তারিখ : ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

রাণীনগরে লক্ষ্মী পূজা উপলক্ষে গ্রামীণ মেলা

রাণীনগরে লক্ষ্মী পূজা উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ মেলা,আগামীকাল বউ মেলা
[ভালুকা ডট কম : ২২ অক্টোবর]
কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। বাংলায় শারদীয়া দূর্গোৎসবের পর আশ্বিন মাসের শেষে পূর্ণিমা তিথিতে লক্ষ্মী পূজার আরাধনা করা হয়। লক্ষ্মী মানে শ্রী সুরুচি এবং তার বাহন পেঁচক। লক্ষ্মীকে ধন সম্পদ আর সৌন্দর্যের দেবী বলে মনে করেন সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। নারী পুরুষ উভয়েই এই পূজায় অংশ গ্রহণ করেন।

গত বুধবার (২০অক্টোবর) লক্ষ্মী পূজা শুরু হয়। শুক্রবার (২২অক্টোবর) নওগাঁর রাণীনগরে ছোট যমুনা নদীতে লক্ষ্মী প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে এ পূজার সমাপ্তি করা হয়। আর এই পূজা উপলক্ষে শুক্রবার থেকে দুইদিন ব্যাপী কুজাইল বাজারে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ মেলার আয়োজন করা হয়। স্থানীয়রা তাদের শত বছরের পুরনো ইতিহাস ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে লক্ষ্মী পূজা উপলক্ষে এ মেলার আয়োজন করে থাকেন। মেলায় দোকান থাকে কয়েকদিন। এছাড়াও অনুষ্ঠিত হয় বউ মেলা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কাশিমপুর রাজবাড়ীর রাজা রাজবাহাদুর শ্রীঅন্নদা প্রসন্ন লাহিড়ীর রাজত্ব পরিচালনার আগে থেকে লক্ষ্মী পূজা উপলক্ষে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় দুই'শ বছর থেকে লক্ষ্মী প্রতিমা বিসর্জনের দিন থেকে এ মেলা শুরু হয়। ঐতিহ্যবাহী এ মেলার বিশেষ আর্কষন লক্ষ্মী প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে ছোট যমুনা নদীতে নৌবহর। শুক্রবার দুপুরের পর থেকে জেলার রাণীনগর, আত্রাই, নওগাঁ সদরসহ কয়েকটি উপজেলার সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ নৌকায় চড়ে আসতে থাকে। পাশাপাশি মেলা ও নৌবহর উপভোগ করার জন্য নৌকায় ঘুরে বেড়ায় অন্যান্য ধর্মের মানুষও। সাউন্ড বক্স, মাইক আর ঢাকের তালে তালে নৌকায় বিনোদনপ্রেমীদের নৃত্যে মুখরিত হয়ে উঠে এই ছোট যমুনা নদী। ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে মিলনমেলায় পরিনত হয় নদীর দুইপাড়। প্রায় শতাধিক নৌকা নদীতে নৌবহরে মেতে উঠে। চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এরপর প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয় নদীতে।

এ মেলা উপলক্ষে এলাকার গ্রামের বাড়ি বাড়ি আত্মীয় স্বজনদের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠে। ধুম পড়ে যায় ভালো রকমের খাওয়ার। কারণ অন্যান্য অনুষ্ঠানের সময় মেয়ে ও জামাইসহ আত্মীয়স্বজন আসতে না পারলেও এ মেলায় বাড়িতে বেড়াতে আসেন। জামাইয়েরা মেলা থেকে বড়ো বড়ো মাছ, মিষ্টি, জিলাপিসহ হরেক রকমের খাবার তাদের শ্বশুর বাড়িতে কিনে নিয়ে যান।  মেলার দ্বিতীয় দিন শনিবার হবে বউ মেলা। বউ মেলায় বিশেষ করে নারীদের কসমেটিকস দোকানগুলোতে উপচে পড়া ভীড়। আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের শত শত নারীদের বউ মেলায় আগমণ ঘটে।

কুজাইল গ্রামের বিকাশ চন্দ্র প্রাং বলেন, দূর্গাপূজা সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় উৎসব হলেও আমাদের এখানে লক্ষ্মী পূজার আনন্দটা বেশি হয়। লক্ষ্মী পূজা উপলক্ষে এটা আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্যের একটা মেলা। এ সময় গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে আত্মীয় স্বজনের আগমনে যেন মুখরিত হয়ে উঠে। এদিন বিসর্জনের জন্য নদীতে নৌকায় করে প্রতিমা নিয়ে বিশাল নৌবহর শুরু হয়। পাশাপাশি থাকে আনন্দ উপভোগ করার নৌকাও। এরপর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে গ্রামের মেলা দেখা শুরু হয়।

মেলা কমিটির উপদেষ্ঠা সাইদুর রহমান বাঘা বলেন, শত বছরের পুরনো ইতিহাস ঐতিহ্যকে ধরে রাখতেই এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। তবে লক্ষ্মী পূজার এ মেলা উপলক্ষে আগে থেকে কোন প্রকার প্রচার প্রচারনার দরকার হয় না। সবাই এ মেলার বিষয়ে অবগত থাকেন। যার কারণে লক্ষ্মী পূজার দিনে দর্শনার্থীদের আগমনের কোন কমতি থাকে না।

মেলা কমিটির সভাপতি ছায়ের আলী বিদ্যুৎ বলেন, বিভিন্ন উপজেলার সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ লক্ষ্মী প্রতিমা নিয়ে শতাধিক নৌকা ছোট যমুনা নদীতে নৌবহর শুরু করে। নৌবহর দেখতে নদীর দু'পাড়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়ে মানুষের যেন মিলনমেলায় পরিনত হয়। তবে এক্ষেত্রে এলাকাবাসীর পাশাপাশি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন যথেষ্ট সহযোগিতা করে থাকেন।#





সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

বিনোদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই