তারিখ : ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

রায়গঞ্জে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে কবরস্থানে বসবাস

রায়গঞ্জে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে কবরস্থানে বসবাস
[ভালুকা ডট কম : ২৮ মার্চ]
খাস জায়গার বসতি ভেঙ্গে দেয়ায় মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে রায়গঞ্জে এক কবরস্থানে বসবাস করছে ৫টি অসহায় পরিবার। ভাঙা টিন আর পলিথিন দিয়ে কোনোরকম ঝুপড়ি ঘর বানিয়ে কবস্থানের মধ্যে তারা দেড় বছর ধরে বসবাস করছেন। সেখানে নেই পানীয় জলের ব্যবস্থা, পয়ঃনিষ্কাশন ও বিদ্যুৎ। আধুনিক সভ্যতার এই যুগে এমন মানবেতর জীবনযাত্রা একেবারেই বিরল। ঘটনাটি সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ পৌর এলাকার ৬নং ওয়ার্ডের লক্ষ্মীখোলার ফুলকুচি কবরস্থানের।

স্থানীয় লোকজন জানান, ঐ কবরস্থানের পাশে সরকারি ২.১৭ একর খাস জমিতে দীর্ঘ দিন ধরে মসলিম, হজরত, হাসিনুর, নুরুন্নবী, সোবাহানসহ মোট ৪৪টি পরিবার বসবাস করে আসছিল। স্থানীয় এক প্রভাবশালী কৃষক ভূয়া ভুমিহীন সেজে কবুলিয়ত নিয়ে খাস জমির দখল বুঝে নিতে তাদের বসতি প্রায় দেড় বছর আগে ভেঙে দেয়। অনেকের জায়গা জমি থাকায় তারা চলে গেছে। কিন্তু এই পাঁচ পরিবারের কোনো জমি না থাকায় তারা নিকটবর্তী ঐ কবরস্থানের ভেতরে বসবাস করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আলামিন বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে ফুলকুচি কবরস্থানের কোনো সংস্কার নেই। ভেতরে গাছ আর জঙ্গলে ভরে গেছে। রাত হলেই শিয়ালের ডাকাডাকি, বিষাক্ত সাপের ভয় আর ভাঙা ঘরে ছেলেমেয়ে নিয়ে মানবেতর ও বিপদ সঙ্কুল জীবনযাপন। পাঁচ পরিবারের মধ্যে হাসিনুর ব্রেইন স্ট্রোক করে প্রতিবন্ধী হওয়ায় পরিবারটি একবোরেই দিশেহারা  হয়ে পড়েছে।

হাসিনুরের ৫ সদস্যের পরিবার। তার স্ত্রী মিনা বেগম (৪৫) বলেন, আমার স্বামী প্রতিবন্ধী। দীর্ঘ দিন খাস জায়গায় ছিলাম। সেখান থেকে ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়ায় জায়গা জমি না থাকায় কবরস্থানের ভেতরে থাকছি। সংসারে দুই সন্তান ও  প্রতিবন্ধী স্বামী। শিয়াল সাপের ভয় তাই স্বামী সন্তানের পাশেই জেগে বসে পাহারা দেই সারারাত।

কবরস্থানে বসবারত হজরতের পরিবারের সদস্য ৯জন। নুরুন্নবীর সদস্য ৮জন, সোবাহানের ৬ জন, মসলিমের পরিবারে সদস্য ৭জন। নারী শিশু বৃদ্ধসহ পাঁচ পরিবারের মোট ৩৫ জন মানুষ সেখানে বসবাস করে। পরিবারের প্রধানরা বলেন, পাশবর্তী ক্ষুদ্র বাশুরিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ ভুমিহীন সেজে ভূমি অফিসকে ভুল বুঝিয়ে ঐ খাস জমি মোট ২.১৭ একর সম্পত্তি কবুলিয়ত নিয়ে তাদের ৪৪টি পরিবারকে উচ্ছেদ করেছে। আমরা দিন মজুরের কাজ করে সংসার চালাই। আগে খাসের জায়গায় থাকতাম, ভালোই ছিলাম। ঘর-বাড়ি ভেঙে দেওয়ার পর কোনো স্থানে জায়গা না পেয়ে কবরস্থানে থাকতে হচ্ছে। রাত হলেই আসে আতংক। ছেলেমেয়েরা কবরস্থানে থাকতে ভয় পায়। সরকারি অনেক খাস জমি থাকলেও আমরা পাইনি।

নিজেরা করি এনজিও সংস্থার রায়গঞ্জ শাখার অঞ্চল সমন্বয়কারী আছাবুর রহমান আসাদ বলেন-ঐস্থানে বসবাসকারী ভূমিহীনদের বিনা নোটিশে উচ্ছেদ করা হয়েছে। যা আইনের পরিপন্থী। স্থানীয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি দাবি জানান।

রায়গঞ্জ পৌর মেয়র আব্দুল্লাাহ আল পাঠান  বলেন, ঐ জায়গাও খাস জায়গা ওটা কবরস্থানের জায়গা নয়। এনিয়ে মামলা চলছে। আমি ইউএনও মহোদয়কে নিয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। ভুক্তভোগি পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করতে বলা হয়েছে।  সরকারিভাবে ঘর বরাদ্দ হলে তারা তা পাবে। রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৃৃপ্তি কণা মন্ডল বলেন, বিষয়টি আমি সরেজমিন পরিদর্শন করেছি।  অসহায় পরিবারগুলোকে দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।#




সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

লাইফস্টাইল বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই