তারিখ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

নওগাঁর বাজারগুলোতে মাছ ধরার খলশানি বিক্রির ধুম

নওগাঁর বাজারগুলোতে মাছ ধরার খলশানি বিক্রির ধুম পড়েছে
[ভালুকা ডট কম : ১১ সেপ্টেম্বর]
চলছে বর্ষা মৌসুম। মাঠ, খাল, বিল ও জলাশয়ে জমেছে বর্ষার পানি।  আর বর্ষা মৌসুমে মাছ ধরার প্রাচীন ও জনপ্রিয় একটি উপকরন হচ্ছে খলশানি। এই খলশানী দিয়ে বিশেষ করে ছোট মাছ ধরা হয়। আর বর্ষার আগমনী বার্তায় জেলার মৎস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত আত্রাই ও রাণীনগর উপজেলার বিভিন্ন হাট ও বাজারগুলোতে খলশানি বিক্রির ধুম পড়েছে।

বর্ষা মৌসুমের আগেই এবার আত্রাই ও ছোট যমুনা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। সেই সাথে খাল ও বিলে বাড়ছে পানি। ফলে উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে দেশী প্রজাতির ছোট জাতের মাছ ধরার গ্রাম বাংলার সহজ লভ্য প্রাচীনতম উপকরণ বাঁশের তৈরি চাঁই বা খলশানি বিক্রির ধুম পড়েছে। উপজেলার হাট বাজারগুলোতে প্রতিদিন শত শত খলশানি বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার ঐতিহ্যবাহি সাপ্তাহিক আবাদুপুকর, ত্রিমোহানী, কুজাইল হাটের খলশানি পট্টিতে বেচা কেনার জন্য জনসাধারণের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।

জানা যায়, রাণীনগর উপজেলার নিজামপুর, ঝিনা, খট্টেশ্বর, কৃষ্ণপুর-মালঞ্চিসহ বিভিন্ন গ্রামের ঋষি সম্প্রদায়ের লোকেরা ও তাদের পরিবারের সকল সদস্যরা মিলে এই মৌসুমে তাদের নিপুণ হাতে তৈরি করে খলশানি। এরপর জেলার বিভিন্ন হাটে বিক্রির জন্য পসরা সাজিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। বাঁশ, কটের সুতা ও তাল গাছের আঁশ দিয়ে তৈরি এসব খলশানি মানের দিক দিয়ে ভালো হওয়ায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের অঞ্চল ভেদে বিশেষ করে হাওর অঞ্চলে মাছ শিকারীরা এখন থেকে পাইকারি মূল্যে কিনে নিয়ে যায়। ফলে এ পেশায় জড়িত পরিবারগুলো বর্ষা মৌসুমে এর কদর বেশিও যথাযথ মূল্য পাওয়ায় মাত্র দুই তিন মাসেই খলসানি বিক্রি করেই তারা প্রায় বছরের খোরাক ঘরে তুলে নেয়। লাভ খুব বেশি না হলেও বর্ষা মৌসুমে এর চাহিদা থাকায় রাত দিন পরিশ্রমের মাধ্যমে খলশানি তৈরি করে তারা বেজাই খুশি। এক দিকে যেমন সময় কাটে অন্য দিকে লাভের আশায় বাড়ির সকল সদস্যরা মিলে খলশানি তৈরি কাজ করে অভাব অনঠনের কবল থেকে একটু সুখের নিশ্বাস ফেলে।

খলশানির কারিগররা এসব খলশানি তৈরিতে প্রকার ভেদে খরচ হয় ১০০থেকে ২শত টাকা, বিক্রি হয় ২৫০ থেকে ৩শত টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এতে করে খুব বেশি লাভ না হলেও পৈত্রিক এই পেশা ছাড়তে তারা নারাজ। আধুনিকতার উৎকষ্টের তৈরি ছোট জাতের মাছ ধরার সুতি, ভাদায় ও কারেন্ট জালের দাপটের কারণে দেশি প্রযুক্তির বাঁশের তৈরি খলশানি সামগ্রী এমনিতেই টিকে থাকতে পারছে না। কিন্তু জীবনের তাগিদে তারা একেবারে কর্মহীন থাকতেও চায় না। তবে সরকারি বেসরকারী পৃষ্টপোষকতা ও সহযোগীতা পেলে মৌসুমের আগে বেশি পরিমান খলশানি মজুত করতে পারলে ভরা মৌসুমে বেশি দামে বিক্রি হলে লাভ ভালো হয়।

আত্রাই উপজেলার ঋষিপাড়া গ্রামের খলশানি বিক্রেতা ক্ষিতেস, পরিমলসহ অনেকেই জানান, খলশানি তৈরির সামগ্রীর দাম আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। তাই আগের মতো আর লাভ হয় না। দীর্ঘ দিন থেকে বাপ দাদার সাথে এ ব্যবসায় জড়িত তাই ছাড়তেও পাড়ছি না। তারা আরও জানান, বর্ষা এবার আগাম শুরু হওয়ায় খলশানির কদরও বেড়েছে। হাট বাজার গুলোতেও পড়েছে বিক্রির ধুম।

রাণীনগর উপজেলার আবাদপুকুর হাটে খলশানি কিনতে আসা আব্দুল আলিম, আমজাদ হোসেনসহ অনেকেই বলেন যাদের মাঠে-খালে মাছ ধরার সখ আছে তাদের জন্য খলশানি প্রয়োজন। বাড়ি পাশের জমিগুলোতে বর্ষার পানি জমেছে। অল্প পানিতে এই খলশানি দিয়ে ছোট জাতের মাছ ধরা অনেকটাই সহজ। তাই সখ করে হাটে খলশানি কিনতে এসেছি।#




সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকার বাইরে বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই