তারিখ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

দড়িয়াপুরে চরম দুর্ভোগে কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দা

দড়িয়াপুরের গ্রামীণ মেঠোপথে স্পর্শ করেনি ইটের ছোঁয়া,চরম দুর্ভোগে কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দা
[ভালুকা ডট কম : ২৩ অক্টোবর]
নওগাঁর রাণীনগরের সীমান্তবর্তি বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের দড়িয়াপুর গ্রামের মেঠোপথে এখন পর্যন্ত আধুনিকতার ছোঁয়া স্পর্শ করেনি। এমন জনগুরুত্বপূর্ন রাস্তা দিয়ে শতাধিক গ্রামের হাজার হাজার মানুষদের বর্ষা মৌসুমসহ সারাবছরই চরম দুর্ভোগের মধ্যে যাতায়াত করতে হচ্ছে।

একাধিকবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদন করেও কোন লাভ পাননি গ্রামবাসী। এছাড়াও পুরো রাস্তার কোথায় কোন সোলার লাইটের ছোঁয়াও স্পর্শ করেনি। যার কারণে প্রতিদিনই রাতের আঁধারে গ্রামের বিভিন্ন স্থানে চলে মাদক ও জুয়ার আসর। এতে করে যুব সমাজসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ দিন দিন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর পার্শ্ববর্তি বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের সর্বশেষ গ্রাম দড়িয়াপুর। এই গ্রামের পশ্চিম ও উত্তর দিকে নওগাঁ সদর উপজেলা, দক্ষিন ও পূর্বদিকে রাণীনগর উপজেলা। মাঝখানে দড়িয়াপুর গ্রাম। এই গ্রামে কয়েক হাজার লোকের বসবাস। চকউজির স্কুল থেকে দড়িয়াপুর গ্রামের মধ্যদিয়ে রাণীনগর কালিবাড়ি বাজার পর্যন্ত একটি জনগুরুত্বপূর্ন রাস্তা চলে গেছে। পূর্বে এই রাস্তা গ্রামের বিভিন্ন বাড়ির পাশ দিয়ে ছিলো। গত ২০০৩সালে নতুন করে প্রায় ১কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করা হয়। এরপর থেকে রাস্তায় নতুন করে মাটি দিয়ে উচু করা কিংবা ইট বিছানোসহ কোন কাজই করা হয়নি। পরবর্তিতে রমজান লাঠিয়ালের বাড়ি থেকে ঈদগাহ পর্যন্ত এবং মিষ্টিওয়ালা কুদ্দুসের বাড়ি থেকে রহমান ডাক্তারের বাড়ি পর্যন্ত মাঝে মাঝে বিক্ষিপ্ত ভাবে ইট বিছানো হয়েছে। কিন্তু চকউজির স্কুল থেকে রমজান লাঠিয়ালের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার কোন স্থানে ইট সোলিং না থাকায় বর্ষা মৌসুমে একটু বৃষ্টি হলে হাটু কাঁদায় পরিণত হয়। এছাড়াও মাঝে মাঝে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় বৃষ্টির পানি জমে জলাশয়ে পরিণত হয়। এমতাবস্থায় হেটে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিনই পাশের চকউজির, প্রান্নাথপুর, চন্ডিপুর, চকবুলাকিসহ শতাধিক গ্রামের মানুষ রাণীনগর বাজারে যাতায়াত করে। এছাড়াও আশেপাশের কৃষিপ্রধান গ্রামের কৃষকের উৎপাদিত সবজিসহ অন্যান্য কৃষি পন্য নিয়ে বাজারে যেতেও চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। বছরের পর বছর রাস্তায় নতুন করে মাটি ফেলে উচু না করার কারণে মাটি ক্ষয় হয়ে নিচু হয়ে পড়েছে। তাই বর্ষা মৌসুমে রাস্তার পাশের মাঠে বর্ষার পানি জমে উপচে গ্রামের ভিতরে প্রবেশ করে।

গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুস লেবু, আকরাম হোসেনসহ অনেকেই বলেন বর্তমান সরকার নাকি শহরের সুবিধা গ্রামে পৌছে দিবে। কিন্তু আমরা এই গ্রামের বাসিন্দারা আজ পর্যন্ত কোন সুবিধার মুখ দেখলাম না। আমাদের চলাচলের একমাত্র মেঠোরাস্তাতেও এখন পর্যন্ত ইটের ছোঁয়া স্পর্শ করলো না। তাহলে সরকারের উন্নয়ন কোথায় হচ্ছে। বর্তমান সরকারের কাছে আমাদের আকুল আবেদন যেন সরকার প্রধান দ্রুত এই গ্রামীণ মেঠোপথকে আধুনিক রাস্তায় পরিণত করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি শিক্ষক (অভ:) আমজাদ হোসেন মাষ্টার বলেন গ্রামটি সীমান্তবর্তি হওয়ার কারণে গ্রামের কতিপয় মূর্খ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সহায়তায় মাদক ব্যবসায়ীসহ অন্যান্য খারাপ মানুষদের কাছে নানা অপকর্মের অভয়ারন্যে পরিণত হয়েছে। আমি বহুবার পুলিশ প্রশাসনসহ সরকারের বিভিন্ন উর্দ্ধতন মহলকে গ্রামের এমন পরিস্থিতির বিষয়টি একাধিকবার লিখিত ভাবে জানিয়েছিলাম। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। বর্তমান সভ্য সমাজে এমন অসভ্য ও উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে একেরারেই বঞ্চিত এমন গ্রাম মনে হয় বাংলাদেশের আর কোথাও নেই। তাই এই গ্রামের প্রতি সুদৃষ্টি দেওয়ার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আকুল আবেদন জ্ঞাপন করছি।

সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলু বলেন এই রাস্তার সার্বিক তথ্য আমার জানা। কিন্তু রাস্তাটি আধুনিকায়ন করতে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তার যোগান দেওয়া ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে সম্ভব নয়। উপজেলা প্রশাসন চাইলে রাস্তাটি প্রকল্প আকারে বরাদ্দ নিয়ে আসতে পারেন।এই বিষয়ে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবণী রায়ের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তা রিসিভ না করার কারণে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই