েকবছর একই নিয়মে বীজতলা তৈরী করে আসছেন। দেড় মাস আগে গোবর দিয়ে ৪/৫টি চাষ করে বীজতলা তৈরী করেন। ধানের বীজগুলো গত বছর নিজের জমি থেকেই সংগ্রহ করেছিলেন।

চাষী পারভেজ মোশারফ বলেন, বীজতলায় ইউরিয়া সার প্রয়োগের পর ধানের চারা নষ্ট হয়ে যায়। ধানের চারা বড় হওয়ার জন্য ইউরিয়া সার প্রয়োগ করেন। এলাকার অধিকাংশ বীজতলায় পঁচন ধরেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, জেলায় এবার রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা কমপক্ষে ৪২ হাজার হেক্টর। শ্রীপুরে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ৫’শ ৩৫ হেক্টর জমিতে।শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এ এস এম মূয়ীদুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, প্রণোদনা ও রাজস্ব সহ অন্যান্য প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের উফসী নতুন জাতের ভ্যারাইটি বীজ দেয়া হয়েছে। সকলে তাদের পরামর্শমতে আদর্শ বীজতলা তৈরী করেছেন। কিছু কিছু জায়গায় গত কয়েকদিন আগে বৃষ্টির কারণে বীজতলার অনুপযোগী নিচু জমিতে পানি জমে থাকায় ও অতিরিক্ত ইউরিয়া প্রয়োগের কারণে চারার গোড়ায় পঁচন ধরেছে। পরবর্তীতে তাদেরকে পানি সরিয়ে ফেলা ও কীটনাশক এবং ছত্রাকনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব বীজতলায় চারা না রেখে যেন জমিতে রোপন করে ফেলে সে পরামর্শও দেয়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে পরামর্শ মেনে চললে কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

কৃষি/শিল্প বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই