তারিখ : ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

চাই প্রাণী সম্পদ ব্যবস্থাপনা আইন

চাই প্রাণী সম্পদ ব্যবস্থাপনা আইন
[ভালুকা ডট কম : ০১ ডিসেম্বর ]
প্রাণী জগত নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে এবং হচ্ছে। এর বিপুলত্বের তুলনায় সম্ভবতঃ চলমান গবেষণা-কর্ম ততটা অগ্রসর হয়নি আমাদের দেশে। যা কিছু হয়েছে তা যৎ সামান্যই বটে। এক্ষেত্রে ইপ্সিত সাফল্য মানবজাতিকেই বেশি উপকৃত করবে বলে আমার বিশ্বাস। প্রতিটি ইট খন্ড যেমন একটি ইমারতকে দন্ডায়মান রাখার ক্ষেত্রে অপরিহার্য ; তেমনি সৃষ্টির প্রতিটি প্রাণীর সাবলিল জীবনযাত্রার বিষয়ই মানবজাতি তথা সৃষ্টি জগতের জন্য গুরুত্বপুর্ণ। যে ভূখন্ডের মানুষ এ বিষয়গুলো যতবেশি গুরুত্ব দিয়ে সে অনুসারে বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন। সে সকল ভূখন্ডের মানুষ তত বেশি উপকৃত ও সমৃদ্ধ হয়েছেন। যা সারা বিশ্বে আজ দৃশ্যমান। এ কারণে প্রকৃতি প্রেমিক পরিবেশবাদী গবেষক বিজ্ঞানীদের মধ্যে অনেকেই তাদের জীবন উৎসর্গ করে কাজ করে থাকেন এবং তা প্রাণী জগতের কল্যাণের মধ্য দিয়ে পুরো সৃষ্টি জগতের কল্যাণ সাধনের নিমিত্ত। প্রাণী জগতের একটি অংশের জন্য হলেও বাংলাদেশ সরকার  আধুনিক ও যুগান্তকারী একটি পদক্ষেপ গ্রহন করেছে।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ আইন ২০১২ পাশ হয়েছে। ধীরগতিতে হলেও কাজ চলছে এ আইন বাস্তবায়নের। তবে পরিতাপের বিষয় হলো এই যে- দেশের সাধারণ নাগরিক তো দুরের কথা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অনেক দায়িত্বশীল কর্মকর্তাই এখনো এ আইন পরিস্কারভাবে জানেন না। কেননা কতিপয় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পাখি শিকারীদের নিকট থেকে অর্ডার দিয়ে পাখি কিনতে আমি দেখেছি। অপরদিকে দেখেছি গলায় দড়ি দিয়ে স্বাধীনতা হরণ করে গৃহে পালনের নামে ভাষাহীন প্রাণীর উপর নির্মম অত্যচারের বিভৎস দৃশ্য। বেশি লাভ করার আশায় গবাদি পশুকে অপেক্ষাকৃত কম খাবার, কম পরিচর্যা দিয়ে নির্বোধ পাষন্ডের মত নির্যাতনের কাজটি অধিকাংশ কৃষক-গৃহস্থ বা পশু পালকেরা করে থাকেন। তাদের ধারণা পশু তো পশুই তাদের আবার ভালমত পরিচর্যার প্রয়োজন কী। তাই ঐসকল পশুর প্রতি যে ধরণের আচরণ করা হয় সে আচরণ পাশবিকতার ব্যাখ্যাকেও হার মানায়। যে সকল প্রাণী স্বাধীনভাবে প্রকৃতিতে বিচরণ করে থাকে তাদের রক্ষার জন্য যদি আইন প্রনয়ন করা সংগত হয়। তবে যে সকল প্রাণীকে গলায় দড়ি দিয়ে তাদের স্বাধীনতা হরণ করে আমাদের দয়া-দাক্ষিণ্যের উপর নির্ভরশীল করে রেখেছি। খাদ্য পানীয় না দিলে প্রাণপাত হলেও যার নিজের খাদ্য গ্রহনের সুযোগ নেই। এমন গৃহপালিত পশু বা প্রাণীর প্রতি নির্দয় হলে, তাদের স্বাধীনতা হরণকারী নির্দয় অবিবেচক ঐ লোভী লোকটির বিরুদ্ধে কী শাস্তির বিধান থাকা জরুরী নয় ?

এক্ষেত্রে ধর্মমতের কথা যদি বলি। তাহলে বলতে হয়- বিভিন্ন ধর্মে জীবে প্রেমের কথা বলা হয়েছে। বিশেষ করে গৃহপালিত প্রাণীদের প্রয়োজনীয় খাবার প্রদান, পরিচর্যা, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসম্মত বাসস্থানের ব্যবস্থপনাসহ অতি যত্নসহকারে লালন পালনের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। এরপরও ধর্ম পালন করেন সবাই কিন্তু ধর্মের এই গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা যথাযথভাবে অনেকেই মানেন না। তথাকথিত সংক্রামক রোগ থেকে মুক্ত রাখতে মুর্খ গোয়ালাদের দ্বারা লৌহ শলাকা আগুণে পুড়িয়ে গন-গনে লাল করে গরু-মহিষের পাছায় নির্মমভাবে দাগা (ছ্যাঁকা) দেয়ার প্রচলন এখনো অনেক এলাকায় বিদ্যমান। এতে লোম, চামড়া ও মাংস ভেদ করে পুড়তে পুড়তে জীবন্ত প্রাণী গুলোর শরীরে সেঁধে যায় জলন্ত অঙ্গারময় লৌহ শলাকা। অবর্ণনীয় যন্ত্রনায় গগণ-বিদারি আর্তচিৎকার করেও ঐ বন্দী অসহায় প্রাণীগুলো তাদের মনিবদের হৃদয়ে এতটুকু মমতারও সৃষ্টি করতে পারেনা। অনেকে আবার গরু-মহিষের নাক ফুটো করে লাগাম লাগায় ; যথেচ্ছ অত্যাচার করলেও যেন বেশি লাফালাফি করতে সে না পারে নাকে টানের কাতরতায়। অথচ বিভিন্ন ধর্ম মতে পুড়িয়ে দাগা দেয়া বা কষ্ট দিয়ে চিহ্নিত করা, অঙ্গহানি করা কড়াভাবে নিষিদ্ধ। কেউ কেঊ কুকুরকে তথাকথিত হিংস্র বানাতে কৃতজ্ঞতার সংকেত জানানোর জন্য তার সবচেয়ে প্রিয় অঙ্গ লেজটিও কেটে দেয়। কখনো কখনো এদের পুরুষত্ব হ্রাস করে নপুংশক বানানো হয়। আমরা দেখেছি ভোগ্যপন্য সামগ্রী পরিবহন করা হয় পরিপাটি করে অতি যত্ন সহকারে। অথচ গবাদি প্রাণী পরিবহনের চিত্র অববর্ণনীয় কষ্ট দায়ক। যেখানে মাত্র ১০টি গরুর স্থান সংকুলান হওয়া কঠিন সেখানে ২০-২৫টি করে বোঝাই দিয়ে শত শত মাইল নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গরুগুলো দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে দেহের ভর যেন আর পায়ে সয়না। না পারে শুতে না পারে বসতে। দড়ির কর্ষণ আর ট্রাকের ডালার ঘসায় গায়ের চামড়া ছিলে রক্ত ঝরে। চরম যন্ত্রনায় চোখ বেয়ে ঝরে অশ্রু আর মুখ দিয়ে ঝরে পড়তে থাকে লালা। গাদাগাদি ঠাসাঠাসি করে শত শত মাইল দুরত্বে এভাবে এই প্রাণীগুলোকে চালান করা হয়। সবার দৃষ্টির সামনে। কেউ যেন তা দেখেও দেখেনা। দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে কোন কোন গরু অকুলান হয়ে লুটিয়ে পড়ে। কারো গলায় বাঁধা নির্মম দড়িতে প্যাঁচ লেগে যায়। ফাঁস লেগে এভাবে অনেক গরুমারাও পড়ে। ২-৫ দিন অবধি খাদ্য পানীয় বিহীন ক্ষুধার্ত-তৃষ্ণার্ত গরুগুলো ট্রাক থেকে নামানো হয় রাজধানীসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে কসাইখানার ২-৩ কিলোমিটার দুরে। তারপর পাশাপাশি দাঁড় করিয়ে তাদের গলার দড়ি গুলো চেইনের মত করে বাঁধা হয়। একেক সারিতে ১০-১২টি করে। শুরু হয় ঐ হতভাগা প্রাণীদের গায়ে গায়ে ঘেঁসে ক্লান্ত অবসন্ন দেহে হেঁটে হেঁটে দু’পা চার’পা করে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলা। দীর্ঘ সময় অনাহারে দঁড়িয়ে থেকে চরম ক্ষুধার্ত আর ক্লান্ত হয়ে পড়ে ওরা। গায়ে, পায়ে জোর নেই। নেই শারিরিক ভারসাম্য। টাল সামাল দিতে না পেরে ঐ চেইন করে (হালিচা) বাঁধা বহরের মাঝে কোন কোন গরু পড়েও যায়। পেটানোর চোটে অসহ্য যন্ত্রনায় অন্য গরুগুলো প্রাণপণে হাটতে থাকে সামনের দিকে। আর অর্ধমৃতাবস্থায় পড়ে যাওয়া গরুটার নিঞ্চল দেহ পাকা রাস্তার কঠিন বুকে ছেঁড়ছে হিঁছড়ে চলতে থাকে বহরের টানে। শহরতলির ভাগারে ফেলতে কুকুরের লাশ দড়ি বেঁধে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে ডোমদের টেনে নিয়ে যাওয়ার মত।

ওদের মুখে ভাষা থাকলে পিছন থেকে তাড়িয়ে নেয়া মানুষ নামের দানবদের ওরা কি বলে সম্মোধন করতো তা জানিনা। তবে স্বভাব ও সহ্যের তুলনায় ওরা আমাদের চেয়ে অনেকটাই উপরে। আমার মনে হয়, ভাষা থাকলে ওরা হয়তো বলতো “ তোমাদের প্রদত্ত  এই সীমাহীন নির্যাতন, দুর্বিসহ যন্ত্রনার দায়ে যেন প্রভূ কষ্ট না দেন তোমাদের হে মানুষ। কেননা আমরা যে তোমাদেরই গৃহপালিত। যে দেহের উপর তোমাদের এই অত্যাচার, যে দেহের লোভে তোমরা দানব হয়ে উঠেছো, এতো তোমাদেরই দান। তাই তোমাদের প্রতি অঢেল কৃতজ্ঞতা তোমাদের প্রতি- এই নিটোল কষ্টের জীবন থেকে মুক্তি দিতে ধারালো ছোরার নিচে এভাবে আমাদের নিয়ে যাচ্ছ।” এভাবে টেনে হিঁছড়ে জবাইখানায় পৌঁছার আগেই এসব হতভাগ্য গরুর অনেকেই মরে যায়। তারপরও রেহাই পায় না। ঐ মৃতদেহটাও শত সহস্র টুকরা হয়ে হালাল খাদ্যে পরিণত হয় কসাইখানায়। তারপর অন্যান্যদের উপর চলতে থাকে জবাইয়ের নামে হত্যার তান্ডব। জীবনাবসানের আগেও পায়না ওরা এতটুকু তৃষ্ণার পানি আর খড়কুটো খাবার। ভোগ্যপন্য পরিবহনের কিঞ্চিৎ যত্নও পায়না জীবন্ত এই প্রাণীগুলো নির্মম পরিবহনকালে। কে দেখবে এসব? দায়িত্ব কার এসব দেখার? এসব দেখে মনে হয়- মানুষ নামের শ্রেষ্ঠজীবদের খাম-খেয়ালী, দানবীয় নিষ্ঠুরতা সহ্য করতেই এদেরকে যেন সৃষ্টি করেছেন পরম দয়ালু স্রষ্টা। এসব অনেক নির্মিমতার অতি সামান্য উদ্ধৃতি মাত্র।

যে প্রাণীটি কাঁধে জোয়াল নিয়ে প্রাণান্ত শ্রম দিয়ে লাঙ্গল টেনে যুগ যুগ ধরে ফসল ফলিয়ে মানুষের আহার যুগিয়েছে, গাড়ি করে মালামাল টেনে ক্ষেত-খামার ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি রক্ষা করেছে। দুধদান করে পবিত্র খাদ্যে অসহায় শৈশবকালে আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে। তারা বংশ বিস্তার করেও সেই অমূল্য সেবাদান অব্যাহত রেখেছে। সবশেষে যখন কোন কাজই সে করতে পারে না, তখন তার দেহটাকেও দিয়ে দেয় আমাদের রসনা তৃপ্ত করে উদর পুর্তি করতে। আদিকাল হতে এমন অতুলীয় উপকারী প্রাণীর দান-অবদানের কৃতজ্ঞতা কী নিষ্ঠুরভাবে আমরা পরিশোধ করতে মত্ত হয়ে উঠেছি। ভাবতেও ঘৃণা লাগে। তাই বিদ্রোহী কবি নজরুলের ভাষায় বলতে হয়-“পশুর জগতেরে সভ্য করিয়া / নিজেরা আজিকে বুনো মহিষ/ বুকেতে নাহিকো -জোশ, তেজ, রিশ/ মুখেতে কেবল বুলন্দ রিশ..........।

এতো গেল অবহেলা, নির্যাতন ও বর্বরতার কিছু দিক। অপরদিকে যাদের ইচ্ছা আছে পরম মমতায় উত্তম পরিচর্যার মাধ্যমে গবাদি প্রাণী লালন-পালন করার, তারা পাচ্ছেন না প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও পরিচর্যার আধুনিক উপকরণ। কারণ দেশের উপজেলা সদরে একটি করে জরাজীর্ণ পশু হাসপাতাল ছাড়া মফস্বল এলাকায় আর কোন পশু চিকিৎসালয় নেই। নেই উপজেলা সদরের একমাত্র পশু হাসপাতালেও পর্যাপ্ত উপকরণ, আধুনিক ও উপযুক্ত চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থাপনা।

মাংসের চাহিদা সূচকে আমাদের বড় ধরণের ঘাটতি রয়েছে। যার সিংহভাগ পুরণ হয় বিদেশ থেকে নায্য অনায্য বিভিন্ন পন্থায় আমদানি করা গবাদি প্রাণী দিয়ে। ভাতের জন্য উন্নত জাতের ধান চাষাবাদের ব্যবস্থা আছে। মাছ চার্ষে জন্যও চলছে নানা প্রকার অত্যাধুনিক পদ্ধতির চর্চা। কিন্তু জনগণের পুষ্টির যোগান দিতে গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য হলো মাংস। এর উৎপাদনের জন্য আধুনিক পরিচর্যা, চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা এখনো জনগণের দোর গোড়ায় পৌঁছেনি। তাই কমিউনিটি ক্লিনিকের মত প্রতিটি ইউনিয়নের ওয়ার্ড পযায়ে লাইভ স্টক সেন্টার স্থাপন করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। এই সঙ্গে গৃহপালিত প্রাণী সমূহের জন্যও  প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন তথা ‘প্রাণী সম্পদ ব্যবস্থাপনা আইন’ প্রণয়ন করা দরকার। এতে গবাদি প্রাণী প্রতিপালনে জনগণ যত্নবান ও উৎসাহী হবে এবং এক পর্যায়ে দুধ ও মাংসের ঘাটতি পুরণ করা সম্ভব হবে।

আমি মনেকরি বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা আইন প্রণেতাদের দুরদর্শীতার স্বাক্ষর রাখতে প্রাণী সম্পদ ব্যবস্থাপনা আইনও প্রণয়ন করা দরকার। এতে গৃহপালিত পরাধীন প্রাণীও এই ব্যবস্থাপনার অন্তর্ভূক্ত হবে। ফলে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও ঘোড়াসহ সকল গ্রহপালিত প্রাণীগুলো পরিচর্যার নামে চরম অবহেলা ও শারিরিক নির্যাতন থেকে হয়তো কিছুটা মুক্তি পাবে। কেননা কতিপয় অতিলোভী কৃষক বা ব্যক্তি এসব বাঁধা গবাদি প্রাণী প্রতিপালনের নামে কম খরচে বেশি লাভ করার আশায় প্রয়োজন মত খাবারও তাদের দেয়না। ছলে ছুতায় তাদের উপর চালায় অকথ্য নির্যাতন। অযত্ন অবহেলা, নির্যাতন, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও খাদ্যাভাবে অনেক গৃহপালিত প্রাণী হাড্ডিসার হয়ে ধুকে ধুকে মারা যাচ্ছে। গরু-ছাগলের হাটগুলোতে গেলেই এর বাস্তব চিত্র দেখা যায়। অনেক গাভী পালকের বাছুর বাঁচেনা। ওটা নাকি তার কপালের দোষ ! তারা এমনভাবে গাভী দহন করে যে যার জন্য বিধাতা এই দুধ দান করেছেন সেই বাছুরটির ক্ষুধা মেটানোর জন্য ন্যুনতম দুধ টুকুও অবশিষ্ট রাখেনা। আবার বছুরের মায়ায় তার জন্য যদি কিছুটা দুধ নিজ সঞ্চয়ে রাখে তবে দুধ কম দিয়েছে বলে মা গাভীর উপর চলতে থাকে অকথ্য নির্যাতন। এমন স্বার্থপর নির্মমতার ঘটনায় বেঘোরে প্রাণ যায় অনেক মা গাভীর। আমার এক পরিবেশবাদী বন্ধু বলেছিলেন- আমরা কতবড় স্বার্থপর, গো-বৎসের জন্য স্রষ্টার দান দুধ আমরা গায়ের জোরে এক প্রকার লুট করে খাচ্ছি গাভীর মুখে নাম মাত্র খাবার তুলে দেয়ার বিনিময়ে। অথচ যার জন্য ঐ দুধ বরাদ্দ তার ক্ষুধা-তৃষ্ণা নিয়ে কোনো মাথা ব্যথাই যেন কারো নেই। এমনকি কীভাবে বাছুরটি সুস্থ্য সবল থাকবে আমরা অনেকেই তা সত্যি করে ভাবিনা।’

খাদ্যাভাবে কঙ্কালসার শক্তিহীন অনেক হালের গরু লাঙ্গল টানতে না পেরে মাটিতে লুটিয়ে পড়ছে। তার উপরও উপর্যুপরি লাঠির আঘাতে অকথ্য নির্যাতনের নির্মম দৃশ্য দেখে আমি চরম মর্মপীড়া অনুভব করেছি। কোন কোন ক্ষেত্রে প্রতিবাদ করতে গিয়ে সেই মমতাহীন নির্বোধ লোকের এমন উক্তিও শুনেছি-‘আমার গরু আমি পেটাচ্ছি, আপনি নাক গলানোর কে হে? গৃহ-পালনের নামে বাঁধা পরাধীন এসব ভাষাহীন প্রাণীদের আর্তনাদ কে শুনবে? কার কাছে তারা তাদের ভাষাহীন আকুতি আর মূল্যহীন চোখের জলে ফরিয়াদ করবে? তাই ভাষাহীন এসব উপকারী গৃহপালিত প্রাণীদের পক্ষ হয়ে আমি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সমীপে প্রাণী সম্পদ ব্যবস্থাপনা আইন প্রণয়ন ও তা দ্রুত বাস্তবায়নসহ তৃণমূল পর্যায়ে লাইভস্টক সেন্টার প্রতিষ্ঠার জন্য আকুল আবেদন জানাই।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অন্যান্য বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই