তারিখ : ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

নওগাঁয় মাছের অভাবে ব্যস্ততা নেই শুঁটকি পল্লীতে

নওগাঁয় মাছের অভাবে ব্যস্ততা নেই শুঁটকি পল্লীতে,লোকসানের শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা
[ভালুকা ডট কম : ২১ নভেম্বর]
শীতকালের ভিন্ন খাবার উপকরনের মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে মাছের শুটকি। শীতকালে শুটকি মাছের চাহিদা দেশে যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে পাশের দেশ ভারতেও। কিন্তু চলতি শীত মৌসুমে উত্তরাঞ্চলের মৎস্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাই ও রাণীনগরসহ বিভিন্ন উপজেলায় এবার দেশীয় প্রজাতি মাছের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে মাছের অভাবে ভরা মৌসুমেও শুঁটকি পল্লীগুলোতে নেই ব্যস্ততা। তাই শুঁটকি ব্যবসায়ীদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মৌসুমের শুরুতেই শুঁটকি তৈরির জন্য সাজ-সরঞ্জাম প্রস্তুত করা হলেও মাছের অভাবে সেগুলো এখন মাছ শূন্য ফাঁকা পড়ে রয়েছে। অন্যান্য বারের মত এবারে এলাকায় তেমন বন্যা না হওয়ায় নদী ও খাল বিলের পানি আগাম শুকিয়ে যাওয়ায় যে সময় দেশী মাছে বাজার ভরপুর থাকার কথা সেই সময় দেখা মিলছে না দেশী মাছের দেখা। ফলে শুঁটকি ব্যবসায়ীদের মাঝে দেখা দিয়েছে শুটকি ব্যবসাতে লোকসানের আশঙ্কা।

জানা যায়, মৎস্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত আত্রাই ও রাণীনগর উপজেলা। প্রতিদিন শতশত টন মাছ আত্রাই থেকে রেল, সড়ক ও নৌ পথে দেশের বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করা হয়। সে অনুযায়ী শুঁটকি উৎপাদনেও আত্রাইয়ের যথেষ্ট প্রসিদ্ধ রয়েছে। এছাড়াও রাণীনগর উপজেলার বিল বেষ্টিত মিরাট ইউনিয়নের গ্রামগুলোর নাম উল্লেখ্যযোগ। এই অঞ্চলগুলোতে উৎপাদিত দেশী মাছের শুটকি রাজধানী ঢাকাসহ উত্তরাঞ্চলের রংপুর, নিলফামারী, সৈয়দপুর, কুড়িগ্রাম, দিনাজুপরসহ দেশের প্রায় ১৫/২০ জেলাতে বাজারজাত করা হয়। আর এই মাছের শুঁটকি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় শতাধিক পরিবার। আত্রাই উপজেলার ভরতেঁতুলিয়া ও রাণীনগর উপজেলার মিরাটের মৎস্যজীবী গ্রাম শুঁটকি তৈরীতে বিশেষ ভাবে খ্যাত। এ গ্রামের শতাধিক শুঁটকি ব্যবসায়ী এ পেশার সাথে সম্পৃক্ত। শুধু বর্ষা মৌসুমে শুঁটকি তৈরি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করে তারা পরিবারের সারা বছরের ভরণপোষণ নিশ্চিত করেন। এবারে বন্যা কম হওয়ায় নদী ও খাল-বিল আগাম সুখিয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে দেশীয় প্রজাতি মাছের সংকট। ফলে বাজারে মাছ কম কিন্তু মূল্য বেশি হওয়ায় শুঁটকি তৈরিতে খরচ অনেব বেড়ে যাওয়ায় শুঁটকি ব্যাবসায়ীদের গুণতে হচ্ছে লোকসান।

ভরতেঁতুলিয়া গ্রামের শুঁটকি ব্যবসায়ী ওসমান গণি, রহিম শেখসহ অনেকেই বলেন, শুটকি ব্যবসার সাথে আমরা দীর্ঘদিন থেকে সম্পৃক্ত। শুঁটকি তৈরিতে অর্থ খরচের সাথে সাথে যথেষ্ট শ্রম ব্যয় হয়। সর্বপোরি রোদ বৃষ্টি ও মাছের দুর্গন্ধ সবকিছুকে উপেক্ষা করে পরিবার পরিজন নিয়ে এ পেশা চালিয়ে আসছি। পুঁটি, খোলসানী, চাঁন্দা, রাইখর, সাটিসহ বিভিন্ন জাতের দেশি মাছের শুঁটকি আমরা তৈরি করি। এর মধ্যে বিশেষ করে পুঁটি ও সাটি মাছের শুঁটকির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

রাণীনগর উপজেলার মিরাট ইউনিয়নের হরিশপুর গ্রামের লিয়াকত আলী, আব্দুল খালেকসহ অনেকেই বলেন এবারে মাছ কম কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় আমাদের লোকসান গুণতে হচ্ছে। অনেকে শুঁটকি তৈরির সাজসরাঞ্জাম তৈরি করলেও মাছ অভাবে সেগুলো পড়ে রয়েছে। এবারে ব্যবসা মন্দা হওয়ায় সারা বছর পরিবার পরিজন নিয়ে আমরা কিভাবে চলবো তা নিয়ে আমরা চরম উদ্বিগ্ন রয়েছি।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. আমিমুল এহছান বলেন জেলার আত্রাই উপজেলাতে সবচেয়ে বেশি শুটকি উৎপাদন হয়। আর অন্যান্য উপজেলাতে কিছুটা শুটকি তৈরি হয়। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি বছর জেলার নদী-নালা, খাল-বিল ও উন্মুক্ত জলাশয়ে বন্যা না হওয়ার কারণে মাছের উৎপাদন অনেক কম। তবুও শুটকি তৈরির কাজ চলমান রয়েছে তবে বিগত বছরের তুলনায় অনেক কম। শুটকি তৈরির সঙ্গে জড়িতদের সরকারের পক্ষ থেকে নানা রকম সহযোগিতা পূর্বেও দেওয়া হয়েছে এবারও তাদের তালিকা করে বিভিন্ন রকমের সহযোগিতা দেওয়া হবে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকার বাইরে বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই