তারিখ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

রাণীনগরে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা উধাও

রাণীনগরে শিক্ষার্থীদের নগদ এ্যাকাউন্টের উপবৃত্তির টাকা উধাও,চরম বিড়ম্বনায় অভিভাবকরা
[ভালুকা ডট কম : ৩১ জুলাই]
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নগদ এ্যাকাউন্টে আসা উপবৃত্তির টাকা উধাও হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা টাকা তুলতে গিয়ে দেখেন এ্যাকাউন্টে টাকা নেই। ফলে তারা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। নগদ কোম্পানিতে কর্মকর্তাদের যোগসাজশে একটি দুর্বৃত্তের দল এই টাকা তুলে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে এই বিষয়ে দায় নিচ্ছেন না প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও নগদ কর্তৃপক্ষ। এতে করে চরম উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার একশত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ১২ থেকে ১৩হাজার শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার হিসেবে উপবৃত্তি পেয়ে আসছে। গত বছরের উপবৃত্তির টাকা চলতি মাসে শিক্ষার্থীরা পেয়েছে। এবার ছয়মাস পর উপবৃত্তি প্রাপ্তির প্রতিজন শিক্ষার্থী কিট এলাউন্স হিসেবে এক হাজার টাকা এবং প্রতি মাসের বৃত্তি হিসেবে একশত পঞ্চাশ টাকা করে একহাজার নয়শত টাকা স্ব স্ব অভিভাবকদের মোবাইলে নগদ এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রেরণ করা হচ্ছে। এবার উপজেলার প্রতিটি স্কুলের একাধিক শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের মোবাইল থেকে উপবৃত্তির টাকা উধাও হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। দেশজুড়ে নগদ-এর মাধ্যমে এই উপবৃত্তির টাকা প্রদানের শুরু থেকেই একটি সংঘবদ্ধ চক্র অবৈধ ভাবে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

উপজেলার রাতোয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক রহিদুল ইসলাম রাইপ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা পাচ্ছে না অনেকেই। মিনি স্টেটমেন্ট এ গিয়ে দেখা যায় ক্যাশ আউট হয়ে গেছে। প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর কিট এলাউন্সের ১০০০/- ছয় মাস উপবৃত্তির ৯০০/- সর্বমোট ১৯০০/- টাকা এ্যাকাউন্ট থেকে অটো ভাবে উধাও। বহুবার চেষ্টার পর টাকা উঠানোর হেল্প লাইনের পরম কৃপায় পিন রিসেট করে ব্যালেন্স চেক করতে গিয়ে দেখি ব্যালেন্স শুন্য, কোন টাকা নেই। হারিয়ে যাওয়া এই টাকা প্রাপ্তির জন্য নগদ অপারেটরের এজেন্ট আর স্কুলে ঘুরতে ঘুরতে চরম হয়রানীর শিকার হচ্ছি আমার মতো শত শত অভিভাবকরা। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিগণ বলছেন ক্যাশ আউট হয়ে গেছে আমরা কি করবো। এখন দায়িত্বপ্রাপ্তরা এই কথা বললে আমরা কোথায় যাবো?

উপজেলার মালশন গিরিগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক আব্দুল মজিদ, নাজু, ভাটকৈ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক মৌসুমী আক্তারসহ অনেকেই বলেন আমরা গ্রামের মানুষ। আমরা এতো জটিলতা বুঝি না। ম্যাসেজ পাওয়ার পর আমি ছেলের উপবৃত্তির টাকার ম্যাসেজ মোবাইলে না পেয়ে স্কুলে যোগাযোগ করি। স্কুল থেকে বলা হয় ম্যাসেজ না পেলেও সমস্যা নেই নগদ অপারেটরের এজেন্টের নিকট যোগাযোগ করুন। আমরা সেখানে যোগাযোগ করি। প্রথমে তারা বলে না টাকার কোন ম্যাসেজ তো নেই। পরে কয়েকদিন স্কুল আর এজেন্টের কাছে ঘুরে ঘুরে হয়রান। পরিশেষে একজন এজেন্ট বলে ভাই হেল্পলাইনে কল করলে সমাধান আসতে পারে। বহুবার চেষ্টার পর হেল্পলাইন থেকে নগদের পিন রিসেট করে দেয়, তারপর জানতে পারি আমার ফোন থেকে ক্যাশ আউট হয়ে গেছে। আবাক কান্ড আমি জানালামই না আর ক্যাশ আউট হয়ে গেলো? কার কাছে এর প্রতিকার পাবো? আর আমাদের টাকার কি হবে?

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, উপবৃত্তির এই টাকা প্রাপ্তির বিষয়টি নগদ-এর সঙ্গে চুক্তি করেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। আমরা এই বিষয়ে কিছুই জানি না। এমন কি নগদ-এর কোন ব্যক্তিরা এই উপজেলায় জড়িত আছেন তাও আমার জানার বাহিরে। তবে যারা বিভিন্ন দোকানে গিয়ে উপবৃত্তির টাকা প্রাপ্তির জন্য নগদের এ্যাকাউন্ট খুলেছে সেই সব অসৎ দোকানদার কিংবা এজেন্টরা নতুন এ্যাকাউন্ট খোলার পর সেই গোপন পিন নম্বরটি চুরি করে এবং পরে টাকা আসার সঙ্গে সঙ্গেই তারা কারসাজি করে সেই টাকা গ্রাহক জানার আগেই ক্যাশ আউট করে বের করে নিচ্ছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন। সারা দেশে একদল সিন্ডিকেট পরিকল্পিত ভাবে হয়তো এমন অবৈধ কাজের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তবে এই চক্রের বিরুদ্ধে দ্রুত শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে কিংবা উপবৃত্তির টাকা প্রাপ্তির পদ্ধতিটি পরিবর্তন না করলে প্রতিবারই হাজার হাজার শিক্ষার্থী উপবৃত্তির টাকা থেকে বঞ্চিত হবে।

তিনি আরো বলেন, এই বিষয়ে প্রতিটি স্কুলের অভিভাবকদের আরো সচেতন করতে হবে। এছাড়া আমি বিষয়টি শুনেছি কিন্তু এই বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ আমার কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে উপর মহলকে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানাবো।

উধাও হওয়া টাকাগুলো উদ্ধার করে শিক্ষার্থীদের হাতে পুনরায় সহজ পদ্ধতিতে সুষ্ঠ ভাবে ফেরত দেবার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন উপজেলার শত শত ভুক্তভোগী অভিভাবকরা।#




সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

শিক্ষাঙ্গন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই